জকোভিচের ভিসা বাতিল করল অস্ট্রেলিয়া, বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে

অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করতে পারলেন না বিশ্বের শীর্ষ টেনিস তারকা নোভাক জকোভিচ। অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করতে যেসব শর্ত পূরণ করতে হয়, তাতে তিনি ব্যর্থ হওয়ার কারণে তার ভিসা বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ। তাকে মেলবোর্ন বিমাববন্দরে কয়েক ঘন্টা বসিয়ে রেখে দেশে ফেরত পাঠানোর কথা রয়েছে। তিনি করোনাভাইরাস সম্পর্কিত বিধিনিষেধ মানেননি বলে বলা হয়েছে। এ কারণে তাকে বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানোর কথা। এ খবর দিয়ে অনলাইন বিবিসি বলছে, বিশ্বের এক নম্বর টেনিস তারকা বলে ছাড় পাননি জকোভিচ। তাকে বিমানবন্দর থেকে একটি হোটেলে নিয়ে আটক রাখা হয়েছে। সেখান থেকে ফিরতি ফ্লাইটে দেশে ফেরত পাঠানো হবে।

এ খবর সারাবিশ্বে হইচই পড়ে গেছে।

প্রতিটি সংবাদ মাধ্যম ফলাও করে প্রচার করছে এ খবর। কারণ, বিশ্বের এক নম্বর টেনিস তারকা তিনি। তাকে অস্ট্রেলিয়া ছাড় দিতেও পারতো। কিন্তু ‘আইন আইনই’। বড় ছোট কাউকে আলাদা চোখে দেখে না আইন। এ কথার প্রমাণ রেখে অস্ট্রেলিয়া তাকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। বিমানবন্দরে আটকে রেখে কয়েক ঘন্টা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে করোনাভাইরাসের টিকা নেয়ার ব্যাপারে। কিন্তু তিনি টিকা নিয়েছেন কিনা সে বিষয়ে কোনো কথা বলেননি। উল্লেখ্য, গত বছরে বলেছিলেন টিকা নেয়ার বিরোধী তিনি।

ওদিকে টেনিস অস্ট্রেলিয়া নিশ্চিত করেছে যে, দুটি আলাদা প্যানেলের রিভিউয়ের পর এই খেলোয়াড়কে টিকা নেয়ার ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া হয়েছে। কিন্তু দুবাই থেকে বুধবার তিনি যখন মেলবোর্নে পৌঁছেন সমস্যা দেখা দেয় তখনই। সেখানে অস্ট্রেলিয়ান বর্ডার ফোর্স এক বিবৃতিতে বলেছে, অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করতে হলে যেসব অত্যাবশ্যকীয় শর্ত পালন করতে হয়, জকোভিচ তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই তার ভিসা বাতিল করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক নন এমন ব্যক্তির যদি বৈধ ভিসা না থাকে অথবা যদি তার ভিসা বাতিল করা হয়, তবে তাকে অস্ট্রেলিয়ায় আটক করা হয় এবং বের করে দেয়া হয়।

ভিক্টোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত ক্রীড়ামন্ত্রী টুইটে বলেছেন, সংশয় থাকার কারণে নোভাক জকোভিচের ভিসার আবেদনে সমর্থন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি। এ ইস্যুতে বিবৃতি দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। জকোভিচকে ছাড় দেয়ার কথা প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি। বলেছেন, তার দেশে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। এ নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন মরিসন। এতে তিনি বলেছেন, কোনো খেলোয়াড়ের প্রবেশের ক্ষেত্রে মেডিকেল ছাড় গ্রহণযোগ্য নয়। এক্ষেত্রে যেসব তথ্যপ্রমাণ দেয়া হয়েছে তা পর্যাপ্ত নয়।

ওদিকে স্থানীয় পর্যায়ের রিপোর্টে বলা হয়েছে, এখন জকোভিচ নতুন করে আইনগত আপিল করতে পারেন অথবা অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করে টুর্নামেন্ট খেলতে নতুন ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক রিপোর্টে বলেছে, বিমানবন্দর থেকে মেলবোর্নের কার্লটনে একটি হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাকে। এই হোটেলটি অভিবাসীদের আটকে রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়। স্থানীয় মিডিয়ার খবর অনুযায়ী, ওই হোটেলটি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের স্থান হিসেবে চিহ্নিত এবং সেখানে সম্প্রতি আগুন লেগেছিল।

অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী গ্রেগ হান্ট এর আগে জকোভিচের সঙ্গে এ আচরণকে ‘টাফ’ তবে সুষ্ঠু বলে বর্ণনা করেছেন। বলেছেন, অস্ট্রেলিয়া সরকারের কাছে সবাই একই আইনের আওতায়। কিন্তু নোভাক জকোভিচের সঙ্গে এমন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তার দেশ সার্বিয়া। তার পিতা শ্রাজন জকোভিচ বলেছেন, তার ছেলেকে বিমানবন্দরে পুলিশি পাহারায় একটি রুমে আটকে রাখা হয়েছে। তিনি বলেছেন, এটা শুধু জকোভিচের বিরুদ্ধে লড়াই নয়, এই লড়াইটা হচ্ছে সারা বিশ্বের সঙ্গে। বিবৃতি দিয়েছেন সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকজান্দার ভুসিচ। তিনি বলেছেন, নোভাক জকোভিচ হয়রানির শিকার। পুরো সার্বিয়া তাকে সমর্থন করছে।