উগ্রবাদ প্রতিহতে নাগরিকদের ভূমিকা বিষয়ক নাগরিক সভা

সাধারন জনগনের সহায়তায় আমরা ( আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) দেশে উগ্রবাদ এবং সহিংস উগ্রবাদ প্রতিহতে মাঠপর্যায়ে কাজকর ভূমিকা পালন করছি- চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) পশ্চিম বিভাগ অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার পংকজ দত্ত প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্যে বলেন। বৃহস্পতিবার (১৬জুন) চট্টগ্রাম নগরীর হলি ফেইম রেষ্টুরেন্টে দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পিস প্রকল্পের আওতায় ”উগ্রবাদ প্রতিহতে নাগরিকদের ভূমিকা বিষয়ক নাগরিক সভা” আয়োজন করা হয়।
নাগরিক সভায় প্যানেল আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সিএমপির পশ্চিম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো: আব্দুল ওয়ারীশ, চসিক ১০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সাবেক প্যানেল মেয়র  ড. নিছার উদ্দীন, হযরত শাহ সূফী মঈনুদ্দিন শাহ (রহঃ) দাখিল মাদরাসা সুপারটেন্ডেন্ট মুহাম্মদ আলী নেওয়াজ, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন, (চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর)। সভাটি মডেরট করেন, দি এশিয়া ফাউন্ডশনের পিস প্রকল্পের সিনিয়ার প্রোগ্রাম অফিসার মো জয়নাল আবেদীন।
প্রধান অতিথি পংকজ দত্ত আরো বলেন, পুলিশ সদস্যরা আপনাদের (সাধারন জনগন) সহায়তায় জঙ্গীবাদ নিরসনে কাজ করছে। আমার মাঠপর্যায়ের বিভিন্ন পর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করে আমরা যাচাই বাছাই করি, এবং সামাজিক মাধ্যমে তার কার্যকম, কি ধরনের তথ্য সে সরবরাহ করছে তা আমরা যাচাই করি এবং তার উপর ভিত্তি করে সে যদি অপরাধী হয় তাহলে তাকে আমরা বাংলাদেশের আইন অনুসারে আইনের আওতায় নিয়ে আসি এবং এই ভাবে আমরা যারা উগ্রবাদ ছড়ায় বা সম্পৃক্ত থাকে তাদের নির্মূল করছে বাংলাদেশ পুলিশ।
কাউন্সিলর  ড. নিছার উদ্দিন মঞ্জ বলেন, যুবক সম্প্রদায় সবসময় কৌতহল থাকে, এ্যাডেভেঞ্চার মূলক কাজ করার মানষিকতা পোষন করে। তারা নতুন কিছুর মোহে পড়ে নিজের অজানতে উগ্রবাদে জড়িয়ে পরে। রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গ সহ সমাজের নানান স্তরের মানুষ নানান ভাবে যুবক সম্প্রদায়ের মধ্যে উগ্রবাদ ছড়াচ্ছে। যুবরা সমাজে বিদ্যমান নানান ধরনের বিভিন্ন লোভনীয় অফার এর মোহে পড়ে ভূল পথে গিয়ে সমাজে সহিংস উগ্রবাদ সৃষ্টি করছে। আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে, যারা ধর্ম ব্যবসা করছে তাদের বিষয়ে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। আমরা যারা জনপ্রতিনিধি আছি, যারা ধর্মীয় নেত্রীবৃন্দ আছেন, প্রশাসন সহ এলাকার সচেতন মানুষ যদি কাজ করে তাহলে একটি সুশীল এবং ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ গড়তে সহায়ক হবে। সর্বোপরি, পুলিশের শাসন এবং জন প্রতিনিধেদের সততা, সহমর্মিতার যৌথ সমন্বয় ছাড়া সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় এবং উগ্রবাদ নিরসন করা সম্ভব নয়।
সুপারটেন্ডেট মুহাম্মদ আলী নেওয়াজ বলেন, আমাদের সমাজে ধর্ম নিয়ে নানান বিভাজন বিদ্যমান। ধর্মীয় নেতারা বিভাজিত হয়ে নানান রকম বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে এর মূল কারন হল যারা ধর্মীয় সভা সমাবেশে বক্তব্য দেয় তাদের অধিকাংশই কুরআন এবং হাদিস সঠিকভাবে পড়ে না। নিজের মন গড়া বক্তব্য দিয়ে সমাজের মানুষকে উগ্রবাদের দিকে ধাবিত করছে। ধর্মীয় বক্তব্য শুনেই আমাদের কোন সহিংস আচরন করা ঠিক নয়। আমাদের যাচাই বাছাই করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এবং আমাদেরকে আইন শৃঙ্খলা বাহীনিকে সার্বিক সহায়তা করতে কবে।
 আলহাজ্ব মো: জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার কি আমাদের সন্তানকে পারিবারিকভাবে কতটুকু সময় দিচ্ছি? আমরা আমাদের নিজেদের সম্পদ বৃদ্ধিতেই শুধু মনোযোগ দিচ্ছি ‍কিন্তু সন্তান স্কুলে গেল কিনা, সময় মত স্কুল থেকে ফিরছে কিনা? সব কিছু আমাদের নজর রাখতে হবে । কারন বাংলাদেশে উগ্রবাদে যারা জড়িত তাদের অধিকাংশই উচ্চবিত্ত পরিবারের। আমাদের উচিত স্কুল পর্যায়ে মটিভেশন কার্যক্রম দপরিচালনা করা যাতে করে শিক্ষার্থীদের মদ্যে মানবিকতা বোধ তৈরি হবে এবং উগ্রবাদ নিরসন সম্ভব হবে।
নাগরিক সভায়, সিএমপির ১০ নং ওয়ার্ডের কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সদস্য, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, জনপ্রতিনিধি এবং এশিয়া ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি সহ প্রায় ৯০ জন উপস্থিত ছিলেন।