কাপ্তাই হ্রদে পানির পরিমান কমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত

 কাপ্তাই প্রতিনিধি গ্রীষ্মের তাপদাহের কারণে কাপ্তাই হ্রদে পানির পরিমাণ দিনদিন কমছে। ফলে কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সহসা বৃষ্টিপাত না হলে হ্রদে পানি বৃদ্ধির কোন সম্ভাবনা নেই বলে পিডিবি সূত্রে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বছরের জানুয়ারী-ফেব্রুয়াটী মাস থেকে কাপ্তাই হ্রদে পানির উচ্চতা কমতে থাকে। মার্চ মাসে এই পরিমান আরো কমে যায়। হ্রদে পানির উচ্চতা কমে যাওয়ায় পানির অভাবে কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মধ্যে ৪ ও ৫ নং ইউনিট বন্ধ রাখা হয়েছে। সহসা বৃষ্টিপাত না হলে অন্য ইউনিট গুলোও বন্ধ রাখতে হতে পারে।

আপাতত বৃষ্টির কোন লক্ষন পরিলক্ষিত হচ্ছেনা। বৃষ্টি না হলে কাপ্তাই হ্রদে পানি বৃদ্ধিরও কোন সম্ভাবনা নেই বলে জানান কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আবদুজ্জাহের। তিনি জানান, সচারাচর ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসে বৃষ্টি হয়না। প্রতি বছর খরায় এসময় কাপ্তাই হ্রদে পানি কমে যায়। তখন পানির অভাবে কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট বন্ধ করতে বাধ্য হয়। তবে কোন কোন সময় জানুয়ারী, ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসেও ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার রেকর্ড রয়েছে। সেরকম হঠাৎ করে বৃষ্টি নামলে কাপ্তাই হ্রদে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদনও বৃদ্ধি হবে। কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের আপাতত কিছুই করার নেই। বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) যোগাযোগ করা হলে কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম সূত্র জানায়, বর্তমানে রুলকার্ভ অনুযায়ী (পানির পরিমাপ) হ্রদে পানি থাকার কথা ৮৮.৩৪ ফুট মীনস সি লেভেল (এমএসএল)। কিন্তু পানি আছে ৮৫.২৮ ফুট এমএসএল। কাপ্তাই হ্রদে পানি ধারণ ক্ষমতা ১০৯ ফুট মীনস সি লেভেল (এমএসএল)। ৫টি ইউনিটের মধ্যে বর্তমানে কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ২টি ইউনিট সচল রয়েছে। এরমধ্যে সচল ২ নং ইউনিটে বর্তমানে ৩৫ মেগাওয়াট এবং ৩ নং ইউনিট থেকে ৩৬ মেগাওয়াট মিলে মোট ৭১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই জাতীয় গ্রীডে সঞ্চালন করা হচ্ছে। পানি কম থাকায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব গুলো ইউনিট একযোগে চালু করা সম্ভব হচ্ছেনা। কেন্দ্রের ১ নং ইউনিটটি বার্ষিক রক্ষনাবেক্ষণ কাজের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হওয়া সত্বেও পানির অভাবে অপর ২টি ইউনিট চালু করা সম্ভব হচ্ছে না প্রসঙ্গত, পানি উপর নির্ভর কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন। হ্রদে যত বেশী পরিমাণ পানি থাকবে, ততই বিদ্যুৎ উৎপাদন বেশী হবে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদে যখন পানিতে টুইটম্বুর থাকে, তখন কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫ টি ইউনিট পুরোদমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে থাকে। ৫ টি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৩০ মেগাওয়াট।