বান্দরবানে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে মারধর করেছেন ঢাকা থেকে আসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলা শিক্ষা অফিসের রেস্টরুমে কথা কাটাকাটির জেরে এ ঘটনা ঘটে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার আসলাম খান এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ‘অফিসিয়াল কাজে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বান্দরবানে আসেন তিনি এবং জেলা অফিসের রেস্টরুমে অবস্থান করেন। অফিসিয়াল কাজে দুপুরে জেলা শিক্ষা অফিসারের কক্ষে ঢোকেন। ওই সময় স্যারের সামনে দুজন অপরিচিত লোক বসা ছিল। স্যারের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে আমার পাশে বসে থাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মনিটরিং অফিসার রোকনুজ্জামান ডানহাতে আমার বামগালে ও কানে থাপ্পড় মারতে থাকে।
অভিযোগে তিনি আরও উল্লেখ করেন, তার সাথে থাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাজিম উদ্দিনও তার সাথে একমত পোষণ করে আমার সাথে শারীরিকভাবে পৈশাচিক উল্লাস করে। এছাড়াও তাদের হাত থেকে বাঁচাবার নামে বান্দরবান জেলা অফিসের অফিস সহায়ক জামাল আমাকে কলার ধরে টানতে টানতে রুম থেকে বের করে নিয়ে এসে পাশের রুমের দেয়ালের সাথে চেপে ধরে কপাল থেতলে দেয়ার চেষ্টা করে। তবে কেন বা কী কারণে মারধর করা হয়েছে, সে বিষয়ে কিছুই জানে না বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন থানচি উপজেলা শিক্ষা অফিসার আসলাম খান।
এদিকে মারধরের অভিযোগের বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মনিটরিং অফিসার রোকনুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। মূলত আমরা ঢাকা হেড অফিস থেকে স্কুলের কার্যক্রম তদারকির বিষয়ে বান্দরবানে এসেছি। অফিসিয়াল নিয়মানুযায়ী বান্দরবান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের রেস্ট হাউসে থাকার কথা থাকলেও আগে থেকে ৩টি রুম বান্দরবান সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁঞা ও থানচি উপজেলা শিক্ষা অফিসার আসলাম খান দখল করে রাখে। এ বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে থানচি উপজেলা শিক্ষা অফিসার উত্তেজিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে।
তিনি আরও বলেন, ‘থানচি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বারবার বাইরে চলে যাওয়ার কথা বললেও তিনি কারও কথা না শুনে গালিগালাজ করতে থাকে। পরে আমরা সবাই মিলে তাকে রুমের বাইরে নিয়ে আসি।’
এবিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আবু ছালেহ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন বলেন, ‘ঢাকা থেকে দুজন কর্মকর্তা আসছিল, তারা আমার রুমে বসে ছিলেন। এ সময় থানচি উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমার রুমে প্রবেশ করে। আমি তাকে অতিথিদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলে তিনি তাদের পাত্তা দেন নি। এমনকি তাদের সাথে অযাচিত কথা বার্তা বলা শুরু করলেন। একপর্যায়ে তিনি তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। আমি থামানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু সে আমার কোনো কথাই শোনেন নি। বরং আমাকেও মারার জন্য তেড়ে আসে। পরে তাকে ঢাকার এক কর্মকর্তা রুম থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করলে তাদের মধ্যে হাল্কা হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তবে তাকে মারধর করেনি। দুজনের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। তবে এটার জন্য আসলাম খান দায়ী। সে এর আগেও আমাকে মারার জন্য তেড়ে আসছিল। আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। সে কাউকে পাত্তা দেয় না আমাকেও সে তোয়াক্কা করে না। বিষয়টি নিজেদের মধ্যে সমাধানের চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু সে যেহেতু অভিযোগ করেছে তাহলে আমিও বিষয়টি ওপরে জানাবো যাতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়।’
আসলাম খান ২০০০ সালে থানচি উপজেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে যোগদান করেন।