আ‘লীগ শাসন আমলে যারা অর্থ বিত্তের মালিক হয়নি তারা দিন যাপন করছে কষ্টে

শফিউল আলম, রাউজানঃ আওয়ামী লীগ সরকারের শাসন আমলে বিনা প্রতিদন্দিতায় নির্বাচিত রাউজানের ১৪ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গনের মধ্যে যারা বিপুল পরিমান টাকা বানিয়েছেন তারা খোশ মেজাজে যারা কয়েকজন অবৈধভাবে টাকা আয় করতে পারেনি তারা দিন কাটছে কষ্টের মধ্যে ।

চট্গ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্বা শফিকুল ইসলাম আওয়ামী লীগ সরকারের শাসন আমলে পর পর চার বার চেয়ারম্যান নিবাচিত হয় । প্রধম বারে প্রতিদন্দিতা করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় শফিকুল ইসলাম। পরবর্তী তিনবার রাউজান উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান এহসানুল হায়দার বাবুলের সহায়তায় বিপুল পরিমান টাকা দিয়ে আওয়ামী লীগের একক দলীয় প্রার্থী হয়ে বিনা প্রতিদন্দিতায় নির্বাচিত হয় হলদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম। হলদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করার জন্য হলদিয়া ইউনিয়নের এক ইয়াবা ব্যবসায়ী ।

শফিকুল ইসলাম চেয়ারম্যান থাকাবস্থায় ইয়াবা ব্যবসায়ী তার মাদক ব্যবসা করে কোটি ােটি টাকা আয় করতো । ইয়াবা ব্যব্সা ও স্বর্ণ চোরাা চালানের ব্যবসা করে ইয়াবা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অবৈধ আয়ের টাকা ভাগবাটোয়ারা নিয়ে আরাম আয়েসে চলতো চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম। গত ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম এলাকা ছেড়ে আর্ত্নগোপনে চলে যায় । আওয়ামী লীগ সরকারের শাসন আমলে চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম তার ৩ কন্য সন্তানকে মুক্তিযোদ্বা কোটায় ব্যাংকে চাকুরী দেয় ।

রাউজানের ২নং ডাবুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান চৌধুরী প্রথমে প্রতিদন্দিতা করে ডাবুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় । পরবর্তী দুই বার বিনা প্রতিদন্দিতায় ডাবুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় আবদুর রহমান চৌধুরী । আবদুর রহমান চৌধুরী ১৯৯৭ সাল থেকে ৬ বার ডাবুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয় । রাউজানের চিকদাইর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তিনবারের মতো বিনা প্রতিদন্দিতায় চেয়্রাম্যান নির্বাচিত হয় প্রিয়তোষ চৌধুরী। রাউজানের গহিরা ইউনিয়নের চার বারের মতো বিনা প্রতিদন্দিতায় নির্বাচিত চেয়ারম্যান নুরুল আবছার বাশি। রাউজানের নোয়াজিশপুর ইউনিয়নে বিনা প্রতিন্দিতায় চার বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান সরোয়ার্দি সিকদার, রাউজানের বিনাজুরী ইউনিয়নের প্রথম বারের মতো বিনা প্রতিদন্দিতায় নির্বাচিত চেয়ারম্যান রবিন্দ্র লাল চৌধুরী। রাউজানের ৭নং রাউজান ইউনিয়নের ২ বারের মতো বিনা প্রতিদন্দিতায় নির্বাচিত চেয়ারম্যান বিএম জসিম উদ্দিন হিরু। রাউজানের কদলপুরের ২য় বারের ম]তো বিনা প্রতিদন্দিতায় নির্বাচিত নিজাম উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী, রাউজানের পাহাড়তলী ইউনিয়নের বিনা প্রতিদন্দিতায় তিনবারের মাতো নিবাচিত চেয়ারম্যান রোকন উদ্দিন। রাউজানের পুর্ব গুজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্বাস উদ্দিন আহম্মদ দু বার প্রতিদন্দিতা করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় । পরবর্তী তিনবার বিনা প্রতিদন্দিতায় চেয়ারম্যন নির্বাচিত হয় আব্বাস উদ্দিন আহম্মদ । রাউজানের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহাবু উদ্দিন আরিফ বিনা প্রতিদন্দিতায় চার বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় । রাউজানের উরকিরচর ইউনিয়নে বিনা প্রতিদন্দিতায় তিনবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় সৈয়দ আবদুল জব্বার সোহেল। রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নে দু বারের মতো বিনা প্রতিদন্দিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় বাবুল মিয়া। রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়নে চার বারের মতো বিনা প্রতিদন্দিতায় চেয়ারম্যান নিবাচিত হয় ভুপেশ বড়ুয়া। রাউজানের ১৪টি ইউনিয়নে বিনা প্রতিদন্দিতায় নির্বাচিত হওয়া চেয়ারম্যান ও বিনা প্রতিদন্দিতায় নির্বাচিত হওয়া ইউপি মেম্বার গন গত ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এলাকা ছেড়ে আর্ত্নগোপনে চলে যায় ।

আর্ত্নগোপনে চলে যাওয়া চেয়ারম্যানদের মধ্যে পাহাড়তলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রোকন উদ্দিন তার ইউনিয়নের মধ্যে জমি দখল, জমি কেনাকাটা করতে তাকে ভাগ দেওয়্,া জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিরসন, সালিস বিচার থেকে উৎকোচ নিয়ে বিপুল পরিমান অর্থ বিত্তের মালিক হয়ে যায় । পাহাড়তলী চৌমুহনী এলাকায় গড়ে তোলের ভাণ্যিজিক ভবন। বিকাশের এজেন্ট নেয় চেয়ারম্যান রোকন উদ্দিন । এসবের ফাকে ফাকে মধ্যপ্রাচ্যে গড়ে তোলেন ব্যবসা প্রতিষ্টান । রোকন উদ্দিন মোটা অংকের টাকা দিয়ে আতাত করে তার বিকাশ এজেন্টের ব্যবসা পরিচালন করছেন । রোকন উদ্দিন দুবাইতে তার ব্যবসা প্রতিষ্টানে রয়েছেন বলে একধিক সুত্র জানায় । গত ১৭ বৎসর ধরে রাউজানের লাম্বুর হাট, খেলার ঘাট এলাকায় কর্ণফুলী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিপুল পরিমান টাকা আয় করেন বাগোয়ান ইউনিয়নের বিনা প্রতিদন্দিতায় নির্বাচিত চেয়ারম্যান ভুুপেশ বড়ুয়া। অবৈধভাবে উত্তোলন করা বালু বিক্রয় টাকা দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে গড়ে তোলেন ব্যবসা প্রতিষ্টান । আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভুপেশ বড়ুয়া মধ্যপ্রাচ্যে তার ব্যবসা প্রতিষ্টানে পাড়ি জমিয়েছেন ।

রাউজানের ১৫ নং নোয়াজিশপুর ইউনিয়নের বিনা প্রতিদন্দিতায় নির্বাচিত চেয়ারম্যান সরোয়ার্দি সিকদার গত ১৭ বৎসর ধরে নোয়াজিশপুর সরকারী মালিকাধীন ঈশা খা দিঘি কোন প্রকার ইজারা না নিয়ে ২৪ একর আয়তনের দিঘিতে মাছ চাষ করেন। শুস্ক মৌসুমে ঈশা খা দিঘি সেচের মাধ্যমে পানি শুকিয়ে মাছ বিক্রয় করার পর দিঘির মাটি খনন করে মাটি বিক্রয় করে বিপুল পরিমান টাকার মালিক হয় অবৈধভাবে । সরোয়ার্দি সিকদার এছাড়া ও সর্তা খালের ফতেহ নগর মিলনা মাস্ট্রারের ঘাটায় সর্তা খালের পাড়ে জেগে উঠা বিশাল চর ও জমি কেটে মাটি বিক্রয় করে আঢ করেন কোটি কোটি টাকা । করোনার প্রাদুর্ভাব চলাকালে ও বিভিন্ন সময়ে নোয়াজিশপুর এলাকার ধনাঢ্য প্রবাসী, শিল্প প্রতিষ্টানের মালিক, সরকারী বেসকারী উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান চাদাঁ আদায় করে এলাকার মানুষকে লোক দেখানো কিছু সহায়তা করে অবশিষ্ট টাকা সরোয়ার্দি সিকদার নিজের কাছে রেখে দেয়। এক সময়ে সরোয়াদি সিকদারের কাছে কিছু ছিলনা ।

আওয়ামী লীগ সরকারের শাসন আমলে অবৈধ আয়ের টাকা দিয়ে নিজ বাড়ীতে পাকা ভবন, নোয়াজিশপুর ফতেহ নগর বাশডুয়াতল বাজারে বিশাল আয়তনের চারতলা বিশিষ্ট বাণ্যিজিক ভবন, কমিনিউটি সেন্টার রয়েছে। বাণ্যিজিক ভবন ও কমিনিউটি সেন্টারের মালিকানায় প্রবাসী গ্যারেজ ফরিদ ও রয়েছে । চট্টগ্রাম নগরীতে ক্রয় করেছে ফ্লাট । ওমান ও দুবাইতে গড়ে তোলেছে কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্টান । আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সরোয়ার্দি সিকদার আর্ত্নগোপনে চলে যায় মধ্যপ্রাচ্যে। পরে তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যায় মধ্যপ্রাচ্যে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ডাবুয়ার চেয়ারম্যান আবদুর রহমান চৌধুরীকে গ্রেফতার করে পুলিশ । তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয় । বিনাজুরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিন্দ্র লাল চৌধুরী আর্ত্নগোপনে থেকে আতাত করে এলাকায় আসার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন । চেয়ারম্যান আব্বাস উদ্দিন আহম্মদ, সাহাবু উদ্দিন আরিফ, নিজাম উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী, শফিকুল ইসলাম, বি, এম জসিম উদ্দিন হিরু, দেশের মধ্যে আর্ত্নগোপনে রয়েছে বলে একাধিক সুত্র জানায় । নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবুল মিয়া আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পর তার পুরাতন ব্যবসা প্রতিষ্টান মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি জমিয়েছেন । আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রাউজানের ১৪টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। এতে এলাকার জনগনের সেবা কার্যক্রম ব্যহত হয় । সরকার আর্ত্নগোপনে চলে যাওয়া চেয়ারম্যানদের অপসারন কওে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে একজন মেম্বারকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদে আসিন করে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে বলে জানান, রাউজান উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিসান বিন মাজেদ ।