নোমান ভাই একজন বর্ষীয়ান ও পরিপূর্ণ রাজনীতিবিদ ছিলেন: আমীর খসরু

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নোমান ভাইয়ের নেতৃত্বে আমরা চট্টগ্রাম মহানগরের রাজনীতি করেছি। চট্টগ্রামের রাজনীতিতে, আন্দোলন, সংগ্রামে রাজপথে আমরা একসাথে কাজ করেছি। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমান পরিপূর্ণ রাজনীতিবিদ ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) নাসিমন ভবনের সামনে আবদুল্লাহ আল নোমানের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন উপলক্ষে আনা হলে সমবেত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন।

এই নাসিমন ভবনে পুলিশের আক্রমণ, টিয়ার গ্যাসের শিকার হয়ে আমরা আশ্রয় নিয়েছি। নোমান ভাই ছাত্র রাজনীতি করেছেন, শ্রমিক রাজনীতি করেছেন, বিএনপির রাজনীতি করেছেন। উনি একজন পরিপূর্ণ রাজনীতিবিদ ছিলেন। উনি সার্বক্ষণিকভাবে রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সংগঠিত করার জন্য চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর, দক্ষিণসহ এই অঞ্চল এবং যেখানেই দলের ডাক দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে সেখানে ছুটে গেছেন। উনার রক্তের সঙ্গে রাজনীতি মিশে গেছে। নোমান ভাইয়ের সঙ্গে চট্টগ্রামের রাজনীতি ও কেন্দ্রীয় ভাবে অনেক স্মৃতি আছে। সুখ, দুঃখ, ভালো খারাপ সময় আমরা অতিক্রম করেছি। সরকারের ভেতরে, সরকারের বাইরে, রাস্তায় শেখ হাসিনা বিরোধী আন্দোলন, ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলন, তার আগে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে উনার উজ্জ্বল ভূমিকা রেখে গেছেন। চট্টগ্রামের রাজনীতিতে আমরা উনার অবদানের জন্য ঋণী। নোমান ভাই হয়তো সুস্থ থাকলে, আরও কিছু দিন বাঁচলে আমাদের আগামী রাজনীতিতে বিশেষ করে আজকের যে প্রেক্ষাপট আরেকটি ক্রান্তিলগ্নে আমরা এসে পড়েছি। এ সময় তার অবদান আমাদের প্রয়োজন ছিল।
আমাদের নেতাকর্মীরা যে আপসহীন রাজনীতি, দীর্ঘসময় আত্মত্যাগের মাধ্যমে, জীবন দিয়ে, গুম হয়ে, খুন হয়ে, জেলে গিয়ে, চাকরি হারিয়ে, ব্যবসা হারিয়ে যে ত্যাগের রাজনীতি বিশেষ করে গত ষোল বছর রোদে পুড়ে আমরা খাঁটি সোনায় পরিণত হয়েছি। এটা বিএনপির সম্পদ। এ সম্পদ কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। আমরা যে ত্যাগের মাধ্যমে পরিণত হয়েছি এটা পরিপূর্ণ ও পরিণত রাজনীতি। সেখানে নোমান ভাইয়ের অবদান ছিল।

সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমানের মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রয়ারি) ভোর ৬টায় রাজধানীর ধানমন্ডির বাসায় ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহে…রাজিউন)। ঢাকায় তিন দফা জানাজা শেষে বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে পৌনে ৫ টার দিকে হেলিকপ্টারে মরদেহ চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে আনা হয়। এরপর কাজীর দেউড়ি ভিআইপি টাওয়ারের বাসভবন প্রাঙ্গণে নেতা-কর্মী ও স্বজনদের দেখার জন্য মরদেহ রাখা হয়।

শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় নসিমন ভবনের মাঠে আনা হয় মরদেহ। চোখে পানি আর হাতে ফুল নিয়ে হাজারো নেতাকর্মী ভিড় করেন সেখানে। কালো ব্যানারে ছেয়ে যায় পুরো নাসিমন ভবন এলাকা। বাদে জুমা জানাজা অনুষ্ঠিত হবে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ মাঠে। সর্বশেষ বাদে আসর রাউজান গহিরা স্কুল মাঠে মরহুমের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে এবং পরে গহিরায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।