সমাবর্তনের পর চারুকলা ইন্সটিটিউটকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রশাসনের আশ্বাসে টানা ৩৪ ঘণ্টা পর রাত ১টার দিকে অনশন প্রত্যাহার করেন ৯ শিক্ষার্থী।
চারুকলা ইন্সটিটিউটকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে ফেরানোর দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছিলেন অনুষদের নয় শিক্ষার্থী। অনশনের ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলে মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় অসুস্থ হয়ে পড়েন অনশনরত দুই শিক্ষার্থী। পরবর্তীতে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জরুরি ৫৬১তম সিন্ডিকেট সভা ডাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আড়াই ঘণ্টা মিটিংয়ের পর চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত জানায় কর্তৃপক্ষ। বলা হয়, এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হবে সমাবর্তনের পর। তবে কোনো নির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি। আরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, চারুকলার বর্তমান স্থাপনাগুলো চারুকলার শিক্ষার্থীরাই ব্যবহার করবেন।
বর্তমান স্থাপনাগুলো বেদখল না হওয়ার জন্য নিরাপত্তা জোরদার করা, চারুকলা ইন্সটিটিউটের সম্পত্তির বিষয়ে সরকারি গেজেট এবং সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রের অপব্যাখ্যা, মনগড়া তথ্য প্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে প্রকৃত অবস্থা থেকে আড়ালে রাখার বিষয়ে যে বা যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করার বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করাসহ ৬টি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এই সিদ্ধান্তগুলো আজকের মধ্যে প্রজ্ঞাপন হিসেবে জারি করা হবে এবং চারুকলা ইন্সটিটিউটের সবার কাছে পৌঁছে দেয়া হবে বলে জানান তারা।
তবে চারুকলা ইন্সটিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে ফেরানোর নির্দিষ্ট তারিখ জানতে চান অনশনকারীরা। কিন্তু প্রশাসন কোনো নির্দিষ্ট তারিখ না জানালে এক পর্যায়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের বাকবিতণ্ডা হয়। পরবর্তীতে প্রশাসনের দৃঢ় আশ্বাসে ৩৪ ঘণ্টা পর রাত ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা তাদের অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে অনুষদের পলেস্তারা খসে পড়ার পর ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, আবাসন সংকটসহ নানা সমস্যার কারণে চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে ফেরানোর দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। সবশেষ ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে আন্দোলন চলাকালে প্রশাসন ৩১ মার্চ ২০২৫ এর মধ্যে চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে ফেরানোর আশ্বাস দেন।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এর বাস্তবায়ন দেখা না যাওয়ায় পুনরায় গত সোমবার অবস্থান কর্মসূচি করেন তারা। এর মধ্যে প্রশাসনের ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে অনশন কর্মসূচি শুরু করেন ৯ শিক্ষার্থী।