হাজার গানের গীতিকবি কাপ্তাইয়ের শতবর্ষী আম্রামাং মারমা

মোঃ নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই। কাপ্তাই উপজেলাধীন ওয়াগ্গা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড কুকিমারা পাড়ার শতবর্ষী (৯৮ বছর) আম্রামাং মারমা।

যিনি মারমা ভাষার একজন লোকগানের (মারমা ভাষায়, কাপিয়া) গীতিকার, সুরকার এবং শিল্পী। এছাড়া তিনি মারমা ভাষার গল্পকার (মারমা ভাষায়, ওয়াইথুউ)। মারমা সম্প্রদায়ের প্রাচীন ইতিহাস, ঐতিহ্যকে যিনি কথা আর সুরের সংমিশ্রণে এবং গল্পে গল্পে তুলে ধরে আসছে বিগত ৮০ বছরের অধিক সময় ধরে। নিমিষেই তিনি মারমা লোকগীতি রচনা ও সুর করে তা নিজ কন্ঠে গাইতে পারেন। মারমা সংস্কৃতির ধারক বাহক হিসেবে তিনি তার লেখনীর মাধ্যমে মারমা সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করে আসছেন। প্রায় এক হাজার লোকগীতি তিনি রচনা ও সুর করেছেন। কিন্ত সংরক্ষণের অভাবে বর্তমানে তার রচিত অনেক গান বিলুপ্ত হয়ে গেছে। গত কয়েকদিন আগে ওয়াগ্গা ইউনিয়নের কুকিমারা পাড়ায় তার সাথে আলাপকালে তিনি জানায়, সেই কিশোর বয়স থেকে মারমা লোকগীতি এবং লোকগল্প লিখে আসছি। অনেক গানের সুর করেছি এবং আমাদের বিভিন্ন উৎসবে এসব গান পরিবেশন করেছি। এখন বয়স হয়েছে, শরীর অসুস্থ, তাই আর লিখার বা গাইবার শক্তি নেই। তিনি তার গান সংরক্ষণের জন্য পরবর্তী প্রজন্মের নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন। ওয়াগ্গা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য অংচাপ্রু মারমা জানান, তিনি এই এলাকার প্রবীন একজন মারমা গানের গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী। তার লেখা অজস্র গান মানুষের মুখে মুখে। তিনি ভালো গাইতে পারেন। তবে তার গান গুলো লিখিত আকারে নেই। বর্তমানে গ্রামের অনেক শিল্পী তার গানগুলো সংরক্ষণের চেষ্টা করছেন। মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থার (মাসস) কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক কাপ্তাই উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর যুগ্ম সম্পাদক মংসুইপ্রু মারমা ও ওয়াগ্গা অংম্রাং শিল্পী গোষ্ঠীর সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান অংলাচিং মারমা জানান, মারমা সমাজের জন্য তিনি একজন অহংকার। তার গান যদি সংরক্ষণ করা যায় তাহলে মারমা সংস্কৃতি সমৃদ্ধ হবে।