পতেঙ্গা জেলেপল্লিতে পৌঁছেনি সহায়তা, খোলা আকাশের নিচে শতাধিক পরিবার

পতেঙ্গা আকমল আলী রোডে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়া জেলে পল্লিতে ঘরবাড়ি হারিয়ে বাসিন্দারা এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে।

বুধবার (২৬ অক্টোবর) ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, যেদিকে চোখ যায় শুধু বিধস্ত ঘরবাড়ির চিত্র।

কেউ কেউ কান্না করছেন। আহাজারি করে বলছেন কষ্টের কথা। ঝড়ে শতাধিক ঘর-বাড়ির টিনের চাল উড়ে যায়। এতে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন শতাধিক পরিবার।
ক্ষতিগ্রস্ত মিলনি দাস বলেন, সন্ধ্যা ৭টার দিকে পানি আসতে শুরু করে। ৯টার দিকে সব শেষ। এখনো বেশিরভাগ ঘর পানির ওপর ভাসছে। ঝড়ে আমার সব শেষ হয়ে গেছে। এখন আমি নিঃস্ব। ঘরে খাবার নাই, থাকার জায়গা নাই।

দুঃখের কথা বলছিলেন জেলে আকাশ দাস। তিনি বলেন, হঠাৎ করে ঝড় শুরু হয়। এরপর পানি বাড়তে থাকে। ঝড়ের কবলে পড়ে সবকিছু উড়ে গেছে। টাকা-পয়সা সবকিছু ভেসে গেছে। ছেলেমেয়ে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে আছি। কিভাবে চলবো, আমাদের ৯ জনের সংসার।

ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে জেলে পাড়ায় এখনো পর্যন্ত কোন সহায়তা পায়নি তারা। পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে। তাদের সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বরত কর্মকর্তা জানান, জেলে পল্লির ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সহায়তা দেওয়া হবে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত হয়েছে চট্টগ্রামের ৬৬ ইউনিয়নের ৫ হাজার ৮৫৪ ঘর। এর মধ্যে আংশিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে ৫ হাজার ৭৬০টি এবং সম্পূর্ণ বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে প্রায় ৯৪টি।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলার মোট ৬৬টি ইউনিয়নের ৫৮ হাজার ৫৭২ জন মানুষ দুর্যোগের কবলে পড়ে। এছাড়া দুর্গতদের মাঝে খাবার বিতরণ করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটরা। এর মধ্যে চাল দেওয়া হয়েছে ২১ মেট্রিক টন, শুকনো খাবার ৮শ প্যাকেট, ড্রাই কেক ৩৭৫ কার্টুন এবং বিস্কুট ৫২০ প্যাকেট। একইসঙ্গে দুর্যোগে পড়া মানুষদের ১৫ হাজার পোশাক দেওয়া হয়েছে।