টুইটারকে টেক্কা দিতে চাচ্ছে ভারতের ‘কু’

টুইটারকে টেক্কা দিতে চাচ্ছে ভারতের মাইক্রোব্লগিং অ্যাপ ‘কু’। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে চলতি বছর তাদের ব্যবকারীর সংখ্যা ভারতে থাকা টুইটারের আড়াই কোটি ব্যবহারকারীকে ছাড়িয়ে যাবে। গত বছরের শেষ সময় পর্যন্ত অ্যাপটি ২ কোটি ডাউনলোড হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।‘কু’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা মায়াঙ্ক বিদাওয়াতকা বিবিসিকে বলেন, ‘ইংরেজিসহ বর্তমানে আমরা ১০ ভাষায় সেবা দিতে পারি। চলতি বছর আমরা ভারতের ২২ আনুষ্ঠানিক ভাষার সবগুলোতেই সহজলভ্য হয়ে উঠবো বলে আশা করছি।’উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের মাইক্রোব্লগিং প্লাটফর্ম টুইটারের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে এর বিকল্প হিসেবে ২০২১ সালের শুরুর দিকে ‘কু’র আবির্ভাব হয়। গত বছর এটি ভারতে বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠে।ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইটারের ‘উস্কানিমূলক’ অ্যাকাউন্টগুলো ব্লক করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। শুরুর দিকে টুইটারও ভারতীয় সরকারের নির্দেশে এসব অ্যাকাউন্ট ব্লক করেছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে ‘ন্যায্যতা’ হচ্ছে না উল্লেখ করে এসব আবার পুনরুদ্ধার করা হয়। ভারতে কোম্পানিটির কর্মীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে এমন হুমকির প্রেক্ষিতে সরকারের সঙ্গে টুইটারের বিরোধ অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া সরকারের নতুন ডিজিটাল নীতিমালায় বাক স্বাধীনতা ও গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হবে এমন আশঙ্কা থেকে এই বিরোধ আরো জোরাল হয়ে উঠেছে। এরইমধ্যে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই নীতিমালাগুলো তাদেরকে গোপনীয়তা সুরক্ষা ভঙ্গ করতে বাধ্য করবে। টুইটারের এই অবাধ্যতা এবং ডিজিটাল নীতিমালা মেনে না চলায় বিরক্ত হয়ে মন্ত্রীপরিষদে প্রধানমন্ত্রী মোদির ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) অনেক মন্ত্রী ও আইনপ্রনেতা টুইটার ছেড়ে রীতিমতো ‘কু’ ব্যবহার করছেন। অন্যদিকে টুইটারে প্রধানন্ত্রীর বিপুল সংখ্যক ফলোয়ারাও এখন ‘কু’ অনুসরণ করছেন।২০২০ সালের শুরুর দিকে যখন ‘কু’ চালু হয় তখন তা মূলত ইংরেজিতে অভ্যস্ত নয় এমন ভারতীয়দের জন্যই ছিলো। দিনে দিনে অ্যাপটির ব্যবহার বেড়ে দেশের গন্ডিও ছাড়িয়েছে। নাইজেরিয়াতে টুইটার ব্যবহার স্থগিত করলে ২০২১ সালে অ্যাপটি সেখানেও ব্যবহার শুরু হয়। ২০২২ সালের মধ্যে ‘কু’র ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ কোটিতে পৌঁছুবে বলে আশা করা হচ্ছে।ক্রিকেটার এবং বিপুল সংখ্যক বলিউড স্টারও এখন ‘কু’ ব্যবহার করছেন। অ্যাপটিতে বর্তমানে পাঁচ হাজার এরকম ‘বিশিষ্ট অ্যাকাউন্ট’ রয়েছে; চলতি বছরের মধ্যে এ সংখ্যা তিনগুনে পৌঁছানোর আশা করা হচ্ছে।তবে সরকারের হয়ে প্রপাগান্ডা ছড়ানো এবং মুসলিম-বিদ্বেষী বক্তব্য যাচাই না করেই প্রকাশ করার অভিযোগ রয়েছে অ্যাপটির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।