অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ক্রিকেটের বিকেন্দ্রিকরণ

বাংলাদেশ টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর থেকেই আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গঠন নিয়ে শুরু হয় আলোচনা। এরই মধ্যে বিশ্বের অন্যান্য ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ তা বস্তাবায়ন করলেও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড নানা জটিলতায় বারবারই তা পিছিয়ে দেয়। যদিও ২০০০ এ টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তির পূর্বশর্ত ছিল আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গঠন বা বিকেন্দ্রিকরণ। অবশেষে ২২ বছর অপেক্ষার অবসান ঘটেছে। গতকাল বিসিবি’র গঠনতন্ত্রে সংশোধনের মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থাকে। এবার দেশের ৭টি বিভাগের হাতে থাকবে জেলাগুলোর ক্রিকেটের সবধরনের কার্যক্রম। গতকাল দেশের ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থার বাৎসরিক সাধারণ সভা (এজিএম) শেষে বিসিবি সভাপতি তা নিশ্চিত করেছেন। এই সভাতে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের কাউন্সিলর কমলেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগের ক্লাবগুলোকে কাউন্সিলরশিপের আওয়াতে আনা হয়। এছাড়াও বিসিবি’র দু’টি নতুন স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠনও অনুমোদন দেয়া হয়। আঞ্চলিক ক্রিকেট নিয়ে বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘আমরা আজকের সভাতে গঠনতন্ত্রে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার বিষয়টি সম্পৃক্ত করেছি।

এখন আর তা গঠনে বাধা রইলো না। আশা করি বিসিবি’র আগামী বোর্ড সভার আগেই আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা যাত্রা করতে পারবে। এটির কার্যক্রম পরিচালনায় একটা গাইডলাইন বিসিবি থেকে দেয়া হবে। যে সব বিভাগ ছোট, তাদের জন্য কমিটিতে ১১ জন, বড় বিভাগগুলোর প্রতিটির জন্য ১৭ জন কাউন্সিলর রাখার কথা বলা হয়েছে।’ অঞ্চলিক ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) থেকে শুরু। ২০১৭ এবং ২০২১ সালে বিসিবি’র এজিএম-এ আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার খসড়া গঠনতন্ত্র উঠেছে আলোচনায়। এবার আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গঠনের পর প্রতিটি বিভাগে তার কার্যক্রম শুরু করতে বাধা নেই। প্রয়োজনে জেলা এবং বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা জেলাও বিভাগীয় ক্রিকেট সংস্থা এই সংগঠন বলে গণ্য হবে। বিসিবি’র গঠনতন্ত্রের ৯.১(ক) ধারায় যুক্ত করা হয়েছে এই ধারাটি। তারপরও আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার কাঠামো এবং কর্মপরিধি চূড়ান্ত করার আগেই তা নির্ধারণের জন্য বিসিবি’র পরিচালনা পরিষদের উপর ন্যস্ত করেছে সাধারণ পরিষদ। এ বিষয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘রিজিওনাল ক্রিকেট এসোসিয়েশন গঠনে আপাতত বিসিবি প্রতিটি বিভাগের জন্য অস্থায়ী কমিটি তৈরি করে দিবে। পরবর্তীতে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত হবে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা। কমিটিতে নির্বাচিত ছড়াও বিসিবি মনোনীত সদস্য রাখা হবে।’ অন্যদিকে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট সুপার লীগে খেলা দলগুলোর জন্য ২টি করে কাউন্সিরশিপ রাখা হয়েছিল। তবে এবার তা কমিয়ে একটি করে করা হয়েছে। দবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগের ক্লাবগুলোকে আনা হয়েছে কাউন্সিলরশিপের আওতাতে। কেন সুপার লীগে কাউন্সির বাড়ানো হয়েছিল আবার তা কমানো হলো তা নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেন, ‘বহুবছর ধরে ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিসিবিতে আসার আগে আবাহনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। আসলে তখন থেকে দেখে এসেছি প্রিমিয়ার ডিভিশনে দুইটা ক্লাবই ছিল, একটা হচ্ছে আবাহনী আর মোহামেডান। ক্লাব অনেক ছিল, যারা কিনা চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য লড়াই করতো। সাধারণত আবাহনী ও মোহামেডানই শক্তিশালী দল গঠন করতো। কারণ তারা চ্যাম্পিয়ন হতে চায়। আমাদের প্রধান অবজেকটিভই ছিল আরও অনেক ক্লাব উৎসাহিত হোক চ্যাম্পিয়নশিপ লড়াইয়ের জন্য। সেজন্য প্রণোদনা হিসেবে এটা (দু’টি কাউন্সিলর) দেয়া হয়েছিল। এখান সেখানে সবাই পাবে একটি করে। অন্যদিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগে কাউন্সিলর ছিলনা এখন তাদের সেটি দেয়া হয়েছে। এত করে এ নিয়ে আর কোন প্রতিযোগিতা থাকবে না। ক্রিকেট হবে স্বচ্ছ।’