জামায়াত ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজমুক্ত দেশ গঠনে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম।
তিনি বলেন, একটি দল জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে এমনভাবে চাঁদাবাজি করেছে যে এখন প্রতিদিন তাদের ভোট কমছে। শুধু তাই নয়, চাঁদার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে নিজেরা নিজেদের নেতাকর্মীদের খুন করার কারণে দলীয় নেতাকর্মীর সংখ্যাও কমতে শুরু করেছে।

ঢাকা-৯ আসনে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থনে শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর খিলগাঁও জোড়পুকুর মাঠে ‘মার্চ ফর দাঁড়িপাল্লা’ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল।
এসময় মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামী সমাজ বিনির্মাণের বাংলাদেশ। যেখানে কোনো অন্যায়, অনাচার, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ থাকবে না। জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে সমমনা ৮ দলের আলেম-ওলামা ও জাতীয় নেতাদের সমন্বয়ে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজমুক্ত এক নিরাপদ ও বাসযোগ্য বাংলাদেশ গঠন হবে। নিরাপদ বাংলাদেশ গঠনের অংশীদার হতে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
জামায়াতের এ নেতা বলেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য জুলাই সনদ অপরিহার্য। কিন্তু একটি দল নানারকম টালবাহানা করে যাচ্ছে। কত নাটক, কত কথা বলার পর জুলাই সনদে স্বাক্ষর করলেও গণভোট আয়োজনে তারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। শুধু তাই নয়, তারা গণভোটে ‘না’ ভোট দিতে তাদের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিচ্ছে। অথচ এই জুলাই সনদ জাতির ভবিষ্যৎ মুক্তির সনদ। ফ্যাসিবাদের পথ চিরতরে বন্ধ করার সনদ।
আব্দুল হালিম বলেন, যারা ফ্যাসিবাদ চায়, যারা দুর্নীতি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি করতে চায়, তারাই গণভোটে ‘না’ ভোট দেবে। কিন্তু যারা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখতে চায়, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ চায়, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসীদের নিঃশেষ চায়, তারা গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিয়ে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেবে।
নিজের ও জাতির নিরাপত্তা এবং সুরক্ষায় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজদের রুখে দিতে, তিনি দেশবাসীকে গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিয়ে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি চূড়ান্ত করতে আহ্বান জানান।
সমাবেশে প্রধান বক্তা ঢাকা-৯ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী কবির আহমদ বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে যত পরিবর্তন হয়েছে তা যুবসমাজের হাত ধরেই হয়েছে। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে এ দেশের যুবসমাজকেই অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশ ঘুরিয়ে দাঁড়ানোর পথ তৈরি হয়েছে। কিন্তু এই পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে একটি দলের সন্ত্রাসী আর চাঁদাবাজি কর্মকাণ্ড। জনগণকেই এবার সিদ্ধান্ত নিতে হবে আগামীর বাংলাদেশ দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্ব, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ দলের হাতে দেবে নাকি ন্যায়-ইনসাফের প্রতীক দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে দুর্নীতি-সন্ত্রাস, চাঁদাবাজমুক্ত নিরাপদ ও বাসযোগ্য বাংলাদেশ বুঝে নেবে। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে জাতি দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজমুক্ত এক নিরাপদ ও বাসযোগ্য বাংলাদেশ পাবে।
জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য ও আসন পরিচালক মাওলানা ফরিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও মহানগর দক্ষিণের সহকারী মিডিয়া সম্পাদক আশরাফুল আলম ইমনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান এবং ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগর পূর্ব সভাপতি ও ডাকসুর ছাত্র পরিবহন সম্পাদক আসিফ আব্দুল্লাহ।
সমাবেশের উদ্বোধন করেন জুলাই আন্দোলনে শাহাদাতবরণকারী শহীদ জুবায়ের আহমেদের বাবা কামাল উদ্দিন।










