কক্সবাজারের উখিয়ায় বালুখালী রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আগুনে বাড়িঘর, মসজিদ, হাসপাতাল ও এনজিওসহ প্রায় ১০ হাজারের বেশি ভবন পুড়ে গেছে। সোমবার (২২ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আগুন লাগে। প্রায় রাত ১০টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা। খবর নিউজ চট্টগ্রামের
মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা পুড়ে ছাই হওয়া সেই বাসস্থানে ফিরে আসছেন। দলে দলে পরিবারসহ ফিরছেন পুরোনো ঠিকানায়। অনেকেই নতুন কাঠ, বাস নিয়ে ফিরছে নতুন বাসস্থান তৈরির আশায়। এছাড়া আহতদের সেবা দিচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীরা।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত এক রোহিঙ্গা বলেন, আমাদের বাড়িঘর ও খাবারসহ সব পুড়ে গেছে। আমরা পরিবারসহ খোলা আকাশের নিচে ছিলাম।
সর্বস্ব হারিয়ে এখন পুড়ে যাওয়া স্থানেই ফিরেছি। ক্ষতিগ্রস্ত আরেক রোহিঙ্গা বলেন, বাড়িঘর পুড়ে যাওয়ায় পরিবারসহ পাশের ক্যাম্পে অবস্থান নিয়েছিলাম। সকালে আবারও পরিবারসহ এখানে এলাম।
এ ঘটনায় স্বজন হারানো এক রোহিঙ্গা বলেন, “আমাদের আত্মীয়ের মধ্যে দুইজন শিশু মারা গেছে বলে জেনেছি। তার মধ্যে একজন আড়াই বছর বয়সী মুশরফা, আরেকজন সাড়ে তিনবছর বয়সী তসলিমা।”
এদিকে স্থানীয়রা জানান, অগ্নিকা-ের পর হাজার হাজার রোহিঙ্গা বিভিন্ন স্থানে চলে গেছেন। অনেকেই বিভিন্ন ক্যাম্পে তাদের স্বজনদের বাড়িতে চলে গেছে। এছাড়া হাজারো রোহিঙ্গা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পরিবারসহ স্থানীয় গ্রামগুলোতে ঢুকে পড়েছে। তাদের মধ্য থেকে অনেকেই স্থান না পেয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও খোলা আকাশের নিচেও ছিলেন।
উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম আজাদ বলেন, “প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গার ঘর আগুনে পুড়ে গেছে। এখন তারা গৃহহীন। তারা বালুখালী কাশেমিয়া উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিত আছে। আমি মনে করি গৃহহীন এই ১০ হাজার পরিবারগুলোকে দ্রুত ভাসানচরে স্থানান্তর করলে তারা একটা নিরাপদ বাসস্থান পাবে।”
ইব্রাহীম আজাদ জানান, বর্তমানে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের মাঝে খাবার ও পানি সংকট দেখা দিয়েছে। তবে উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে খাবার বিতরণ করা হয়েছে। স্থানীয় পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরীও আগুনে পুড়ে যাওয়া স্থানীয় এবং রোহিঙ্গাদের মাঝে খাবার বিতরণ করেছেন।
এদিকে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানা যায়নি। এখন পর্যন্ত ৭ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।











