আজ জিতলেই সিরিজ বাংলাদেশের

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের পর টাইগার ক্রিকেট ডুবে ছিল ভীষণ লজ্জায়। ক্রিকেট বোদ্ধা থেকে ভক্তকুলে চলছিল তীব্র আলোচনা-সমালোচনা। তবে সেই লজ্জার হাত থেকে রক্ষা করেছে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয়। আজ দ্বিতীয়টিতে জিতলেই সিরিজ জয় নিশ্চিত। দুটি সিরিজ হারের পর ওয়ানডে দল যেভাবে খেলেছে তাতে সম্পষ্ট টাইগারদের আত্মবিশ্বাসে চির ধরেনি একটুও। অবশ্য এই ফরম্যাটে বিশ্বের যেকোনো দলের জন্য ভয়ঙ্কর বাংলাদেশ। যদিও ওয়ানডে সিরিজটি আইসিসির সুপার লীগের অংশ নয়। তাই এখানে হার-জিতে পয়েন্ট তালিকায় কোনো প্রভাব পড়বে না। তবে বাড়বে আত্মবিশ্বাস, সেই সঙ্গে বিদেশের মাটিতে হবে অষ্টম সিরিজ জয়ের প্রাপ্তি। গায়ানাতে প্রথম ম্যাচে ক্যারিবীয়দের বল হাতে ১৪৯ রানে বেঁধে রেখে ৬ উইকেটের জয় তুলে নেয় তামিম ইকবালের দল।

তবে এমন জয়ের পরও খুব খুশি নন অধিনায়ক। কারণ ব্যাটিং-বোলিং ভালো হলেও ফিল্ডিং ছিল হতাশ করার মতো। তামিম বলেন, ‘আরও অনেক জায়গায় আমাদের উন্নতি করতে হবে। আরও একটি ভালো দলের সঙ্গে খেলা হলে এই ক্যাচগুলোর অনেক চড়া মূল্য দিতে হতে পারে। আগেও দুর্ভাবনার কথা বলেছি যে, এটা বন্ধ হতে হবে বা কমে আসতে হবে। কারণ চার-চারটা ক্যাচ ছেড়ে এভাবে হয় না। আমরা হয়তো ১১৫ রান তাড়া করতাম ক্যাচ না ছাড়লে।’ প্রথম ম্যাচে ভেজা আউটফিল্ডের কারণে ম্যাচ শুরু হতে দেরি হয়। তাই ম্যাচের দৈর্ঘ্য নেমে আসে ৪১ ওভারে। শরিফুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নির্ধারিত ৪১ ওভারে স্বাগতিকরা ৯ উইকেটে করে ১৪৯ রান। সহজ লক্ষ্য ৩১.৫ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে টপকে যায় বাংলাদেশ। এদিন বল হাতে দুর্দান্ত ছিলেন বোলাররা। তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম নেন ৪ উইকেট। তাকে যোগ্য সহায়তা দিয়েছেন স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। তার শিকার তিনটি । অভিষিক্ত নাসুম আহমেদ উইকেট না পেলেও ৮ ওভারে খরচ করেন মাত্র ১৬ রান। মোস্তাফিজুর রহমানের শিকার এক উইকেট ও তাসকিন আহমদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং গায়ানার প্রথম ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে একেবারেই সুবিধা করতে দেয়নি। আর ফিল্ডিংটা বাজে না হলে থামানো যেত আরো আগেই। ১১০ রানে ৯ উইকেট হারানোর পর ক্রিজে ছিল না ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোনো স্বীকৃত ব্যাটার। দ্রুতই ফেরানো যেত ২১ রান করা অ্যান্ডারসন ফিলিপকে। ব্যক্তিগত ২ রানে নিজের বলে তার ক্যাচ ছাড়েন মোস্তাফিজ। দলীয় রান তখন ১১২। এরপর জাইডেন সিলস ও ফিলিপের আরও দুটি ক্যাচ মিস করে বাংলাদেশ। সেই সুযোগ নিয়ে শেষ উইকেট জুটিতে যোগ হয় ৩৯ রান। শেষ পর্যন্ত ফিলিপ ২১ ও সিলস ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন। যতটা জানা গেছে আজ একাদশে কোনো পরিবর্তন আসবে না। এনামুল হক বিজয় টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি খেললেও তার জায়গা হয়নি ওয়ানডে ফরম্যাটে। আজও একাদশের বাইরে থাকার সম্ভাবনা তার। প্রথম ওয়ানডেতে একাদশে জায়গা পান টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে টানা ব্যর্থ নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে প্রথম ওয়ানডেতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৭ রান আসে শান্তর ব্যাট থেকে। টাইগার অধিনায়ক তামিম শান্তকে খেলানোর সিদ্ধান্তই সঠিক মানছেন। প্রথম ওয়ানডে শেষে তিনি বলেন, ‘আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এনামুল বিজয় অবশ্যই দারুণ একটি ঘরোয়া মৌসুম কাটিয়েছে। মাত্র দলে এসেছে। আজকে যদি শান্তর জায়গায় বিজয়কে নিতাম, তাহলে শান্ত যে গত তিন সিরিজ ধরে দলে ছিল, ওই নির্বাচনটা ছিল ভুল। শান্তকে কেন তিন সিরিজ ধরে নিয়ে আসছি? যখনই সুযোগ আসবে, শান্তরই এগিয়ে থাকার কথা বিজয়ের চেয়ে।’ সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ দল খেলেছে ৮০ ওয়ানডে সিরিজ, সেখানে জয় এসেছে ৩০টিতে। ড্রও আছে ৪টি। অন্যদিকে বিদেশের মাটিতে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষেই প্রথম সিরিজ জিতে ইতিহাস গড়েছিল টাইগাররা। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশের বাইরে ৭টি সিরিজ জিতেছে টাইগারররা। এর মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে দুটি। প্রথম জয় এসেছিল ২০০৯-এ ও শেষটি ২০১৮ তে গায়ানতেই। শেষবার সিরিজ জিতেছিল ২-১ এ।