পুলিশের দেয়া ৪’শটি গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী

মুজিববর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ পুলিশের ৬৫৬টি থানায় স্থাপিত নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ‘সার্ভিস ডেস্ক’ এবং গৃহহীন পরিবারের জন্য নির্মিত ৪’শটি গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ ১০ এপ্রিল , রোববার সকাল ১১টায় গণভবন থেকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স অডিটরিয়াম, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ লাইন্স, রংপুরের পীরগঞ্জ ও মাগুরা সদর থানার সাথে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে পুলিশের এসব মানবিক কাজের শুভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স প্রান্ত থেকে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ আখতার হোসেন, বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) ও অতিরিক্ত আইজিপি ড. মইনুর রহমান চৌধুরী।

দেশের অন্যান্য থানার ন্যায় চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ডবলমুরিং মডেল থানা পুলিশ ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত থেকে পুরো অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডবলমুরিং মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আবুল কাশেম ভূইঁয়া, অপারেশন অফিসার নিপু বিশ্বাস, শ্রীশ্রী দেওয়ানেশ্বরী কালীবাড়ি পরিচালনা পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বিনোদ রায় চৌধুরী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সদস্য সাংবাদিক রনজিত কুমার শীল, আগ্রাবাদ ব্যাংকক-সিঙ্গাপুর মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলী নেওয়াজ চৌধুরী, ডবলমুরিং থানাধীন ১২নং ওয়ার্ড কমিউনিটি বিট পুলিশিংয়ের সভাপতি আলহাজ্ব জামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ এরশাদ কালাম, সদস্য রুনা মোস্তাক প্রমূখ।

ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর সাথে যুক্ত হয়ে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ লাইন্সের পুলিশ-সিভিক সেন্টার প্রান্ত থেকে সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আনোয়ার হোসেন। এসময় ভিডিও কনফারেন্সে ‘সার্ভিস ডেস্ক’ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন এস.আই নাজমুন নাহার স্বপ্না। উপকারভোগীদের মধ্যে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেন বৃষ্টি রানী শীল (চন্দনাইশ) ও সেলিনা আক্তার (হাটহাজারী)।

সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, জেলা পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হকসহ পুলিশের বিভিন্ন স্তরে কর্মরত পদস্থ কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, উপকারভোগী, গণমাধ্যমকর্মী ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দরা অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।

পুলিশের হেল্প ডেস্ক স্থাপন এবং গৃহহীনদের ঘর দেওয়ার কার্যক্রমের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী খে হাসিনা বলেন, প্রতিটি থানায় নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ‘সার্ভিস ডেস্ক’ স্থাপন করে তাদের সেবা দেওয়া, সেই সঙ্গে গৃহহীন মানুষকে ঘর তৈরি করে দেওয়া এটা বাংলাদেশ পুলিশের একটি মহতী উদ্যোগ।

আজকের পুলিশ জনগণের আস্থা অর্জন করেছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক বার্তাটা যে -এই পুলিশকে জনগণের পুলিশ হতে হবে। আমি মনে করি এই হেল্প ডেস্ক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নারী-শিশু, বয়স্ক প্রতিবন্ধীদের সেবাদান করা এবং গৃহহীনদের গৃহ দেওয়া এটা জনগণের পুলিশেরই কাজ। আজকের পুলিশ জনগণের পুলিশ হিসেবেই আপনারা আজ মানুষের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করেছেন।

হেল্প ডেস্কে যারা কাজ করবেন যাদের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, হেল্প ডেস্কে যারা কাজ করবেন আমি মনে করি, আমাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা যেমন আছে, সব সময় প্রশিক্ষণকে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। প্রয়োজনে বিদেশেও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেবো।

বিভিন্ন থানায় নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সেবায় সার্ভিস ডেস্ক স্থাপিত হওয়ায় নারীদের জন্য অন্যায়ের প্রতিকার চাওয়ার একটা সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।অনুষ্ঠানে ‘সার্ভিস ডেস্ক’ এবং ভূমিহীনদের জন্য ঘর নির্মাণের ওপর একটি অডিও-ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

সার্ভিস ডেস্ক’ খোলার জন্য প্রতিটি থানায় আলাদা কক্ষের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একজন বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত নারী সাব-ইন্সপেক্টর প্রশিক্ষিত নারী অফিসারদের সঙ্গে ডেস্কের নেতৃত্ব দেবেন। এছাড়াও ডেস্কগুলোকে অন্যান্য সরকারি পরিষেবা সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করার এবং আর্থিকভাবে অসচ্ছল ব্যক্তিদের আইনি সহায়তা দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

গৃহহীন মানুষের জন্য সারাদেশে ৫২০টি থানায় একটি করে বাড়ি তৈরি করবে পুলিশ। প্রথম দফায় ৪’শ বাড়ি বিতরণ করেছে পুলিশ। পুলিশের নির্মিত ঘরগুলো মানসম্মত আধুনিক নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এগুলো ভূমিকম্প ও গরম প্রতিরোধক।

উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে চট্টগ্রাম, রংপুর, মাগুরা জেলার বিভিন্ন থানায় সংযুক্ত হয়ে উপকারভোগী ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।