৭৫-এর খুনিদের বিচার বন্ধ করেন জিয়া: সেতুমন্ত্রী

পঁচাত্তরের খুনিদের বিচার বন্ধে জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি অর্ডিনেন্সকে সংবিধানের ৫ম সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শনিবার জাতীয় জাদুঘরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব মিলনায়তনে ফজিলাতুননেছা মুজিবের ৯২তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে ‘প্রেরণাদায়িনী মা’ শীর্ষক শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।

আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আব্দুল খালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা। সম্মানিত অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও পরিবেশবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমাদ এবং চিত্রশিল্পী হাশেম খান।

অনুষ্ঠানে বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি আজ একটা প্রশ্ন করব, আগস্ট এলে এ প্রশ্ন অনেকবার করেছি। জবাব পাইনি। ১৫ আগস্টের ঘটনায় জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলেন। খুনিদের নিরাপদে বিদেশে পাঠানো, বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি কে দিয়েছিলেন-জিয়াউর রহমান।

তিনি বলেন, পলাশীর মীরজাফরের জায়গায় খন্দকার মোশতাক। সেনাপতি ইয়ার লতিফ, রায় দুর্লভের জায়গায় জিয়াউর রহমান। কেন পঁচাত্তরের খুনিদের পুরস্কৃত করা হলো-এ প্রশ্নের জবাব বিএনপি কোনোদিনও দিতে পারবে না। খুনিদের বিচার বন্ধে ইনডেমনিটি অর্ডিনেন্সকে সংবিধানের ৫ম সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন তাদের নেতা।

সেতুমন্ত্রী বলেন, বন্দুকের নল থেকে যাদের জন্ম, বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যের মাস্টারমাইন্ড যারা, তারাই ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে প্রাইম টার্গেট করে গ্রেনেড হামলা করেছিল। কীভাবে এদের সঙ্গে রাজনীতি করব। দেওয়াল তো তারাই তুলেছেন। ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, পৃথিবীতে অনেক রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, যার কোনোটিতেই নেতার স্ত্রীকে হত্যা করা হয়নি। এমনকি কারবালার প্রান্তরেও নারী হত্যা হয়নি। মানবসভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে নৃশংস ও বর্বর হত্যাকাণ্ড ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট। বেগম মুজিব তো সক্রিয় রাজনীতি করেননি। তাহলে কেন এই অবলা নারী হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন? এ সময় অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমাদ বলেন, বঙ্গমাতাকে আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি। রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়ে তিনি ঠিকই বিচলিত হতেন, কিন্তু বাইরে সেটা প্রকাশ করতেন না।

একদম ঠান্ডা মেজাজের মানুষ ছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারে থাকতেন, তখন একদিকে যেমন তিনি বাড়ি সামলানোর কাজ করেছেন, অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুর মামলার আইনজীবী সামলানো, নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কাজটিও করতেন। তবে তার একটি বিশেষত্ব ছিল তিনি সব সময়ই ঠান্ডামাথায় কাজগুলো করতেন।

সভাপতির বক্তব্যে ড. আব্দুল খালেক বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে যেমন বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হতো না, ঠিক তেমনই বেগম মুজিবের জন্ম না হলে শেখ মুজিব, ‘মুজিব’ হয়ে উঠতেন না। বেগম মুজিব বঙ্গবন্ধুর জীবনের বড় সিদ্ধান্তগুলোয় প্রভাব রেখেছিলেন এবং বঙ্গবন্ধু বেগম মুজিব থেকে পরামর্শ নিতেন।