আদর্শের রাজনীতি চর্চা যারা করেন, তাঁদের পক্ষে জনসমর্থনও জরুরি

প্রেসক্লাবে লিজেন্ড এর অভিষেক চট্টগ্রামে উপর্যুপরি নালায় ডুবে মৃত্যুর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রামের তরুণ ও কিশোর স্বেচ্ছাসেবকরা।‌ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত স্বেচ্ছাসেবী ও সামাজিক সংগঠন ‘লিজেন্ড ফাউন্ডেশন’ এর অভিষেকে এই নিন্দা উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। ‌

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাজ্জাদ হোসাইনের সঞ্চালনায় এবং সংগঠনের নব-নির্বাচিত সভাপতি মোঃ আব্বাস হোসেন রনির সভাপতিত্বে অভিষেক অনুষ্ঠান পরিচালিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ আ জ ম নাছির উদ্দিন।‌ প্রধান বক্তা ছিলেন সাংবাদিকদের জাতীয় সংগঠন বিএফইউজে- বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাধিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি ও চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্বিবিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য রিয়াজ হায়দার চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সরকারী সিটি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি চৌধুরী জহির উদ্দিন মোঃ বাবর, সিটি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি মোহাম্মদ আবু তাহের, সংগঠনের উপদেষ্টা মোহাম্মদ হোসেন আরশাদ।‌ সংগঠনটির বিগত বছরের কার্যক্রম তুলে ধরেন আরিফ ইকবাল তানভীর, ইমন চ্যটার্জী, মোঃ কাইয়ুম হোসেন, সানজিদ আহমেদ, আয়েশা খাতুন। বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা লিজেন্ড ফাউন্ডেশনের নতুন কমিটির সদস্যদের ফুল দিয়ে বরণ করেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন লিজেন্ড ফাউন্ডেশনের তকিবুল হক তুষার, ওমর ফারুক জিসান, মনি দাশ, আশরাফুর রহমান, রিমন ভট্টাচার্য, আবু জুনায়েদ আসাদ, মোঃ ওমর ফারুক সম্পদ, মোঃ সাইমন, ফরহাদ খান ফারহান, মিজানুর রহমান, শামীমা চৌধুরী আইরিন, হোসনে আরা বেগম মেরী, মোঃ ফারুক, আনিশা দাশ, কনক চাপা, গিয়াস উদ্দিন, আবদুর রবিন, সাজ্জাদ আরমান, নাঈম উদ্দিন সহ বিভিন্ন সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা। প্রধান অতিথি জননেতা আ জ ম নাছির উদ্দিন ২২ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরী কমিটিকে শপথ বাক্য পাঠ করান। আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা, অভিভাবকদের মান্য করা, সততা সহ নানা আচার মানুষের জীবনকে সার্থক করে। দেশপ্রেম মানব জীবনকে ধন্য করে। ‌পরিবার স্বজন ও দেশের প্রতি দায়বদ্ধতার তাগিদ দেন প্রধান অতিথি। ‌ আ জ ম নাছির উদ্দিন আরো বলেন, পড়ালেখার পাশাপাশি প্রত্যেক শিক্ষার্থীরই সমাজ সচেতন ভূমিকা জরুরি।‌ রাজনীতিকে যারা ‘টাকা কামানোর মেশিন’ ভাবছেন তাদের ব্যাপারেও সচেতনতা প্রয়োজন । পূর্বেকার আদর্শের রাজনৈতিক নেতৃত্ব এখনো আছে। তবে সংখ্যায় কম। তা নানা কারণে হুমকিরও মুখে। প্রসঙ্গেক্রমে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের নানা প্রতিকূলতার কথাও তুলে ধরেন বলেন, আদর্শের রাজনীতি চর্চা যারা করেন, তাঁদের পক্ষে জনসমর্থনও জরুরি ।‌ প্রধান বক্তা পেশাজীবী ও নাগরিক সংগঠক সাংবাদিক রিয়াজ হায়দার চৌধুরী বলেন, পরিবারের অভিভাবকদের মান্য না করে সত্যিকারের সমাজসেবক হওয়া যায়না ।‌ প্রত্যেক সমাজসেবককে রাষ্ট্র ও সমাজের কাছে দায়বদ্ধতার অঙ্গীকার করতে হবে। একইভাবে সমাজের অভ্যন্তর থেকে অসততা, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। তিনি ‘চট্টগ্রামে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদার আগ্রহে এক লক্ষ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হলেও চট্টগ্রামের দায়ীত্বশীলদের অদূরদর্শিতা, অপরিণামদর্শিতা ও নির্বোধ বিবেকের কারণে নালায় ডুবে একে একে শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ উপর্যুপরি পথচারীর মৃত্যু ঘটছে’ বলে উল্লেখ করেন। এই মৃত্যুফাঁদ ঠেকাতে নাগরিক সচেতনতার তাগিদ দেন ।‌ ঢালাওভাবে রাজনৈতিক নেতৃত্বকে দোষারোপ না করে ‘প্রগতির রাজনীতিকে বাধাগ্রস্ত করতে সৃষ্ট দুর্নীতি ও অসততার অক্টোপাসকে রুখে দাঁড়ানো প্রয়োজন’ বলে মন্তব্য করেন এই সাংবাদিক নেতা । তিনি বলেন, নানা সমালোচনার পরেও এ দেশের সব শুভ অর্জন রাজনীতিবিদদেরই।‌ ৫২ এর ভাষা আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ৭১ মুক্তিযুদ্ধের বিজয় এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ হয়েছে রাজনীতিবিদদের অবদানেই।‌ রাজনীতিবিদদের আহ্বানেই এইসব অধ্যায়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও সাধারন জনতা অংশগ্রহণ করেন। ‌ অনুষ্ঠানে অন্য আলোচকগণ ‘লিজেন্ড ফাউন্ডেশনে’র কাজের প্রশংসা করেন। তাঁরা বলেন, লিজেন্ড ফাউন্ডেশন ২০১৭ সালে যাত্রা শুরু করে। এই সংগঠন সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় মানবতার কার্যক্রম ছড়িয়ে দিচ্ছে যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। ব্যতিক্রমধর্মী বিভিন্ন মানবিক প্রজেক্ট নিয়ে সমাজের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন লিজেন্ড ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবক সদস্যরা। করোনা ক্রান্তিকালে অসহায়, তৃণমূল মানুষের মাঝে এবং রমজানে রোজাদারদের মাঝে শুকনো ও রান্না করা খাবার বিতরণসহ নানাভাবে মানবিক কাজ করে লিজেন্ড ফাউন্ডেশন।