২৪ শে এপ্রিল থেকে গতকাল অবধি- ১১ দিনে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে স্পেশাল ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছে দেয়া হয়েছে ১৬৩৫ বাংলাদেশিকে। বাহরাইন, ওমান, কুয়েত ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে একাধিক ফ্লাইট এসেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করোনা সেলের রেকর্ড বলছে, নিয়মিত ফ্লাইট যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর বিশেষ ব্যবস্থায় দুই হাজারের বেশি বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে মধ্যপ্রাচ্য। কিন্তু তাদের সবাই জেল বা ডিটেনশন সেন্টার ফেরত নন। ১৬৩৫ জন ছোটখাটো অপরাধে বিশেষত দেশগুলোর ইমিগ্রেশন আইন ভঙ্গের দায়ে জেল বা ডিটেনশন সেন্টারে ছিলেন। করোনা ঠেকাতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো তাদের জেলখানা ও ডিটেনশন সেন্টার খালি করার উদ্যােগের অংশ হিসেবে এদের মুক্তি দিয়ে নিজ খরচে দেশে পাঠিয়েছে। ২৪ শে এপ্রিল পুরোপুরি জেল ফেরত প্রথম ফ্লাইট আসে মাস্কাট থেকে। সেই ফ্লাইটে ২৯২ বাংলাদেশিকে ঢাকায় পাঠায় ওমান সরকার।
যদিও ঢাকা চেয়েছিল করোনার এই কঠিন মুহুর্তে তারা ফেরত না আসুক। বিশেষ করে জরুরি ভিত্তিতে তৈরি হতে যাওয়া ৪০০০ প্রবাসীর প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারিন্টিন সুবিধার কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত সময় চেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু না, মাস্কাট তাতে রাজি হয়নি। তারও আগে এপ্রিলের মাঝামাঝিতে সৌদি আরবে ওমরাহ করতে গিয়ে আটকে পড়া ১৪৪ বাংলাদেশির সঙ্গে ১৬৮ প্রবাসী, যারা বিভিন্ন অপরাধে কারাগারে ছিলেন তাদের স্পেশাল বিমানে তুলে ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরবর্তীতে বাহরাইন থেকে ১৩৮, কুয়েতের দুই ফ্লাইটে ২৪৭ জন এবং সর্বশেষ গত রাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফ্লাইটে ফিরেন ১৭৬ বাংলাদেশি, এরমধ্য অবশ্য ৭৯ জন আমিরাতে বেড়াতে গিয়ে আটকে পড়া।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা মঙ্গলবার দুপুরে মানবজমিনের সঙ্গে অালাপে বলেন, জেল খালি করার প্রক্রিয়ায় ইরাক ছাড়া মধ্যপ্রচ্যের অন্য দেশগুলো অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে একটুও সময় নেয়নি। মুক্তি দিয়ে করোনা টেস্ট করেছে আর স্পোশাল ফ্লাইটে তুলেছে। ফলে বাংলাদেশিদের গ্রহণ করতে হয়েছে অনেকটা অপ্রস্তুত অবস্থায়। বিশেষত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন সুবিধা প্রস্তুত করার আগে আসায় তাদের বেশিরভাগকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠাতে হয়েছে। করোনার কারণে মুক্ত তবে অপ্রত্যাশিতভাবে দলে দলে দেশে ফেরত পাঠানো ছাড়াও কুয়েত, সৌদি আরব, কাতার, আরব আমিরাত বাহরাইনসহ বিভিন্ন দেশে থাকা লাখ খানেক অবৈধ বাংলাদেশিকে খুব কম সময়ের মধ্যে গ্রহণে ঢাকাকে প্রস্তুত হতে হচ্ছে জানিয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, তারা দ্রুতই ফিরছেন। তাদের জন্য জরুরিভাবে ঢাকা এবং আশপাশের এলাকায় প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন সুবিধা তৈরির কাজ চলছে। দেশি-বিদেশে যোগাযোগ ও সমন্বয়ে সেগুনবাগিচায় প্রতিষ্ঠিত করোনা সেলের সমন্বয়ক ডা. খলিলুর রহমান অবশ্য মনে করেন- মধ্যপ্রাচ্য থেকে বাংলাদেশিদের ফেরতের বিষয়টি রুটিন ঘটনা। করোনার কারণে নিয়মিত ফ্লাইট বন্ধ থাকায় তাদের একসঙ্গে ফেরানো হচ্ছে। ফলে এটা চোখে লাগছে। করোনার কারণে ইরাকে ২০ হাজার বন্দি মুক্তি পেয়েছেন, তাদের বেশির ভাগই বাংলাদেশি। এ বিষয়ে ড. খলিল বলেন, মনে হয় না ইরাক সরকার কাউকে নিজে থেকে ফেরত পাঠাবে।