মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে তিনদিনের অনুষ্ঠানমালা শুরু করেছে উদীচী চট্টগ্রাম।

মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এ অনুষ্ঠানমালা।

 

বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন, গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা কাজী নুরুল আবছার এবং চট্টগ্রাম চলচিত্র কেন্দ্রের সভাপতি শৈবাল চৌধুরী।

আবুল মোমেন বক্তব্যে বলেন, ‘১৯৭১ সালে নয়মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বিজয়ের উল্লাস করতে করতে আমরা যখন ফিরে আসছিলাম, তখনই পত্রিকার পাতায় আমরা রায়েরবাজারে হত্যাযজ্ঞের ছবি দেখেছিলাম। জাতির সামনের সারির চিন্তাবিদ, বুদ্ধিজীবীদের হত্যার খবর আমরা দেখলাম। মুহুর্তেই আমাদের কাছে স্বাধীনতাটা যেন মিথ্যা হয়ে গিয়েছিল। পাকিস্তান সরকার চেয়েছিল আমাদের দেশের মেধাবী সন্তানদের হত্যা করতে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এদেশের আলবদরদের সহযোগিতায় সেটা বাস্তবায়ন করেছিল। ’

তিনি বলেন, ‘বিভাজনের কারণে, স্বাধীনতার চেতনা ধরে রাখতে না পারার কারণে বঙ্গবন্ধু বারবার আক্ষেপ করেছেন। লুটেরার দল, চাটার দল নিয়ে আক্ষেপ করেছেন। শেষপর্যন্ত তাঁকে মানুষের অধিকার সংকোচন করে বাকশাল কায়েম করতে হয়েছে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য। সেদিনের সেই বিভাজনের ফল আমরা আজ অনুভব করছি। দেশে মৌলবাদের জোরালো উত্থান হয়েছে। দেশ আজ এমন এক জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে, এখন অন্তঃসারশূন্য, গৎবাঁধা পথে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা আর বাঙালি জাতীয়তাবাদের কথা বললে হবে না। প্রকৃত অর্থে বাঙালি জাতীয়তাবাদ আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কি সেটা নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। সবকিছু নতুন করে ভাবতে হবে। ’

সভায় সঞ্চালনা করেন উদীচী চট্টগ্রামের সহ-সভাপতি ডা. চন্দন দাশ। আলোচনা সভার পর সুচয়ন ললিতকলা কেন্দ্র, রাগশ্রী এবং উদীচী চট্টগ্রামের ক্ষুদেশিল্পীরা দেশের গান পরিবেশ করেন।

তিনদিনব্যাপী আয়োজনের প্রতিদিন নগরীর চেরাগি পাহাড় এলাকায় বিজয়মঞ্চে, গান, গণসঙ্গীত, আবৃত্তি, দেশের গান পরিবেশন করা হবে। ১৬ ডিসেম্বর সকালে চেরাগি চত্বরে মুক্তিযুদ্ধের আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হবে।