চট্টগ্রামের পটিয়ার এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ৩ হাজার ৫৫০ পিস ইয়াবাসহ যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ সময় তার কাছ থেকে ৭ হাজার ৬০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার ইউপি সদস্যের নাম শফিউল বশর (৩২)। তিনি উপজেলার কোলাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার)।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আনোয়ারা সেনা ক্যাম্প ও আনোয়ারা থানা পুলিশের যৌথ টিম তাকে গ্রেপ্তার করে।
শফিউল বশর পটিয়া উপজেলার কোলাগাঁও ইউনিয়নের পূর্ব কোলাগাঁও ১ নম্বর ওয়ার্ডের নলান্দা গ্রামের খুইল্লা মিয়ার ছেলে।
আনোয়ারা থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কালাবিবি দীঘির মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে বশরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, স্থানীয় একটি মাদকচক্র সক্রিয়ভাবে ইয়াবা লেনদেন করছে—এমন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আনোয়ারা থানার একটি টিম ওই এলাকায় অবস্থান নেয়।
সোমবার সকালে কালাবিবি দীঘির মোড় এলাকায় সন্দেহজনক গতিবিধি দেখে শফিউলকে আটক করা হয়। পরে তার বহন করা শপিং ব্যাগ তল্লাশি করলে দুটি সাদা পলিথিনে মোড়ানো ১ হাজার ৭৭৫ পিস করে মোট ৩ হাজার ৫৫০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। এ ছাড়া মাদক বিক্রির ৭ হাজার ৬০০ টাকা জব্দ করা হয়। আনোয়ারা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আতিকুর রহমান বলেন, ইউপি সদস্য শফিউল বশর দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
গোপন সোর্সের তথ্যের ভিত্তিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। তার ব্যাগ থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা মনে করছি, তিনি একটি বড় চক্রের সক্রিয় সদস্য। তার কাছ থেকে উদ্ধারকৃত ইয়াবার মূল্য ১০ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। তিনি আরো বলেন, উদ্ধারকৃত ইয়াবার উৎস শনাক্তে তদন্ত চলছে।
প্রয়োজন হলে অন্যান্য এলাকাতেও অভিযান পরিচালনা করা হবে। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করার পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শফিউল বশরের মাদকের উৎস, সরবরাহ চক্র, অর্থনৈতিক লেনদেনসহ সব দিক খতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে কোলাগাঁও এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কোলাগাঁও এলাকায় কিছুদিন ধরে অচেনা লোকজনের আনাগোনা বেড়ে গিয়েছিল। বশরের সহযোগী কালা সাজ্জাদসহ এ সিন্ডিকেটটির দৌরাত্ম্যে এলাকার সাধারণ মানুষ অসহায়। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেতেন না। এবার এক এক করে সবাই তাদের অপরাধের ফিরিস্তি তুলে ধরবে। তার সিন্ডিকেটের অন্যান্য সহযোগীদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পটিয়ায় ইয়াবা ব্যবসায়ের একটি সক্রিয় রুট আছে। টার্গেট থাকে স্থানীয় বাজারগুলো, যেখানে দ্রুত হাতবদল করা সম্ভব। কোলাগাঁও এলাকার মতো গ্রামীণ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারী কম থাকায় চক্রগুলো সুযোগ নেয়। একজনকে গ্রেপ্তার করা গুরুত্বপূর্ণ হলেও মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত পুরো নেটওয়ার্ক ধ্বংস করা।
এর আগে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর এই ইউপি সদস্য তার সহযোগীদের নিয়ে কালের কণ্ঠ অনলাইনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে কালের কণ্ঠের সম্পাদক বরাবর একটি ওকিল নোটিশ পাঠান।











