টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভোগান্তির আশঙ্কা লিটনের

সামনেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ায় বসবে চার-ছক্কার যজ্ঞ। কিন্তু আসন্ন টুর্নামেন্টের জন্য কতটুকু প্রস্তুত বাংলাদেশ? কুড়ি ওভারের ফরম্যাটে যে মোটেও ছন্দে নেই মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দল। শেষ ১৩ ম্যাচে টাইগারদের জয় মাত্র একটিতে। বৃহস্পতিবার গায়ানায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী টি-টোয়েন্টিতে হারের পর লিটন দাসের কণ্ঠে বাজলো হতাশার সুর। টাইগার ব্যাটারের সরল স্বীকারোক্তি টি-টোয়েন্টিতে ভালো দলগুলোর চেয়ে অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ। বিশেষত, ‘পাওয়ার ক্রিকেটে’ ঘাটতি আছে। যে কারণে বিশ্বকাপে ভোগান্তির আশঙ্কা লিটনের। ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে টাইগারদের ব্যাটিং ব্যর্থতা চোখে লেগেছিল। এবার লিটন-আফিফরা মোটামুটি ভালো পারফরম্যান্স দেখালেও ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি মোস্তাফিজ-শরিফুলরা।

১৬৪ রানের টার্গেট দিয়েও লড়াই জমাতে পারেনি টাইগার বোলাররা। ১০ বল হাতে রেখেই ৫ উইকেটের জয় তুলে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদসম্মেলনে লিটন বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভালো দলগুলোর চেয়ে অনেক পিছিয়ে আমরা। আমাদের অনেক জায়গায় কাজ করার আছে।’ সিরিজ শুরুর আগে টাইগারদের ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স বলেছিলেন, জাতিগতভাবে বাংলাদেশি শারীরিকভাবে অন্যান্য (উদাহরণস্বরূপ ইংলিশ, ক্যারিবীয়দের) দেশের চেয়ে দুর্বল। যেকারণে টাইগাররা পাওয়ার হিটিংটা ঠিকঠাক পারে না। লিটনের কণ্ঠেও একই সুর, ‘বিশেষ করে আমরা পাওয়ার ক্রিকেট খেলতে পারি না। অনেকে বলে টি-টোয়েন্টি স্কিলের খেলা টেকনিক-ট্যাকটিকের খেলা। তবে আমার মনে হয়, অনেক সময় পাওয়ার হিটিংটাও দরকার পড়ে। এ জিনিসটায় আমরা অনেক পিছিয়ে।’ লিটন ৪৯ রান করলেও বল খেলেছেন ৪১টি। ৩ চারের সঙ্গে ছক্কা ২টি। আফিফ হোসেন ধ্রুব ৩৮ বলে করেন ৫০ রান। সমান দুটি করে চার-ছয় হাঁকান আফিফ। লিটনের (১১৯.৫১) তুলনায় তার স্ট্রাইকরেটও (১৩১.৫৮) ভালো। অধিনায়ক মাহামুদুল্লা রিয়াদের কাছে ঝড়ো ইনিংসের প্রত্যাশা থাকলেও তিনি হতাশ করেছেন আবারও। ২০ বলে করেন ২২ রান। গায়ানার উইকেটে রান ছিল। আরেকটু ভালো ব্যাটিং করতে পারলে দলীয় সংগ্রহটা অনায়েসেই ১৮০ ছাড়াতে পারতো। লিটন বলেন, ‘আমরা ভালো ব্যাটিং করিনি। প্রথম ম্যাচেও না, দ্বিতীয় ম্যাচেও না। যে কন্ডিশনে আমরা খেলেছিলাম, ব্যাটিং সহায়কই ছিল।’ তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ওপেনিংয়ে নেমে ৪১ বলে ৪৯ রান করেন লিটন। আরেক ওপেনার এনামুল হক বিজয় ১০ রানে আউট হলে ভাঙে ওপেনিং জুটি। সিরিজের বাকি দুই ম্যাচে উদ্বোধনী জুটির পারফরম্যান্স ছিল আরও বাজে। ডমিনিকায় বৃষ্টিবিঘ্নিত পরিত্যক্ত ম্যাচে বাংলাদেশের ওপেনিং পার্টনারশিপ ভাঙে মাত্র ২ রানে। দ্বিতীয় ম্যাচে ভাঙে ৮ রানে। লিটন বলেন, ‘আমরা যদি ওপেনিং থেকে দায়িত্বটা পালন করতে পারতাম, তাহলে পরের ব্যাটাররা মন খুলে খেলতে পারতো। আমার মনে হয়, আমাদের দুই-তিনটি ইনিংসের ব্যর্থতার কারণেই জিনিসটা ওভাবে গুছিয়ে নেয়া যায়নি। আমার কাছে (ব্যর্থতার কারণ) এ জিনিসটিই মনে হয়েছে।’ অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। মহাযজ্ঞের আগে টাইগারদের অনুজ্জ্বল পারফরম্যান্স যথেষ্ট দুশ্চিন্তার কারণ। লিটন বলেন, ‘বিশ্বকাপে আমরা যেখানে (অস্ট্রেলিয়া) খেলবো, মাঠ অনেক বড় থাকবে। এ জিনিসটা আমাদের ভোগাবে। আমরা যত তাড়াতাড়ি পারবো, যত ম্যাচ খেলবো, অনুশীলন করে নিজেদের উন্নতি করতে পারি, তাহলে ভালো আত্মবিশ্বাস নিয়ে যেতে পারবো (বিশ্বকাপ খেলতে)।