তালেবানদের এখনই স্বীকৃতি নয়- রাশিয়া

আফগানিস্তানে তালেবান সরকারকে সাহায্য দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে রাশিয়া, চীন এবং পাকিস্তান। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে মঙ্গলবার এ কথা বলা হলেও স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে তালেবানদেরকে এখনই সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হবে না। অনলাইন এক্সপ্রেস ট্রিবিউনে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার এই তিনটি দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে তালেবানদেরকে মানবিক এবং অর্থনৈতিক সমর্থন দিতে একমত হয়েছে এই তিনটি দেশ। আজ মস্কোতে আফগানিস্তানের নতুন শাসকদের প্রতিনিধিদের সাথে এই তিনটি দেশের কর্মকর্তাদের মিটিং হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, তালেবানরা ক্ষমতা দখলের আগে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেগুলো পূরণ না করা পর্যন্ত তাদেরকে স্বীকৃতি দেবে না রাশিয়া। তাদের প্রতিশ্রুতির মধ্যে ছিল রাজনৈতিক এবং জাতিগত ভাবে সবার অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠনের। এছাড়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল নতুন সরকারে নারীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য।

কিন্তু সমালোচকরা বলছেন আফগানিস্তানে সাবেক এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী এখন পর্যন্ত যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তাতে তাদের পশ্চাৎমুখী প্রবণতেই ফুটে উঠেছে। তারা নারী এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু তা এখনও পুরোপুরি ভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি। শত্রুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পদক্ষেপ থেকে তারা বেরিয়ে আসেনি। সের্গেই লাভরভ সাংবাদিকদের বলেছেন, এখনই তালেবানদেরকে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়ে আলোচনায় নেই। এ অঞ্চলে বড় প্রভাবশালী দেশগুলোর মতো আমরাও তাদেরকে এখনই স্বীকৃতি দিচ্ছি না। তবে তালেবানদের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। তারা ক্ষমতায় আসার আগে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেগুলো যেন পূরণ করতে পারে, সে জন্য তাদেরকে আমরা সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য মধ্য আগস্টে আফগানিস্তানে বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে মসনদ দখল করে তালেবান বাহিনী। এতে সেখানে বেসামরিক সরকার ধসে পড়ে। দেশ থেকে পালিয়ে যান নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণি। যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা ২০ বছরের যুদ্ধ শেষে আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার করে নেয় সেনাবাহিনীকে। এর মধ্য দিয়ে আফগানিস্তান ফিরে যায় তালেবান শাসনের অধীনে। এই আফগানিস্তানে ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত ভয়াবহ যুদ্ধ করেছিল রাশিয়া। এখন তারা পুরো অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা এড়ানোর জন্য কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যদি আফগানিস্তানকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীলতা ছড়িয়ে পড়ে তাহলে তাড়াতাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হবে পুরো অঞ্চলের স্বার্থ। রাশিয়া, পাকিস্তান এবং চীনের কর্মকর্তাদের সাথে তালেবানদের যে মিটিং হওয়ার কথা সেখানে উপস্থিত থাকবে না যুক্তরাষ্ট্র। তবে জানিয়েছে ভবিষ্যতে এরকম আলোচনায় তারা যুক্ত হতে চায়। আজকের এই আলোচনা থেকে বড় ধরনের কোন অগ্রগতি হবে না বলে আগেই সতর্ক করেছিলেন আফগানিস্তান বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জালমে খলিলজাদ। এরই মধ্যে তাকে পথ থেকে সরিয়ে দিয়েছে প্রেসিডেন্ট বাইডেন জো বাইডেনের প্রশাসন।