নমুনায় দুইপাড়ে আশার আলো

নমুনা ডিমে দুইপাড়ে আশার আলোয় বুক বেধেছেন ডিম সংগ্রহে বংশ পরম্পরায় অভিজ্ঞ জেলেরা, মুখে ফুটেছে হাসির ছোঁয়া।

রোববার সকাল ৭টার দিকে জোয়ারের সময় নদীর গড়দুয়ারা থেকে মদুনাঘাট এলাকায় রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউশ জাতের মা মাছ ‘নমুনা ডিম’ ছেড়েছে। নদীর দুইপাড়ে মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহে বংশ পরম্পরায় অভিজ্ঞ জেলেরা অপেক্ষা করছেন।

শনিবার (৪ মে) রাতে ও রোববার (৫ মে) সকালে গড়দুয়ারা থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত এলাকায় হাটহাজারী ও রাউজানের মাছের ডিম সংগ্রহকারীরা ‘নমুনা ডিম’ পেয়েছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন বলেন, উত্তর মাদার্শা এলাকার ডিম সংগ্রহকারীরা জানিয়েছেন তারা মা-মাছের আনাগোনা দেখছেন এবং অল্প নমুনা ডিম সংগ্রহ করতে পেরেছেন। যেহেতু নমুনা ডিম ছেড়েছে মা-মাছ, সেহেতু এসব মাছের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ যাতে মা-মাছ শিকার করতে না পারে সেদিকে কঠোর নজরদারি রাখা হয়েছে। ডিম থেকে রেণু ও পোনা তৈরির জন্য হ্যাচারিগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আজহারুল আলম জানান, উভয় উপজেলায় ৫টি হ্যাচারির ১৪৯টি কুয়া ছাড়াও ব্যক্তি উদ্যোগে তৈরি করা ১৬০টির মতো মাটির কুয়া ডিম পরিষ্ফুটনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

হালদা বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনজুরুল কিবরীয়া বাংলানিউজকে বলেন, শনিবার রাতে নমুনা ডিম ছাড়ার খবর পেয়েছি। রোববার (৫ মে) বিকেলে আমরা হালদা পরিদর্শন করবো।

তিনি বলেন, নমুনা ডিম ছাড়ার অর্থ হচ্ছে মা মাছ প্রস্তুত। মাছগুলো পরীক্ষা করে দেখছে ডিম ছাড়ার পরিবেশ, প্যারামিটারগুলো ঠিক আছে কিনা। যদি সব অনুকূলে থাকে তবে ডিম ছাড়বে। এদিকে জেলেরাও জাল, বালতি, নৌকা নিয়ে প্রস্তুত।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রাকৃতিক বিষয়ে কারও নিয়ন্ত্রণ নেই। এমনও হতে পারে জোয়ারের সময় ডিম ছেড়ে দেবে। সবকিছু নির্ভর করছে সময়ের ওপর।

উল্লেখ্য, এর আগে নদীতে ২০১৮ সালের ২০এপ্রিল, ২০১৭ সালের ২২এপ্রিল, ২০১৬ সালের ২মে, ২০১৫ সালের ২১এপ্রিল ও ১২জুন, ২০১৪ সালের ১মে, ২০১৩ সালের ৫মে, ২০১২ সালে ৮এপ্রিল, ২০১১ সালে ১৮এপ্রিল, ২০১০ সালে ২২মে ও ২০০৯ সালে ২৫মে ডিম ছাড়ে মা মাছ।

সরেজমিনে নদীর অঙ্কুরীঘোনা, গড়দুয়ারা নোয়া হাট, আজিমের ঘাট, সিপাহীর ঘাট, আমতোয়া, মাছুয়াঘোনা,বারিয়াঘোনা এলাকায় শত শত ডিম আহরণকারীকে নৌকা ও ডিম সংগ্রহ করার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে অবস্থান করতে দেখা গেছে।