মসজিদে মসজিদে মুসল্লির ঢল

পবিত্র শবে বরাত আজ। তাই চট্টগ্রামের প্রতিটি মসজিদে এশার নামাজে মুসল্লির ঢল নেমেছে।

ছোট, বড় নানা বয়সী মুসল্লি দেখা গেছে মসজিদে। বেশিরভাগই মাস্ক পরার বিষয়ে ছিলেন সচেতন। দামপাড়ার জমিয়তুল ফালাহসহ অনেক মসজিদ সাজানো হয়েছে বর্ণিল বাতি দিয়ে। বড় মসজিদগুলোর সামনে আতর, টুপি, মেসওয়াক, তসবিহ, মাস্ক, আগরবাতি, মোমবাতি, জায়নামাজ, নামাজ শিক্ষা ও দোয়া-দরুদের বই, মুখরোচক খাবারসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা।
মসজিদে মসজিদে করোনামুক্তি, বিশ্বশান্তি, দেশের সমৃদ্ধি, মানবজাতির সুখ, সমৃদ্ধি, রোগমুক্তির জন্য দোয়া করা হয়েছে।

জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে কথা হয় জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ার ছাত্র আরমানের সঙ্গে। তিনি জানান, ফারসি ‘শব’ শব্দের অর্থ রাত। ‘বরাত’ শব্দের অর্থ সৌভাগ্য। আরবিতে বলা হয় ‘লাইলাতুল বরাত’ বা সৌভাগ্যের রাত। নফল রোজা, নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, মিলাদ, কিয়াম, জিকির, তাহাজ্জুতসহ নানান ইবাদত বন্দেগিতে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা মহান আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের চেষ্টা করেন। এ রাতে বান্দাদের জন্য আল্লাহ তাআলা রহমতের দরজা খুলে দেন।

কথা হয় কাজীর দেউড়ি থেকে এশার নামাজ পড়তে আসা আবদুল জলিলের সঙ্গে। তিনি বলেন, পরিবারের সবাই দিনভর নফল রোজা রেখেছি। একসঙ্গে ইফতার করেছি। গরিব ও আত্মীয় স্বজনদের হালুয়া, রুটি দিয়েছি। এখন বড় জামাতে নামাজ পড়তে এসেছি। শুনেছি যেখানে যত বেশি মানুষ সেখানে দোয়া কবুলের সম্ভাবনা তত বেশি।

জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের অজুখানার প্রবেশমুখে টেবিল বসিয়ে আতর বিক্রি করছেন শাহিন আলম। তিনি জানান, আজ শুক্রবার এবং শবে বরাত হওয়ায় আতরের চাহিদা বেশি। ৩ এমএলের এক শিশি আতর ব্রান্ড ও মানভেদে ৫০ টাকা থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত রয়েছে।

ছেলেদের নিয়ে নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন বাবা খালেকুজ্জামান। তিনি বলেন, আজ দোয়া কবুলের রাত, মুক্তির রাত। এটা সর্বাধিক ফজিলতপূর্ণ রাত। এটি রমজানের আগমনী বার্তা নিয়ে আসে। আল্লাহ আগামী এক বছরের রিজিক ও ভাগ্য নির্ধারণ করেন এ রাতে। আমরা নফল নামাজের পাশাপাশি নগর বাইশ মহল্লা চৈতন্য গলি, গরিবুল্লাহ শাহ (র.) মাজার সংলগ্ন কবরস্থানসহ মুরুব্বিদের কবর ও মাজার জেয়ারত করব। কাল আবার নফল রোজা রাখব ইনশাআল্লাহ।

পটকা ও আতশবাজি নিষিদ্ধ

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে ইবাদত-বন্দেগির সুবিধার্থে শুক্রবার (১৮ মার্চ) দিবাগত রাত পবিত্র শব-ই-বরাত উপলক্ষে সন্ধ্যা ৬টা থেকে শনিবার (১৯ মার্চ) ভোর ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় সব ধরনের আতশবাজি ও পটকা ফাটানো, উৎপাদন, বিক্রয়, মজুদ ও বহন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। আতশবাজি, পটকা ফাটানো ও উৎপাদন, বিক্রয়, মজুদ ও বহন করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।