শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোক মঞ্জীর

আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোক মঞ্জীর, ধরণীর বহিরাকাশে অন্তরিত মেঘমালা, প্রকৃতির অন্তরাকাশে জাগরিত জ্যোতির্ময়ী জগন্মাতার আগমন বার্তা। আনন্দময়ী মহামায়ার পদধ্বনি অসীম ছন্দে বেজে উঠে, রূপলোক ও রসলোকে আনে নব ভাবমাধুরীর সঞ্জীবন।

তাই আনন্দিতা শ্যামলী মাতৃকার চিন্ময়ীকে মৃন্ময়ীতে আবাহন। আজ চিৎ শক্তিরূপিনী বিশ্বজননীর শারদ স্মৃতিমণ্ডিতা প্রতিমা মন্দিরে মন্দিরে ধ্যানবোধিতা।
ঢাকের আওয়াজ ছাড়া যেমন দুর্গাপূজার আয়োজন পরিপূর্ণতা পায় না, ঠিক তেমনি বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের চণ্ডীপাঠের রেকর্ড বাজানো ছাড়া মণ্ডপে পূজার আমেজ পাওয়া যায় না। মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) ভোরের আলো ফোটার আগেই মণ্ডপের মাইকে ভেসে আসে সেই কালজয়ী কণ্ঠ।

শিউলীস্নাত স্নিগ্ধ ভোরে তাই তিনবার বেজে ওঠে পুরোহিতের শঙ্খধ্বনি। আজ সপ্তমী তিথিতে চলছে দেবী দুর্গার পূজা। সঙ্গে পূজিত হচ্ছেন মহাদেব, শ্রীশ্রী লক্ষ্মী, শ্রীশ্রী সরস্বতী, শ্রীশ্রী কার্ত্তিক ও শ্রীশ্রী গণেশ। সঙ্গে পূজা পাচ্ছেন দেবীর পদতলে ধরাশায়ী মহিষাসুরও।

নগরের জেএম সেন হলে প্রধান পূজামণ্ডপে চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদ্যাপন পরিষদের আয়োজনে সকাল ৯টায় শুরু হয় শারদীয় দুর্গাপূজার সপ্তমী বিহিত পূজা। দুপুর ১টায় দেওয়া হবে পুষ্পাঞ্জলি। এছাড়া দুপুর ২টায় জাগরণ পুঁথিপাঠ, বিকাল ৫টায় চিত্রাঙ্কন ও সঙ্গীত প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান, সন্ধ্যা ৬টায় সন্ধ্যারতি, সাড়ে ৭টায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন মহানগর পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল।

বুধবার (১৩ অক্টোবর) দুর্গাদেবীর মহাষ্টমী পূজা ও রাতে সন্ধি পূজা, বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) মহানবমী বিহিত পূজা এবং শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) বিজয়া দশমীর পূজা শেষে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে। বিভিন্ন মণ্ডপে সরাসরি পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার আয়োজন থাকলেও রামকৃষ্ণ মিশনে অনলাইনে চলবে এ আয়োজন।

নগরের ১৬টি থানায় ব্যক্তিগত, ঘটপূজাসহ ২৭৬টি পূজামণ্ডপে, চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় ৮২০টি পূজামণ্ডপে এবং চট্টগ্রাম জেলার আওতাধীন ১৫ উপজেলায় সর্বজনীন ১ হাজার ৫৫৩টি ও পারিবারিক ৪১১টি মণ্ডপসহ মোট ১ হাজার ৯৬৪টি পূজাম-পে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেবী দুর্গা মর্ত্যে এসেছেন ঘোড়ায় চড়ে, কৈলাসে ফিরবেন দোলায় চেপে।

শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে সিএমপি ট্রাফিক বিভাগ বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। বিশেষ ট্রাফিক পুলিশি ব্যবস্থার অংশ হিসেবে অতিরিক্ত সার্জেন্ট, টিএসআই, এএসআই, এটিএসআই, কনস্টেবল মোতায়েন করা হচ্ছে। পাশাপাশি পূজামণ্ডপগুলোর নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্যরা নিয়োজিত আছে বলে জানিয়েছেন সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর।

তিনি বলেন, মোবাইল টহল টিমের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। পূজাম-পে কোনো ধরনের ডিজে পার্টির আয়োজন না করা, আতশবাজি না ফুটানো, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে গুজবে কান না দিতে পূজা পরিষদের নেতাদের মাধ্যমে সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।