নিজস্ব প্রতিবেদক: বহতা সময়ের স্রোতে পাল্টে গেছে আনেক কিছু। এমনি একটি জিনিস হলো জৌলুস হারিয়েছে ঈদ কার্ড আদান প্রদানের রীতি। এখন আর ঈদ কার্ড এর দোকানে মানুষের ভির দেখা যায় না। কটা সময় ছিলো ঈদ এলেই ঈদ কার্ড কেনার ধুম পড়তো। ঈদের আনন্দ, অনুভূতি প্রিয়জনের কাছে পৌছে দেযার বড় মাধ্যম ছিল এটি।
এ সময়ের সাথে সাথে ঈদ কাডের” প্রচলন অনেকটাই কমে গেছে। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে মানুষও যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে দিনদিন। কার্ড কিনে নিজের হাতে ২ লাইন লেখার চাইতে মোবাইলের কি-প্যাড আর কম্পিউটারের কি-বোর্ডে লিখতেই সবাই এখন স্বা”ছন্দবোধ করেন। আর এখন কর্পোরেট অফিস থেকে শুভে”ছা হিসেবে ঈদ কার্ড পাঠানো ছাড়া আর আগের মতো তেমন মর্যাদা পায় না। বলতে গেলে প্রযুক্তির আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছে ঈদ কার্ডের প্রচলন ।
এখন ইন্টারনেটে নানা অডিও ভিজ্যুয়াল কন্টেন্ট আর মোবাইল এসএমএস জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় হারিয়ে যাচ্ছে রঙ্গিন সেই ঈদ কার্ড। প্রযুক্তির সহায়তায় শুভেচ্ছা বিনিময়ে আভ্যস্ত হয়ে উঠছে মানুষ।
অনেকে নিজ হাতে সযত্নে কাগজ আর বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে তৈরি করতেন ঈদ কার্ড। নানা রঙে বর্ণিল সুদৃশ্য কাডের” ওপর লেখা থাকত ‘ঈদ মোবারক’। শুধু দোকানগুলোতেই নয়, পাড়ার ছেলেরা শামিয়ানা টাঙিয়ে তার নিচে টেবিল সাজিয়ে বসত ঈদকার্ড বিক্রির জন্য। এমনটা খুব কম চোখে পড়ে।
কিন্তু আনেকে এখনো ঈদ কার্ড ব্যবহারের ধারাটি ধরে রেখেছেন। তারা জানান ঈদ কার্ড ছাড়া তৃপ্তি পান না। ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রধান সাঈদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘ঈদ কার্ডের” প্রচলন কখনও হারিয়ে যাবে না। যা বদলায় না তা পুরাতন, যা বদলায় তাই সুন্দর। পৃথিবী বদলায় বলেই তা সুন্দর।’
প্রযুক্তির এ যুগেও নগরীর বিভিন্ন গিফট কর্নারগুলো ঈদ আয়োজনে রেখেছে নানা নকশা আর ডিজাইনের ঈদ কার্ড। আছে ক্যালিগ্রাফির ছাপ। তবে আগের মতো হয় না বেচাকেনা।
মোবাইলের ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে একটি ম্যাসেজ লিখে সবাইকে ফরওয়ার্ড করা অথবা ফেসবুকে একটি ‘ঈদ মোবারক’ লেখা ছবিতে সবাইকে ট্যাগ করে দেওয়াটা বর্তমানে টেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাতে লেখা কাডের” সাথে কি আর অনলাইন উইশের তুলনা হয়! সেটা ক’জনই বা ভাবছি আমরা!
গ্রাফিক ডিজাইনার ক্রিয়ার সত্বাধিকারী শাদ ইরশাদ বলেন, স্মার্ট ফোনে প্লে-স্টোরেই রয়েছে অনেক” ঈদ কাডের” অ্যাপ। এটা এখন অনেকটা আউটসোর্সিংও বলা যায়। আগে যেমন দোকানে বসে ঈদ কার্ড বিক্রি হতো। সেই ঈদ কার্ড এখন মনিটরের সামনে প্রযুক্তির মধ্য দিয়ে বিক্রি হচ্ছে। প্রোগ্রামের কাজ যারা পারেন তারাই মূলত এমন আউটসোর্সিংয়ের কাজগুলো করে থাকেন। শুধু গুগলেই নয়। ফেসবুকে এখন অনেক ধরনের অ্যাপ পাওয়া যায়, যার মধ্য দিয়ে ঈদের সময় পি”য়জনকে ঈদের শুভে”ছা পাঠিয়ে থাকেন অনেকে।
নিউ মার্কেটে আরচিস গ্যালারিতে কথা হয় কলেজ পড়ুয়া তানহা তাহমিনার সাথে । সে ঈদ কার্ড কিনতে এসেছে বন্ধুদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা আদান-প্রদান করতে। জানালো কার্ড দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর মজাই আলাদা।
সময়ের পরিবর্তনে কাগুজে ঈদ কার্ডের প্রচলন কমলেও এর আবেদন ফুরাবে না।