মাইজভান্ডার ঔরশের সময় কোটি টাকার মুলা বিক্রি হয় ফটিকছড়িতে

শফিউল আলম, রাউজানঃ চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলার মাইজভান্ডার দরবার শরীফ। মাইজভান্ডারী ত্বরিকার প্রর্বত্বক সৈয়দ আহম্মদ উল্ল্রাহ মাইজভান্ডারীর ওরশ শরীফ অনুষ্টিত হয় প্রতি বৎসরের ১০ মাঘ। এই ওরশ শরীফে দেশের বিভিন্ন এলাকা ও দেশের বাইরে থেকে কয়েক লাখ আশেক ভক্ত বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ আসেন মাইজভান্ডার দরবার শরীফে। ওরশ শরীফে কয়েক দিন পর্যন্ত থাকেন চট্টগ্রামের বাইরে জেলা থেকে আগত আশেক ভক্তরা। ওরশ শরীফ থেকে চলে যাওয়ার সময়ে ফটিকছড়ি উপজেলার ধুরং সহ আশে পাশের এলাকার ফসলী জমিতে কৃষকের উৎপাদিত জাপানী (ভান্ডারী)মুলা ক্রয় করে নিয়ে যায়। প্রতিটি মুলা ২ কেজি থেকে ২০ কেজি পযন্ত ওজনের ।

আগামী ২৪ জানুয়ারী ১০ মাঘ মাইজভান্ডার দরবারের ওরশ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। ওরশ শেষে পরদিন বুধবার হাজার হাজার মানুষ বড় বড় সাইজের মূলা ক্রয় করে বাড়ীতে ফিরবেন আশেক ভক্তরা।

১৬ জানুয়ারী (বৃহস্পতিবার) বিকালে মাইজভান্ডার দরবার শরীফে দেখা যায় কৃষকরা মুলা বিক্রয় করার জন্য সড়কের পাশে ও ভেতরের স্থানে মুলার স্তুপ করে রেখেছেন। ১৬ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার বিকালে ৪ কেজি ওজনের একটি মুলা ১শত টাকা দিয়ে ক্রয় করে বাড়ী ফিরছেন পটিয়ার বাসিন্দ্বা মোঃ আলম।

প্রতিটি মুলা সাইজ বুঝে ১শত টাকা থেকে ৩শত টাকা বিক্রয় করা হয় । ফটিকছড়ি উপজেলার ধুরং সহ আশে পাশের এলাকার বিপুল পরিমান ফসলী জমিতে শুস্ক মৌসুমে সব্জি ক্ষেতের সাথে মুলা ক্ষেতের চাষাবাদ করেন কৃষকরা। মাইজভান্ডার ওরশ শরীফ অনুষ্টানের কয়েকদিন পুর্বেই থেকে জমি থেকে মুলা তুলে মাইজভান্ডার দরবার শরীফের মধ্যে পৃথক পৃথক ভাবে স্তুপ করে রাখেন কৃষকর। কৃষক থেকে পাইকারী ভাবে ক্ষেত থেকে মুলা ক্রয় করে নিয়ে ব্যবসায়ীরা মাইজভান্ডার দরবার শরীফে বিক্রয় করেন । ১০ মাঘ সৈয়দ আহম্মদ উল্ল্যাহ মাইজভান্ডারীর ওরশ ছাড়া ও ২২ চৈত্র সৈয়দ গোলামুর রহমান মাইজভান্ডারী, ২৬আশ্বিন শাহান শাহ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারীর ওরশ সহ মাইজভান্ডার দরবারের ওরশ শরীফে এই ভান্ডারী মুলার দোকান বসে । ঐ সময়ে কৃষকের উৎপাদিত ভান্ডারী মুলা বিক্রয় উৎসব চলে মাইজভান্ডার দরবার শরীফে । ফটিকছড়ির ধুরং এলাকার কৃষক আবুল হাশেম বলেন, তিনি ২০ একর জমিতে সব্জি ক্ষেতের চাষাবাদ করেছেন । তার সব্জি ক্ষেতের মধ্যে অন্য সব্জির সাথে মুলা ক্ষেতের চাষাবাদ করেছেন । গত চারদিন পুর্বেই থেকে কৃষক আবুল হাশেম কৃষি শ্রমিক দিয়ে ক্ষেত থেকে মুলা তুলে মাইজভান্ডার দরবার শরীফে এনে বিক্রয় করার জন্য স্তুপ করছেন । প্রথম দপে আনা ১শত ২০টি বিভিন্ন সাইজের মুলা বিক্রয় করে ৯ হাজার টাকায় । কৃষক আবুল হাশেম তার ক্ষেত থেকে উৎপাদিত মুলা বিক্রয় করে ৪ লাখ টাকা থেকে ৬ লাখ টাকা আয় করবেন বলে আশা করছেন । মূলা, অতি সাধারণ এই সব্জি চট্টগ্রামের অনেক ভোজন রসিকদের কাছে অসাধারণ। তারা বছরজুড়ে একটি বিশেষ মূলার অপেক্ষায় থাকেন। এই মূলার নাম ‘মাইজভান্ডারের নামে এই মূলা’, ‘ভান্ডারি মূলা হিসাবে পরিচিত লাভ করেছে।

মাইজভান্ডার দরবার শরীফ ঘুরে দেখা গেছে, অসংখ্য ক্রেতা দরবার থেকে মূলা কিনে নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। মূলা কেনাকাটার এই দৃশ্য সাধারণ মানুষকেও ব্যাপক আকর্ষিত করছে। শুধুমাত্র বছরে একবার মাঘ মাসে মাইজভান্ডার দরবারের ওরশের সময় এমন দৃশ্যের অবতারনা হয় ।