অক্সিজেন খুলে নেয়া সেই ওয়ার্ডবয় আটক

অক্সিজেন খুলে নেয়ায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ডবয়কে আটক করেছে র‌্যাব। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক এএসপি আ ন ম ইমরান খান।

তিনি বলেন, ঘটনার পর ওয়ার্ডবয় ধলু পালিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। এ ঘটনা চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত হওয়ায় ছায়া তদন্ত শুরু করে র‌্যাব। এরপর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ধলুকে আটক করা হয়।

 

জানা যায়, হাসপাতালের ওই ওয়ার্ডবয় রোগীর স্বজনের কাছে বকশিস চেয়েছিলেন ২০০ টাকা। রোগীর দরিদ্র বাবা দিতে পেরেছিলেন ১৫০ টাকা। এতেই খেপে গিয়ে রোগীর অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেন ওই কর্মচারী। ফলে ঘটনাস্থলেই মারা যায় ১৮ বছরের এক স্কুলছাত্র। পরে অভিযুক্ত কর্মচারী ধলু হাসপাতালের আনসারদের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ উঠে।

বিকাশ স্থানীয় খামার ধনারুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। সে পড়াশোনার পাশাপাশি স্থানীয় একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতো বলে জানান তার চাচা শচীন চন্দ্র কর্মকার। শচীন চন্দ্র কর্মকার বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত পায় বিকাশ। প্রথমে স্থানীয় সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে সেখান থেকে পরে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জরুরি বিভাগে বিকাশের চিকিৎসা শেষে মাথায় ব্যান্ডেজ এবং মুখে অক্সিজেন মাস্ক দিয়ে তৃতীয় তলায় সার্জারি বিভাগের ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। সেখানে মেঝেতে একটি বেড দেয়া হয়। এসময় রোগীর স্ট্রেচার বহনকারী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ওই কর্মচারী বিকাশের বাবার কাছে ২০০ টাকা বকশিস দাবি করেন।

 

এ সময় বিকাশের বাবা বিশু সেই কর্মচারীকে জানান, তার কাছে ২০০ টাকা নেই। ১৫০ টাকা আছে বলে তা সেই কর্মচারীর হাতে তুলে দেন। কিন্তু অভিযুক্ত কর্মচারী ধলু আরও ৫০ টাকা দাবি করলে আমার ভাই বিশু তা দিতে অসমর্থ হন। এতে ধলু রেগে যায় এবং বিকাশের মুখ থেকে অক্সিজেন মাস্ক খুলে পা দিয়ে দূরে সরিয়ে রাখে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে বিকাশের নাক-মুখ থেকে ফেনা বের হয় এবং তার শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। পরে ডাক্তার এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার আগেই এই কর্মচারী ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।