নতুন করে আসছে মোবাইল ফোন অপারেটরদের ডেটা প্যাকেজ

নতুন করে আসছে মোবাইল ফোন অপারেটরদের ডেটা প্যাকেজ।মোবাইল ফোন অপারেটররা ২৮ এপ্রিল এই আনলিমিডেট ডেটা প্যাকেজ চালু করে। বিটিআরসি কার্যালয়ে এই আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্যাকেজের উদ্বোধন করা হয়।কিন্তু আনলিমিটেড প্যাকেজে ‘আনলিমিটেড’ বললেও শর্তের মধ্যে এক বছর মেয়াদ বেঁধে দেয়া, মাসিক প্যাকেজে দৈনিক ব্যবহারসীমা বেঁধে দেয়া এবং প্যাকেজের দাম নিয়ে অসন্তুষ্ট প্রতিক্রিয়া দেখান গ্রাহকরা ।
শুধু গ্রাহক নয় স্বয়ং টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এসব শর্তে উষ্মা প্রকাশ করেন।মোস্তাফা জব্বার টেকশহর ডটকমকে বলেন, ‘এই উদ্যোগ জনগণের কাছে ইতিবাচক হওয়ার কথা ছিলো অথচ এসব কারণে সেটি নেতিবাচক হয়ে গেছে।’‘আমার কাছেই গ্রহণযোগ্য হয়নি, জনগণের কাছে কীভাবে গ্রহণযোগ্য হবে?’ বলছিলেন তিনি।জনগণের স্বার্থ সবার আগে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বিটিআরসিকে বলা হয়েছে, অপারেটরদের ডেকে এটি আরও গ্রাহকবান্ধব করতে, চিহ্নিত সমস্যাগুলো সমাধান করে নতুন করে ডেটা প্যাকেজ ঘোষণা করতে। এটা জরুরি হিসেবে বলা হয়েছে।’যে তিন সমস্যা চিহ্নিত :প্রথমত, এক বছরের লিমিট। আনলিমিডেট ঘোষণার পরও সেখানে এক বছরের সময় বেঁধে দেয়া।এখানে গ্রামীণফোন আনিলিমিটেড বা মেয়াদবিহীন প্যাকেজে ১০৯৯ টাকায় ১৫ জিবি এবং ৪৯৯ টাকায় ৫ জিবি, রবি ৩১৯ টাকায় ১০ জিবি, বাংলালিংক ৩০৬ টাকায় ৫জিবির প্যাকেজ দেয়। যার মেয়াদ দেয়া হয় ১ বছর।অন্যদিকে টেলিটক ৩০৯ টাকায় ২৬ জিবি এবং ১২৭ টাকায় ৬ জিবির অফার দেয়। শুধু টেলিটকের মেয়াদই সত্যিকার অর্থে আনলিমিটেড বা মেয়াদহীন, এখানে কোনো সময়ের শর্ত নেই।মোস্তাফা জব্বার বলছেন, ‘এই এক বছরের লিমিটের কোনো মূল্য নেই। এটি অযথা করা হয়েছে। কারণ কাউকে যদি ১৫ জিবি ডেটা দেই তাহলে সে তা এক বছরের বেশি ব্যবহার করবে এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। ফলে এই বছরের লিমিট দেয়ার কোনো প্রশ্ন নেই।’তাহলে এই এক বছর সীমা দেয়ার কী যুক্তি ছিলো এমন প্রশ্নে তিনি জানান, ‘অপারেটরদের ব্যাখ্যা যে, সিম যদি এক বছর বন্ধ থাকে ওই সিম আর ব্যবহার করা যায় না।’‘অথচ সিমতো বন্ধ থাকবে না, কেউ টাকা দিয়ে ডেটা কিনে সিম বন্ধ কেনো করবে ?’ বলছিলেন মন্ত্রী।তিনি বলেন, বিষয়টা সোজা, সিম চালু থাকলে ডেটা ব্যবহার হবে। এটা তাদের বোঝার ভুল।দ্বিতীয়ত, মাসিক প্যাকেজের প্রতিদিন ডেটা ব্যবহারের শর্ত।এখানে গ্রামীণফোনের নিরবিচ্ছিন্ন ৩০ দিনের প্যাকেজ ৩৯৯ টাকায় দেয়া হয়েছে, যেখানে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১ জিবি ব্যবহার করা করা যাবে এবং ৩০ দিনের আরেকটি প্যাকেজ ৬৪৯ টাকায় দেয়া হয়েছে, যেখানে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২ জিবি ব্যবহার করতে পারবেন গ্রাহকরা। রবি, বাংলালিংক ও টেলিটকেরও অনুরূপ প্যাকেজ দেয়ার কথা রয়েছে।টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ‘এক মাসের প্যাকেজে যে ১ জিবি বা ২ জিবির যে ডেইলি বার দেয়া হয়েছে এটা তো আনলিমিটেড হয়নি। আমি যদি এক মাসের প্যাকেজই দেই তাহলে বলতে পারবো না যে, ডেইলি ৩০ জিবি ব্যবহার করতে পারবে না। এখানে এই সীমাবদ্ধতা দিয়ে লিমিটেড প্যাকেজই করে দেয়া হলো।’তৃতীয়ত, ডেটার দাম। বিশেষ করে গ্রামীণফোনের প্যাকেজে ডেটার দাম তুলনামূলক বেশি ।মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘ডেটার দামের বিষয়টা রয়েছে। বিশেষ করে জিপির যে দাম, এটা গ্রহণযোগ্য না। জিপি বলেছে, এসএমপির কারণে তারা দাম বেশি রাখার জন্য নির্দেশিত হয়েছে । এখানে কথা হলো, এসএমপি হলেও যে, দাম তিনগুণ বেশি হবে এটা গ্রহণযোগ্য না।’মন্ত্রী বলেন, সবমিলে বেস্ট প্যাকেজ হলো টেলিটকের। অপারেটরটির এ দুটি প্যাকেজ মানুষকে দারুণভাবে আকৃষ্ট করেছে। যা স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে সাড়া পাওয়া দুটি প্যাকেজ। টেলিটকের দূর্বলতা যে তাদের নেটওয়ার্ক সারাদেশে সেভাবে নেই। যদিও ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ টেলিটকের নেটওয়ার্ক শক্তিশালী হয়ে যাবে।মেয়াদ থাকার কারণে গ্রাহকের খরচ বাড়ছিলো কারণ তাকে নতুন নতুন প্যাকেজ কিনতে হতো। আনলিমিটেডে গ্রাহকের খরচ কমছে। মেয়াদহীন ডেটা প্যাকেজ গ্রাহককে ডেটা ব্যবহারে স্বাধীনতা পায় যেখানে নিজেদের সময়, পরিকল্পনা ও প্রয়োজন অনুযায়ী ডেটার যথাযথ ব্যবহার করতে পারে, আনলিমিটেড হওয়ার ডেটা ক্যারি ফরওয়ার্ডের প্রয়োজন হয় না ।