চুল গজাতে পিআরপি থেরাপির কার্যকারিতা

বর্তমানে চুল পড়ে যাওয়া ব্যক্তিদের নতুন চুল গজানোর জন্য পিআরপি থেরাপি বেশ কার্যকর ও জনপ্রিয় পদ্ধতি। মূলত চুল এবং শরীরের বেশ কিছু জায়গায় বিশেষ করে পা, হাঁটু, মেরুদণ্ডে পিআরপি থেরাপির ব্যবহার হয়ে থাকে। এই থেরাপিটি চুল গজানোর ক্ষেত্রেও বেশ কার্যকর। মানুষের রক্তেই রয়েছে রোগের সমাধান এই বিষয়টি থেকেই আবিষ্কৃত হয়েছে এই থেরাপি। চিকিৎসাটি বাংলাদেশে প্রায় ১০ বছর ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে এবং কার্যকারিতার কারণে বর্তমানে জনপ্রিয় চিকিৎসা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এবং বিশ্বের অনেক দেশে এর রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। চজচ অর্থ হলো Platelet Rich Plasma যা রক্তের বিশেষ প্রক্রিয়াজাত অণুচক্রিকা সমৃদ্ধ রক্তরস। এতে যে সব Growth Factor থাকে তা চুল পড়া সহ চুলের বৃদ্ধি ও উন্নতি সাধন করে। রোগীকে চজচ থেরাপি দেয়ার পূর্বে প্রয়োজনীয় স্থানে জীবাণুমুক্ত করে খড়পধষ অবশকারী ক্রিম লাগানো হয়। খুব চিকন Insulin Syringe এর মাধ্যমে চজচ বাধাহীনভাবে মাথার ত্বকে পুশ করা হয়।

সাধারণত কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা অসুবিধা হয় না। কিছুক্ষণ পরই অর্থাৎ ঐ দিনই তাৎক্ষণিকভাবে রোগী বাসায় চলে যেতে পারেন।
এই চিকিৎসায় ২০-৪০ বছর বয়সে এর ফলাফল ভালো পাওয়া যায়। সাধারণত পুরুষ বা মহিলা সকলের চুলের সমস্যার জন্য এ চিকিৎসা প্রযোজ্য। তবে কারও যদি মাথার ত্বকে চুলের গোড়া না থাকে অর্থাৎ দীর্ঘদিন বিনা চিকিৎসায় চুলের গোড়া বিলুপ্ত হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে সাফল্যের সম্ভাবনা কম। সে জন্য একজন চজচ অভিজ্ঞ বিশিষ্ট চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে এই থেরাপি নিতে হবে। একবার চজচ দিতে সাধারণত সময় লাগে ৪৫ মিনিট। প্রথমে চজচ দেয়ার পর পরবর্তী ৩ মাস পর, এরপর ৬ মাস পর এভাবে ৩ বার এ চিকিৎসায় ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। তবে উন্নতি বোঝার জন্য ৩ মাসই যথেষ্ট। চজচ এর পর যেসব স্থানে নতুন চুল গজায় তার স্থায়িত্ব সন্তোষজনক। ভালো ফলাফলের জন্য রোগীকে পরবর্তী বছরে ১ বার করে থেরাপি দিলে ও আনুষঙ্গিক কিছু ওষুধ খাওয়া বা ব্যবহার করলে চুল পড়া সমস্যার ভালো সমাধান সম্ভব।

যেসব রোগীর ক্ষেত্রে চুলের গোড়া থাকে না তাদের জন্য Transplantation করেও PRP দেয়া হয়। থেরাপির চিকিৎসার সঙ্গে লেজার চিকিৎসা ও ডার্মারোলার থেরাপির সমন্বয় ঘটালে ব্যাপক সাফল্য পাওয়া যায়। তবে মাথায় চর্মরোগ থাকলে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। আর চুল পড়ার চিকিৎসায় শুধুমাত্র চজচ অভিজ্ঞ চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সহায়তা অবশ্যই জরুরি। অযথা বিভ্রান্ত না হয়ে আধুনিক এ চিকিৎসা বিষয়ে জানার জন্য ইন্টারনেটের সহায়তাও নিতে পারেন।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক (সাবেক) চর্ম, যৌন ও এলার্জি রোগ বিভাগ (ডিএমসি) চেম্বার-কামাল হেয়ার অ্যান্ড স্কিন সেন্টার বিটিআই সেন্টার গ্রান্ড (২য় তলা) গ্রীন রোড, ফার্মগেট, ঢাকা।