বারিক বিল্ডিং থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কের নাম “জননেত্রী শেখ হাসিনা সড়ক” নামকরণের সিদ্ধান্ত

চসিকের ৬ষ্ঠ পরিষদের ১২তম সাধারণ সভায় মেয়র
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন বিশেষ করে কোনরূপ ম্যাচিং ফান্ড ব্যতিরেকে ২হাজার ৪শত ৯১ কোটি টাকার যে অনুমোদন দিয়েছেন তার কৃতজ্ঞতাস্বরূপ নগরীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বারিক বিল্ডিং থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কটির নাম “জননেত্রী শেখ হাসিনা সড়ক” নামকরণ করার সিদ্ধান্ত চসিকের ৬ষ্ঠ পরিষদের ১২তম সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার ১ম ঘোষণাকারী জননেতা এম.এ হান্নান’র কবরটিতে তাঁর কীর্তিগাঁথা সম্বলিত নামফলক স্থাপন ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের যেসব বরণীয় মহান ব্যক্তিরা অবদান রেখেছেন তাদের স্মৃতিকে অম্লান রাখার জন্য তাদের কৃতিত্বের বিবরণ সম্বলিত স্মৃতিফলক স্থাপনের জন্য তিনি ঘোষণা দেন। আজ সকালে আন্দরকিল্লাস্থ পুরাতন নগর ভবনে কে.বি আবদুচ সাত্তার মিলনায়তনে চসিক ৬ষ্ঠ পরিষদের ১২তম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম’র সঞ্চালনায় প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও বিভাগীয় প্রধানগণ সভায় বক্তব্য রাখেন।
মেয়র নগরবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, গৃহকর নিয়ে নানাধরণের বিভ্রান্তিমূলক গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এই ধরণের বিভ্রান্তিতে কর্ণপাত না করে আপনারা আমার উপর আস্থা রাখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। তিনি এ প্রসঙ্গে পুণরুল্লেখ করে বলেন, কোন কর বৃদ্ধি করার অবকাশ নেই শুধুমাত্র করের আওতা বৃদ্ধি হবে। অর্থাৎ আগে যে স্থাপনাগুলো ছিলো তা বৃদ্ধি করা হলে উক্ত অংশের কর ধার্য করা হবে। অসংগতি দূর করার জন্য ২টি রিভিউ কমিটির স্থলে আরো ২টি কমিটি গঠন করা হবে বলে তিনি জানান। এই রিভিউ কমিটির মাধ্যমে সকল আপিল বিবেচনা করে সহনীয় পর্যায়ে কর নির্ধারণ করা হবে বলে তিনি দৃঢ় অভিমত ব্যক্ত করেন। মেয়র সরকারী বিধি-বিধান অনুসরণ করে যে সমস্ত খাত থেকে চসিকের কর আদায় হয় না তা চিহ্নিত করে কর আদায়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাজস্ব বিভাগকে নির্দেশনা দেন।
মেয়র নগরীর চরমদুর্ভোগ জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগাপ্রকল্পের কাজের গতি বৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এই শুষ্ক মৌসুমে প্রতিটি ওয়ার্ডের ছোট-বড় খাল, নালা-নর্দমা থেকে পলিথিন, আবর্জনা ও মাটি অপসারণ করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ প্রদান করেন। তিনি আবারো হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা অবৈধভাবে খাল, নালা-নর্দমা দখলপূর্বক স্থাপনা নির্মাণ করে পানি নিষ্কাশনে যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে তা তাদের স্ব স্ব উদ্যোগে সরিয়ে ফেলতে হবে। অন্যথায় চসিক ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে উচ্ছেদ ও জরিমানা করা হবে বলে তিনি জানান।
মেয়র নগরীর আলোকায়ন প্রসঙ্গে বলেন, অনেক সড়ক বাতি রাতে জ্বলে না বলে অভিযোগ আছে। বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সড়ক বাতি পরিদর্শকের মাধ্যমে তদারকী করে পরের দিন দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। যদি এর ব্যতিক্রম হয় সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি কাউন্সিলরদের তাদের ওয়ার্ডে প্রয়োজনীয় শেড’র চাহিদাপত্র প্রতিবেদন আকারে জমা দেয়ার জন্য আহ্বান জানান। এই শুষ্ক মৌসুমে সড়কগুলোতে লেইন মার্কিং ও জেব্রাক্রসিং’র কাজ সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ প্রদান করেন। সভায় ওয়াসাসহ সকল সেবা সংস্থা কর্তৃক কর্তনকৃত রাস্তা দ্রুততার সাথে মেরামতের জন্য প্রকৌশল বিভাগকে নির্দেশনা প্রদান করেন।
আগামী রমজান মাসকে সামনে রেখে বাজার মনিটরিং’র উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সসহ ব্যবসায়ী ও বাজার কমিটির প্রতিনিধিদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করা হবে। এছাড়া অবৈধ বাজার উচ্ছেদের ব্যাপারে চলমান অভিযান জোরদার করা হবে বলে উল্লেখ করেন।
আধুনিকায়নকৃত মেমন মাতৃসদন হাসপাতালটি পরিচালনার জন্য একটি প্রশাসনিক কমিটি গঠন করা হবে বলে তিনি সভাকে অবহিত করেন।
পরিবেশের অভিশাপ স্বরূপ পলিথিন ব্যবহার বন্ধের কথা উল্লেখ করে বলেন, নগরীর ৫০টির অধিক কাঁচাবাজার আছে যেখানে এখনো পলিথিন ব্যবহার করা হচ্ছে। এই ব্যাপারে চসিক কাঁচাবাজারগুলো থেকে পলিথিন ব্যবহার বন্ধে যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তাতে সকল ব্যবসায়ীসহ নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন। আগামী ১৫ফেব্রুয়ারী থেকে চসিক ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে প্রতিটি বাজারে অভিযান পরিচালিত হবে বলে তিনি পুণরুল্লেখ করেন।
সভায় বিগত সভার কার্যবিবরণী ও স্থায়ী কমিটির সভার কার্যবিবরনী সর্ব সম্মতিক্রমে অনুমোদন প্রদান করা হয়। সভার শুরুতে কোরান তেলাওয়াত ও মুনাজাত করা হয়। সভায় বিগত সভার পর চট্টগ্রামসহ দেশের বরেণ্য ব্যক্তিদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ ও তাদের রূহের মাগফেরাত কামনা করা হয়।