রোজা রেখে কী চিকিৎসা ও ওষুধ গ্রহণ করা যায়?

রোজা রাখা অবস্থায় চিকিৎসা সংক্রান্ত কী কী করা যাবে আবার কী কী করা যাবে না তা নিয়ে যেমন সাধারণ রোগীদের মধ্যে জ্ঞান ও সচেতনতার অভাব রয়েছে, তেমনি নানা সংশয় ও বিভ্রান্তি রয়েছে চিকিৎসকদের মাঝেও। বিশ্বের বিভিন্ন ইসলামী চিন্তাবিদরা ডাক্তারদের সঙ্গে পরামর্শ করে কিছু বিশেষ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। চিকিৎসায় কী কী করলে রোজার ক্ষতি হবে না বা রোজা ভঙ্গ হবে সেরকম কিছু পরামর্শ নিম্নে দেয়া হলো-

* রোজা অবস্থায় ইনহেলার, নাকের স্প্রে ব্যবহার করা যাবে।

* রোজা অবস্থায় চোখ ও কানের ড্রপ ব্যবহার করা যাবে।

* হার্টের অ্যানজাইনার সমস্যার জন্য বুকে ব্যথা উঠলে ব্যবহৃত নাইট্রোগ্লিসারিন ট্যাবলেট বা স্প্রে জিহবার নিচে ব্যবহার করলে রোজা নষ্ট হবে না।

* রোজা রেখে শিরাপথে খাদ্য-উপাদান ছাড়া কোনো ওষুধ ত্বক, মাংসপেশি বা হাড়ের জোড়ায় ইনজেকশন দিলে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না।

* রোজা রাখা অবস্থায় স্যালাইন বা গ্লুুকোজ জাতীয় কোনো তরল শিরাপথে গ্রহণ করা যাবে না।

* চিকিৎসার প্রয়োজনে রোজা রেখে অক্সিজেন কিংবা চেতনা নাশক গ্যাস গ্রহণে রোজা নষ্ট হবে না।

* চিকিৎসার প্রয়োজনে ক্রিম, অয়েনমেণ্ট, ব্যান্ডেজ, প্লাস্টার ইত্যাদি ব্যবহার করলে এবং এসব উপাদান ত্বকের গভীরে প্রবেশ করলেও রোজার কোনো সমস্যা হবে না।

* রোজা রেখে দাঁত তোলা যাবে। দাঁতের ফিলিং করা যাবে এবং ড্রিল ব্যবহার করা যাবে। এ ছাড়া দাঁত পরিষ্কার করার সময় অসাবধানতাবশত কিছু গিলে ফেললে রোজা নষ্ট হবে না।

* রোজা রেখে রক্ত পরীক্ষার জন্য রক্ত দিতে বাধা নেই।

* কাউকে রক্তদানে এবং রক্তগ্রহণেও বাধা নেই।

* চিকিৎসার জন্য যোনিপথে ট্যাবলেট কিংবা পায়ুপথে সাপোজিটোরি ব্যবহার করলে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না।

* পরীক্ষার জন্য যোনিপথ কিংবা পায়ুপথে চিকিৎসক বা ধাত্রী আঙুল প্রবেশ করালেও রোজার সমস্যা হবে না।

* রোজা রেখে জরায়ু পরীক্ষার জন্য হিস্টেরোস্কপি এবং আই.ইউ.সি.ডি ব্যবহার করা যাবে।

* হার্ট কিংবা অন্য কোনো অঙ্গের এনজিওগ্রাফি করার জন্য কোনো রোগ নির্ণয়কারক দ্রবণ শরীরে প্রবেশ করানো হলে রোজার ক্ষতি হবে না।

* কোনো অঙ্গের অভ্যন্তরীণ চিত্র ধারণের জন্য সেই অঙ্গের প্রবেশপথে কোনো ক্যাথেটার বা নালির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তরল রঞ্জক প্রবেশ করালে রোজা নষ্ট হবে না।

* রোগ নির্ণয়ের জন্য এন্ডোস্কোপি বা গ্যাস্ট্রোস্কোপি করলেও রোজা নষ্ট হয় না। তবে এন্ডোস্কোপি বা গ্যাস্ট্রোস্কোপি করার সময় ভেতরে তরল কিংবা এমন কিছু প্রবেশ করানো যাবে না যার খাদ্যগুণ রয়েছে।

* রোজা রাখা অবস্থায় না গিলে মাউথওয়াশ, মুখের স্প্রে ব্যবহার করা যাবে এবং গড়গড়া করা যাবে।

* রোজা রাখা অবস্থায় লিভারসহ অন্য কোনো অঙ্গের বায়োপসি করা যাবে।

* রোজা রাখা অবস্থায় পেরিটোনিয়াল কিংবা মেশিনে কিডনি ডায়ালাইসিস করা যাবে।