কেজি ওজনের ‘বিজয়ের মহামুকুট’

শনিবারের অনুষ্ঠানে ৬৬ বছর বয়সী রাজার হাতে সাত দশমিক তিন কেজি ওজনের ‘বিজয়ের মহামুকুট’ তুলে দেওয়া হলে নিজেই তা মাথায় পরেন ভাজিরালংকর্ন, জানিয়েছে বিবিসি।

এরপর ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে রাজত্ব করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রথম রাজকীয় দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

স্থানীয় সময় সকাল ১০টা নয় মিনিটে ‘সুপ্রসন্ন সময়ে’ রাজার রাজ্যাভিষেকের আচার শুরু হয়। এ সময় তার পোশাক পাল্টে তাকে সাদা পোশাক পরানো হয় এবং দেশের শতাধিক স্থান থেকে সংগ্রহ করা জল দিয়ে তাকে বিশুদ্ধ করা হয়।

অনুষ্ঠানে তিনি রাজপদের প্রতীক পাঁচটি রাজকীয় সম্পদ গ্রহণ করছেন যার মধ্যে মহামুকুটটিও আছে।

শনিবার প্রধান ব্রাহ্মণ ও বৌদ্ধ আচারগুলো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ অভিষেক অনুষ্ঠান সোমবার পর্যন্ত চলবে।

৭০ বছর থাইল্যান্ডের সিংহাসনের আসীন থাকার পর ২০১৬ সালের অক্টোবরে রাজা ভূমিবল আদুলিয়াদেজ মৃত্যুবরণ করেন। তারপর সাংবিধানিকভাবে রাজা হন তার ছেলে ভাজিরালংকর্ন। কিন্তু দেশটির ঐতিহ্য অনুসারে রাজ্যাভিষেক না হলে ভাজিরালংকর্ন মর্ত্যে স্বর্গের প্রতিনিধি এবং বৌদ্ধ ধর্মের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বিবেচিত হতেন না।

রানি সিরিকিত ও ভূমিবলের দ্বিতীয় সন্তান কিন্তু প্রথম পুত্র ভাজিরালংকর্ন। ১৯৭২ সালে মুকুটধারী যুবরাজ ও সিংহাসনের আনুষ্ঠানিক উত্তরাধিকার হিসেবে অভিষেক হয় তার। তিনি দশম রামা বা চাকরি রাজবংশের দশম রাজা বলেও পরিচিত।

যুক্তরাজ্যে ও অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করা ভাজিরালংকর্ন ক্যানবেরার মিলিটারি কলেজ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। থাইল্যান্ডের সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা ছিলেন তিনি এবং বেসামরিক ও যুদ্ধবিমানের পাইলটের যোগ্যতাও অর্জন করেন তিনি।

তিন দিন আগে সবাইকে বিস্মিত করা এক ঘোষণায় রাজপ্রাসাদ জানায়, রাজা তার দীর্ঘদিনের সঙ্গী ও তার ব্যক্তিগত দেহরক্ষী দলের ডেপুটি কমান্ডারকে বিয়ে করেছেন এবং নতুন স্ত্রীকে রানির মর্যাদা দিয়েছেন। রানি সুথিদা তার চতুর্থ স্ত্রী।

থাইল্যান্ডের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই রাজা হিসেবে অভিষেক হচ্ছে ভাজিরালংকর্নের। ২০১৪ সালে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেনাবাহিনী দেশটির ক্ষমতা গ্রহণ করার পর চলতি বছরের ২৪ মার্চ প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু নতুন সরকারের ঘোষণা এখনও দেওয়া হয়নি।

থাইল্যান্ডে সাংবিধানিক রাজতন্ত্র থাকলেও রাজপরিবার জনগণের কাছ থেকে প্রচুর সম্মান পেয়ে থাকেন এবং উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষমতাবান।

‘লেসে মাজেস্তে’ নামক কঠোর আইনের মাধ্যমে থাইল্যান্ডের রাজপরিবারের সমালোচনা নিষিদ্ধ করা আছে।