অবশেষে ডেটার মেয়াদ বাড়াচ্ছে মুঠোফোন অপারেটরগুলো

উচ্চমূল্যের ডেটা প্যাকেজ অল্প কয়েক দিনে শেষ করার সীমাবদ্ধতা থেকে বেরিয়ে এসে ডেটার মেয়াদ বাড়াচ্ছে মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। মেয়াদ এক বছর পর্যন্ত নির্ধারণ করে দিয়েছে বিটিআরসি। আজ বৃহস্পতিবার নতুন এ ডেটা প্যাকেজগুলোর উদ্বোধন করে বিটিআরসি।

এ ক্ষেত্রে মুঠোফোন অপারেটরগুলো দুই ধরনের সেবা চালু করছে–আনলিমিটেড (মেয়াদবিহীন) ডেটা প্যাকেজ ও নিরবচ্ছিন্ন মাসিক ইন্টারনেট প্যাকেজ। ডেটা প্যাকেজগুলোকে মেয়াদবিহীন বলা হলেও এগুলোর মেয়াদ মূলত এক বছর পর্যন্ত।

আজ বিটিআরসি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এসব প্যাকেজের উদ্বোধন করেন। নির্ধারিত কয়েকটি প্যাকেজসহ নতুন সেবার নানা দিক তুলে ধরেন বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ।

মেয়াদবিহীন (এক বছর) ডেটা প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে গ্রামীণফোনের ১০৯৯ টাকায় ১৫ জিবি ও ৪৪৯ টাকায় ৫ জিবির প্যাকেজ। রবির ৩১৯ টাকায় ১০ জিবির প্যাক। বাংলালিংকের ৩০৬ টাকায় ৫ জিবির প্যাকেজ। টেলিটকের রয়েছে দুটি বার্ষিক অফার—৩০৯ টাকায় ২৬ জিবি, ১২৭ টাকায় ৬ জিবি।

আর নিরবচ্ছিন্ন মাসিক ইন্টারনেট প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে গ্রামীণফোনের ৩৯৯ টাকার (দৈনিক ১ জিবি পর্যন্ত) ও ৬৪৯ টাকার (দৈনিক ২ জিবি পর্যন্ত) প্যাকেজ। গ্রামীণফোনের ৩৬৫ দিনেরও (প্রতিদিন ১ জিবি পর্যন্ত) প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া রবির ৩০ দিন (দৈনিক সর্বোচ্চ ২ জিবি), বাংলালিংকের ৩০ দিনের (দৈনিক সর্বোচ্চ ২ জিবি) প্যাকেজ রয়েছে। টেলিটকের ৩০ দিনের চারটি প্যাকেজ রয়েছে, এগুলোর ব্যবহার দৈনিক যথাক্রমে ১, ২, ৩ ও ৫ জিবি পর্যন্ত।

শেষের প্যাকেজগুলোর কোনো মূল্য সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়নি। ৩১ মের মধ্যে এসব প্যাকেজ চালুর নির্দেশনা দিয়েছে বিটিআরসি। মো. নাসিম পারভেজ বলেন, এটি শুধু ডেটা সেবা প্রদানের একটি বিশেষ প্যাকেজ। এর অধীন কোনো অফার (ভয়েজ, এসএমএস, সোশ্যাল প্যাক) থাকবে না। তবে আগে মেয়াদ শেষ হওয়ার সময় ডেটা উদ্বৃত্ত থাকলে কিছু ক্ষেত্রে ডেটা ফরোয়ার্ডের (ডেটা ফেরত) সুবিধা থাকলেও নতুন প্যাকেজে সেটা থাকছে না।

প্যাকেজের নামকরণে আনলিমিটেড ও মেয়াদবিহীন শব্দগুলো থাকলেও কারিগরি সীমাবদ্ধতার কারণে সর্বোচ্চ মেয়াদকাল ১ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান মো. নাসিম পারভেজ। তিনি বলেন, নির্দিষ্ট মেয়াদে ডেটা থাকলে তা অপচয় হওয়ার আশঙ্কা থাকে। দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহারের সুযোগ থাকলে এ সমস্যা হবে না।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ইন্টারনেট ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা তুলে নিলে ব্যবহারের স্বাধীনতা থাকে। ইন্টারনেট ব্যবহারে জনগণের স্বাধীনতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। শুধু সেবা সম্প্রসারণ নয়, গুণগত মান ঠিক করতে হবে। বর্তমান সেবায় মানুষ সন্তুষ্ট নয়।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, বিটিআরসি কখনো অপারেটরদের পক্ষে ছিল না, থাকবে না। জনগণ হচ্ছে বিটিআরসির সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। মোবাইল ফোন অপারেটরদের প্রতি বিটিআরসি তৃপ্ত না, বিরক্ত। এর পর থেকে সেবার গুণগত মান ঠিক না হলে অপারেটরদের জরিমানা করা হবে। এখন তাদের চাপ দেওয়া হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে মহাপরিচালক (স্পেকক্ট্রাম) ব্রিগে. জেনা. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জুয়েল, মহাপরিচালক (লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং) আশীষ কুমার কুণ্ডু, মহাপরিচালক (অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব) প্রকৌশলী মো. মেসবাহুজ্জামানসহ বিভিন্ন মুঠোফোন অপারেটরের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।