বারি-৪ লাউ চাষে সফলতা পেল রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্র

এ লাউ চাষ করে ব্যাপক লাভবান হতে পারবে চাষীরা
মোঃ নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই(রাঙামাটি): দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার পর অবশেষে কাপ্তাইয়ের রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে বারি লাউ-৪ সফলতার মুখ দেখলো। বহুদিন ধরে বারি-৪ জাতের লাউ চাষ করে আসলেও এবারই প্রথম গবেষণা কেন্দ্রে ব্যাপক আকারে এর ফলন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) উক্ত গবেষণা কেন্দ্রে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাঠের বিস্তীর্ন এলাকার মাচাং জুড়ে চাষ হচ্ছে বারি-৪ জাতের লাউ। মাচাং জুড়ে ঝুলতে দেখা গেছে বিভিন্ন আকারের লাউ। লাউগুলো দেখতেও যেমন সুন্দর তেমনি বেশ পরিপক্ক।

গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ড. মুহাম্মদ জিয়াউর রহমান জানান, এ জাতের লাউ এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তাপ সহনশীল এবং সারা বছর চাষ করা যায়। পার্বত্য অঞ্চলে চাষের জন্য উপযোগী একটি জাত। গাঢ় সবুজ রঙের ফলের গায়ে সাদাটে দাগ থাকে। প্রতিটি গাছে ১০ থেকে ১২ টি ফল পাওয়া যায় এবং যার গড় ওজন প্রায় আড়াই কেজি। এবং লাউ গুলো লম্বায় ৪২ থেকে ৪৫ সেমি এবং ব্যাস ১২ থেকে ১৩ সেমি হয়ে থাকে। চারা রোপণের ৭০ থেকে ৮০ দিনের মধ্যে এর ফল সংগ্রহ করা যায়। এছাড়া এই গাছের জীবনকাল ১শত ৩০ থেকে ১শত ৫০ দিন হয়ে থাকে। প্রতি হেক্টরে ফলন হয় ৮০ থেকে ৮৫ টন। জাতটি তাপ সহিষ্ণু হওয়ায় সারা বছর জুড়ে চাষ করে কৃষকরা লাভবান হতে পারে।

এছাড়া তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের সব এলাকার পাশাপাশি পাহাড়ে এ জাতটি চাষ করার বেশ উপযোগী। গ্রীষ্মকালে চাষের জন্য ফাল্গুনের শেষে আগাম ফসল হিসেবে চাষ করা যায়। এবং চৈত্র মাসে ও বীজ বপন করে বৈশাখ মাসে চারা রোপণ করা সম্ভব হয়। এদিকে লাউ বারী-৪ এর বীজ প্রাপ্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জানান, গবেষণা কেন্দ্রে প্রচুর পরিমাণে বীজের সংগ্রহ রয়েছে। স্থানীয় চাষিরা চাইলে, বিনামূল্যে যোগাযোগ করে এই বীজ অথবা চারা সংগ্রহ করতে পারবে।

এদিকে, স্থানীয় কৃষক সাইলামং মারমা, মোঃ রহমান আলী জানান, তারা এই বারী-৪ লাউ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এবং এটি পাহাড়ী এলাকার জন্য উপযোগী হওয়ায় তারা বেশ আনন্দিত। সহসায় উক্ত কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করে বীজ সংগ্রহ পূর্বক চাষ শুরু করবো।

প্রসঙ্গত, পাহাড়ে চাষ উপযোগী ফসলের জাত এবং অন্যান্য কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করার লক্ষে ১৯৭৬ সালে কর্ণফুলী নদীর মোহনায় রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নে প্রায় ১০০ একর জমিতে গড়ে উঠে রাইখালী পাহাড়ী কৃষি গবেষণা কেন্দ্র। বিভিন্ন ফসল নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি।