ইসরাইলের বিরুদ্ধে বড় যুদ্ধের হুঁশিয়ারি বাদশা আবদুল্লাহ

পশ্চিমতীরে ইসরাইলের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জর্ডানের বাদশা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ। তিনি বলেছেন, এতে ভয়াবহ এক যুদ্ধের সূচনা ঘটতে পারে। বাদশা আবদুল্লাহ বলেছেন, যদি পশ্চিম তীরে ইসরাইল দখলদারিত্ব বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা করে, তাহলে সব রকম ব্যবস্থা নেয়ার কথা বিবেচনা করবে জর্ডান। উল্লেখ্য, ইসরাইল সম্প্রতি দখলীকৃত পশ্চিম তীরে তার বসতি সম্প্রসারণ পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। তার প্রেক্ষিতে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। ফিলিস্তিন কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একমত হয়েছেন কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে, যাতে ইসরাইলের এমন উদ্যোগকে থামানো যায়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
এতে বলা হয়, ইহুদি বসতি এবং জর্ডান উপত্যকা সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইসরাইল। তবে এতে দীর্ঘদিন ধরে চলমান ও অচল অবস্থায় পড়ে থাকা শান্তি প্রক্রিয়া মুখ থুবড়ে পড়বে। পাশাপাশি একটি কার্যকর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে। এসব নিয়ে জার্মানির ডার স্পাইজেল ম্যাগাজিনকে শুক্রবার সাক্ষাতকার দিয়েছেন জর্ডানের বাদশা আবদুল্লাহ। তিনি বলেছেন, যেসব নেতা এক রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পরামর্শ দেন তারা বোঝেন না, এর অর্থ কি হতে পারে। তিনি প্রশ্ন রাখেন যদি প্যালেস্টাইনিয়ান ন্যাশনাল অথরিটি ভেঙে যায় তাহলে কি ঘটতে পারে? এমনটা হলে তাতে আরো বিশৃংখলা সৃষ্টি হবে। পুরো অঞ্চলে উগ্রপন্থা বৃদ্ধি পাবে। যদি সত্যিকার অর্থে জুলাইয়ে পশ্চিমতীরে বসতি সম্প্রসারণ করে ইসরাইল তাহলে, তা থেকে জর্ডানের সঙ্গে বড় আকারের যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে।
জর্ডান হলো পশ্চিমা ঘনিষ্ঠ একটি মিত্র। ইসরাইলের সঙ্গে শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করা আরব রাজ্যের মাত্র দুটি দেশের মধ্যে এটি অন্যতম দেশ। ইসরাইলের বসতি সম্প্রসারণের ফলে স্বাক্ষরিত ওই চুক্তি হুমকিতে পড়বে কিনা সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান বাদশা আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, আমি কোনো হুমকি দিতে চাই না। যুদ্ধের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চচাই না। তবে আমারা সব বিকল্প পন্থা বিবেচনা করছি। ইউরোপের অনেক দেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আমরা একমত। তারা চান বল প্রয়োগমুলক আইন মধ্যপ্রাচ্যে প্রয়োগ করা হবে না।
ওদিকে মিডল ইস্ট ইন্সটিটিউটের সিনিয়র ফেলো খালেদ ইলগিনডি বলেছেন, ইসরাইলের বসতি সম্প্রসারণ পরিকল্পনা জর্ডানের রাজতন্ত্রের জন্য বড় হহুমকি হয়ে দেখা দেবে। যুক্তরাষ্ট্রের আরলিংটন থেকে তিনি আল জাজিরাকে বলেছেন, যখন বাদশা নিজে বেরিয়ে আসেন এবং ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ককে ধরে রাখেন, ইসরাইলের সঙ্গে চুক্তি করেন, তখন বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর। এক্ষেত্রে বসতি সম্প্রসারণ যাতে না ঘটে সে জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নে লবিং করছে জর্ডানন। জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান আল সাফাদি এ জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইসরাইলের বসতি সম্প্রসারণ বন্ধের জন্য। কিন্তু ইসরাইলের প্রতি সবুজ সংকেত আছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের। তার মধ্যপ্রাচ্য নীতি খুব বেশি ইসরাইলের অনুকুলে। আবার এই নীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন ফিলিস্তিনিরা। তিনি ইসরাইলের পক্ষে নীতি গ্রহণ করলেও আন্তর্জাতিক বেশির ভাগ সম্প্রদায় জোর দিয়ে এর বিরোধিতা করেছে। সম্প্রতি ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সে মিলিত হন। তারা ইসরাইল-ফিলিস্তিন দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পক্ষে সমর্থন দেন এবং বসতি সম্প্রসারণের বিরোধিতা করেন।