বরফে ঢাকা অ্যান্টার্কটিকা হঠাৎ গোলাপি আভায় পরিপূর্ণ

সাদা বরফে ঢাকা আন্টার্কটিকা এখন গোলাপি রঙের আভায় পরিপূর্ণ। টোঙ্গা অগ্ন্যুৎপাতের পরবর্তী প্রভাব হিসেবেই এই রঙের বন্যা বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। গত মাসে নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া জুড়ে জ্বলন্ত আকাশ দেখতে পেয়েছিলেন স্থানীয়রা। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন , জানুয়ারিতে হুঙ্গা টোঙ্গা-হুঙ্গা হাপাই আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের পরে অ্যারোসোলের একটি স্পাইক স্ট্রাটোস্ফিয়ারে আঘাত করায় আকাশকে উজ্জ্বল রঙের দেখাচ্ছিল। অ্যান্টার্কটিকায় কর্মরত বিজ্ঞানীরা নিউজিল্যান্ডের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওয়াটার অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিকস (নিওয়া) এ ঘটনাটি রিপোর্ট করেছেন যখন বুঝতে পেরেছিলেন যে বিশ্বের দক্ষিণতম অঞ্চলে একই জিনিস ঘটছে। নিউজিল্যান্ডের একজন বিজ্ঞান প্রযুক্তিবিদ স্টুয়ার্ট শ জানাচ্ছেন , ” মধ্যাহ্নের কাছাকাছি একটি সময় যাকে ‘নটিক্যাল গোধূলি’ বলে সেইটুকু সময় বাদ দিলে সাধারণত শীতের মাঝামাঝি অ্যান্টার্কটিকা প্রায় অবিচ্ছিন্নভাবে অন্ধকার থাকে। কিন্তু এই বছর, গোটা অ্যান্টার্কটিকা জুড়ে রঙের ছড়াছড়ি। তাই বেশিরভাগ মানুষ ক্যামেরা নিয়ে বাইরে ছুটে বেড়াচ্ছেন দুর্দান্ত রঙগুলি ক্যামেরাবন্দি করার জন্য। ”স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী অ্যান্টার্কটিকার উপরে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে প্রচুর পরিমাণে অ্যারোসল রয়েছে, যা অগ্ন্যুৎপাতের আগে সেখানে ছিল না। আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের পর স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারিক অ্যারোসলগুলি কয়েক মাস ধরে পৃথিবীকে সঞ্চালন করতে পারে, যার জেরে সূর্য ডুবে যাওয়ার সাথে সাথে বা দিগন্তের কাছে পৌঁছানোর সাথে সাথে আলো ছড়িয়ে পড়ে এবং গোলাপী, নীল, বেগুনি রঙের আভা ছড়িয়ে পড়ে আকাশে ।

অগ্ন্যুৎপাতের ফলে গোধূলির যে রং তাকে “আফটারগ্লো” বলা হয়, এই রঙ এবং তীব্রতা স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে আলো পৌঁছানোর পথে ধোঁয়াশা এবং মেঘের পরিমাণের উপর নির্ভর করে। নিউজিল্যান্ডের প্রধান বিজ্ঞান উপদেষ্টা জর্ডি হেন্ডরিক্স বলেছেন, অ্যান্টার্কটিকা টোঙ্গা থেকে প্রায় ৭,০০০ কিমি দূরে অবস্থিত হলেও রঙের বন্যা ছড়িয়ে পড়েছে বরফে ঢাকা অ্যান্টার্কটিকায়। দেখে মনে হবে কেউ যেন রং তুলি দিয়ে সাজিয়ে দিয়েছে গোটা দেশটিকে।