শফিউল আলম, রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ প্রাকৃতিক মৎস প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার ভরা মৌসুম চলছে । প্রবল বর্ষন, বজ্রপাত হলে নদীতে পাহাড়ী ঢলের পানির শ্রোত নামলে যে কোন সময়ে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে বলে আশা করছেন ডিম সংগ্রহকারীরা । হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়লে নদী থেকে ডিম সংগ্রহ করার জন্য রাউজান – হাটহাজারীর অর্ধসহস্রাধিক ডিম সংগ্রহকারী নৌকা ও জাল নিয়ে ডিম সংগ্রহ করার প্রতিক্ষার প্রহর গুনছেন । প্রাকৃতিক মৎস প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে চৈত্র মাস থেকে শ্রাবন মাস পর্যন্ত সময়ে প্রবল বর্ষন ও বজ্রপাত হলে মা মাছ ডিম ছাড়ে । হালদা নদীতে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউস মাছ ডিম ছাড়ার পর ডিম সংগ্রহকারীরা নৌকা ও জাল নিয়ে প্রবল বর্ষন ও বজ্রপাতকে উপেক্ষা নদীতে জাল ও নৌকা নিয়ে উৎসব মুখর পরিবেশে ডিম সংগ্রহ করে। হালদা নদী থেকে মা মাছের ডিম সংগ্রহ করার পর ডিম সংগ্রহকারীরা নদীর তীরে খনন করা মাটির কুয়া, হ্যচারীতে ডিম রেখে ডিম থেকে রেনু ফুটানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে । ডিম থেকে রেনু ফোটানোর পর দেশের বিভিন্ন এলাকার মৎস খামারী, মৎস চাষীরা ডিম সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে রেনু ক্রয় করে নিয়ে যায় । মৎস খামারী ও মৎস চাষীরা হালদার ,মা মাছের ডিম থেকে ফুটানো রেনু পুকুর জলাশয় ও মৎস প্রকল্পে অবমুক্ত করে মাছ চাষ করে প্রতি বৎসর হাজার হাজার কোটি টাকার মাছ উৎপাদন করে মৎস হ্যচারী, মৎস খামারী, মৎস চাষীরা । হালদা নদীতে মা মাছ ছাড়ার ভরা মৌসুমে গত ২৩ মে সোমবার সন্দ্ব্যায় ও গত ২৪ মে মঙ্গরবার সন্দ্ব্যায় বৃষ্টি ও বজ্রপাত হলে ও ও হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়েনি । কাগতিয়া আজিমের ঘাট জলদাশ পাড়ার বাসিন্দ্বা হরিয়াল জালদাশ বলেন, ২২বৎসর বয়স থেকে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার মৌসুমে হালদা নদী থেকে নৌকা ও জাল দিয়ে ডিম সংগ্রহ করেছি । এক সময়ে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার মৌসুমে প্রচুর পরিমাণ ডিম সংগ্রহ করতাম। ঐ সময়ে ডিম সংগ্রহকারীর পরিমাণ ও ছিল বেশী । হালদা নদীতে মা মাছের ডিম ছাড়ার পরিমান কমে যাওয়ার পর থেকে ডিম সংগ্রহ করা ছেড়ে দিয়েছি । বয়স বেশী হওয়ার কারনে পরিশ্রম করতে সক্ষম না হওয়ায় ডিম সংগ্রহ করা ছেড়ে দিয়েছি । হরিয়াল জলদাশ আরো বলেন, হালদা নদীর প্রবেশ মুখে বড় ড্রেজার, নৌযান চলাচল করায় হালদা নদীতে পুর্বের মাতো বড় বড় মাছ প্রবেশ করতে বাধাগ্রস্থ হয়ে হালদা নদীতে মা মাছের বিচরন কমে গেছে । এই কারনে হালদা নদীতে মা মাছের ডিম ছাড়ার পরিমাণ কমে গেছে পুর্বের তুলনায় । বড় বড় রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউশ মাছ গুলো ডিম ছাড়ার মৌসুমে গভীর সমুদ্র ও কর্ণফুলী নদী হয়ে হালদা নদীতে প্রবেশ করে । হালদা নদীতে মিঠাপানিতে মা মাছ ডিম ছাড়ে । হালদা নদীর সাথে সংযুক্ত বিভিন্ন খালের তীরে, হালদা নদীর তীরে কলকারখানার বজ্য, ডেইরী . পোল্টি ফার্মের বজ্য হালদা নদীর পানিতে পড়ে হালদা নদীর পানি দুষন ও হালদা নদীতে ঘের জাল, কারেন্ট জাল বসিয়ে মাছ শিকার করায় হালদা নদীর মা মাছ ও জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়েছে বলে পশ্চিম আবুর খীল এলাকার ডিম সংগ্রহকারী দোলন বড়ুয়া । হালদা নদীতে মাছ ডিম ছাড়ার ভরা মৌসুম শেষের দিকে । ভরা মৌসুমে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম না ছাড়ায় ডিম সংগ্রহকারীরা হতাশ হয়ে পড়ছে । রাউজান উপজেলা মৎস অফিসার পিযুষ প্রভাকর বলেন, প্রবল বর্ষন ও বজ্রপাত হলে নদীতে শ্রোত সৃষ্টি হলে মা মাছ ডিম ছাড়বে । হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়লে ডিম সংগ্রহ করে ডিম সংগ্রহকারীরা ডিম ফুটানোর জন্য সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে ।রাউজান উপজেলা নির্বাহী অফিসার জোনায়েদ কবির সোহাগ বলেন, হালদা নদী জাতীয় সম্পদ। হালদা নদীকে বঙ্গবন্দ্বু মৎস হেরিটেজ ঘোষনা করেছে সরকার। হালদা নদীর মা মাছের প্রজনন কে বৃদ্বির জন্য হালদা নদীতে অভিযান চালিয়ে ড্রেজার ও যান্ত্রিক নৌযান ধংস বিপুল পরিমান জাল উদ্বার করে পুড়িয়ে ধংস করা হয়েছে । হালদা নদীর মা মাছ রক্ষায় প্রতিনিয়ত হালদা নদীতে মৎস বিভাগ, নৌপুলিশ. রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন নজরদারী করছে ও অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ।
ছবির ক্যাপশনঃ রাউজানের কাগতিয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি জবর দখল করে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করার দৃশ্য
রাউজানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখল করে ঘরবাড়ী, ব্যবসা প্রতিষ্টান নির্মান
শফিউল আলম, রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ এরশাদ সরকারের শাসন আমলে হালদা নদীর সাথে সংযুক্ত রাউজানের পশ্চিম বিনাজুরী জামতল এলাকায় সোনাইর খালের মুখে ও কাগতিয়া দেওয়ান আলী সেতুর পশ্চিম পাশে কাগতিয়া খালের মুখে সুইচ গেইট নির্মান করা হয় । পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মান করা সুইচ গেইট নির্মান করার পর সুইচ গেইট রক্ষনাবেক্ষন করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারী থাকার জন্য সেমি পাকাঘর নির্মান করা হয় । সেমি পাকাঘরের পাশে বিপুল পরিমান জমি অধিগ্রহন করেন পানি উন্নয়ন বোর্ড । পরবর্তী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মান করা ঘর ছেড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারীরা চলে যায় । পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মান করা ঘর ও বিপুল পরিমান জমি জবর দখল করে রাউজানের পশ্চিম বিনজিুরী জামতল এলাকায় শতাধিক পরিবার গড়ে তোলেছে বসতঘর, এলাকার প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যক্তি গড়ে তোলেছে ব্যবসা প্রতিষ্টান । রাউজানের কাগতিয়া দেওয়ান আলী সেতুর পশ্চিম পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মান করা ঘরের পাশে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া এলাকার দিনমজুর সাহাবুউদ্দিন তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম, আধার মানিক এলাকার সাহআলম তার স্ত্রী হাসিনা বেগম টিনের ছাউনি ও টিনের বেড়া দিয়ে ঘর নির্মান করে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন গত ১০ বৎসর ধরে। কাগতিয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিপুল পরিমান জমি জবর দখল করে আরো কয়েকটি ঘর নির্মান করেছেন প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যক্তি । পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মান করা ঘরের পাশে টিনের ঘর ঘর নির্মান করে বসবাস কারী চকরিয়ার মনোয়ারা বেগম বলেন, পরিবার পরিজন নিয়ে আমি ও হাসিনা বসবাস করি। পনি উন্নয়ন বোর্ডের জমিতে । কাউকে ভাড়া দেয়নি। বাহাদুর, কালু, নাসির নামের ব্যক্তিরা এসে আমাদের ঘরে তালা লাগিয়ে দিয়েছে কয়েকবার । পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাকে ফোন করে জানালে তারা এসে ঘরের তালা খুলে দেয় । এলাকার বাসিন্দা বাহাদুর ও নাসির, কালু আমাদেরকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিত্যক্ত ঘর ব্যবহার করতে দেয়না । বাহাদুর নাসির, কালু আবদুল হালিম নামের এক ব্যক্তির কাছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি বিক্রয় করে দেয় । আবদুল হালিম পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি ক্রয় করে জমিতে মাটি ভরাট করার কাজ শুরু করলে বিষয়টি ফোন করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাকে জানালে তারা এসে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিতে মাটি ভরাট কাজে বাধা প্রদান করে। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের চট্টগ্রাম বহাদ্দার হাট অফিসের উপ সহকারী অমিত মজুমদারকে ফোন করে জানতে চাইলে, উপ সহকারী অমিত মজুমদার বলেন, আমারা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মান করা সুইচ গেইট গুলো রক্ষনাবেক্ষন খোলা ও বন্দ্ব করার দায়িত্ব পালন করি । পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দেখশুনার দায়িত্ব পালন করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আর এক দপ্তর।