প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ তার নাটকের জন্য একজন মহিলা ডাকাত চরিত্রের জন্য শিল্পী খুঁজছিলেন। সৌভাগ্যক্রমে হুমায়ূন আহমেদ স্যার ও আমার প্রোডাকশন অফিস কাকরাইলে একই বিল্ডিং ছিল। তার সহকারীর সঙ্গে আমার আগেই পরিচয় ছিল। উনি এসে আমাকে বললেন নতুন একটি নাটকে একজন ডাকাত মহিলা চরিত্র রয়েছে, আপনি কি অভিনয় করবেন? আমি যেন হাতে আকাশের চাঁদ পেয়ে গেলাম! কারণ স্যারের নাটকে অভিনয় করার জন্য অনেক শিল্পী মুখিয়ে থাকেন। সেই থেকে স্যারের অনেক নাটক এবং সিনেমায় আমি অভিনয় করেছি। খুব আফসোস হয় আজ যদি স্যার বেঁচে থাকতেন আমাকে শিল্পী হিসেবে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতেন হয়তো। এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন অভিনেত্রী শবনম পারভীন। হানিফ সংকেতের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির একটি জনপ্রিয় পর্ব হচ্ছে নানি-নাতি।
সেখাবে নানির ভূমিকায় দেখা মেলে আপনার। কেমন উপভোগ করেন? এ অভিনেত্রী বলেন, আশি বছরের বৃদ্ধ থেকে শুরু করে ২৫ বছরের যুবক সবাই আমাকে যেখানেই দেখে নানি বলে চিৎকার করে ওঠে। বিষয়টি আমি খুব উপভোগ করি।
শবনম পারভীন অভিনয় শুরুর গল্প বলতে গিয়ে বলেন, আমি যখন অভিনয় জগতে পা বাড়াই তখন আমার বাবা আমাকে স্পষ্ট বলেন- তুমি যদি এই জগতে যাও তবে আমি তোমাকে ত্যাজ্য করবো। আমি তখন উলটো রাগ দেখিয়ে মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকা চলে এলাম। অভিনয়ের জন্য পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাই। অভিনয়ের জন্য কতো যে কষ্ট করেছি সেটা ভাষায় প্রকাশের নয়। একবেলা খেয়েছি হয়তো আরেক বেলা খেতে পাইনি।
শবনম যোগ করে বলেন, আজকাল কেন জানি বারবার অনিশ্চয়তা দেখতে পাই। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যখন আমাদের ট্রল করেন তখন কষ্ট হয়। অনেকে বলেন যৌবনকালে আমরা শিল্পীরা নাকি ফুর্তি করি, আর বয়স হলে দুস্থ শিল্পীর খাতায় নাম লিখাই! নাটক বলেন আর সিনেমা বলেন, সব জায়গায় নায়ক-নায়িকা আর আমাদের পারিশ্রমিকে আকাশ পাতাল পার্থক্য। এর মধ্যে আবার অনেকেই পুরো পারিশ্রমিক দিতে কার্পণ্য করেন। আমার মতো ক্ষুদ্র শিল্পীও অনেক প্রযোজকের কাছে টাকা পাওনা আছি। অভিযোগ করে তিনি বলেন, মাঝে মাঝে মনে ভয় হয় আমিও কি দুস্থ শিল্পীদের কাতারে পড়ে যাচ্ছি!











