পেকুয়ায় ছাত্রদলের স্বাগত মিছিলে হামলা

পেকুয়া প্রতিনিধি কক্সবাজারের পেকুয়ায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত কমিটির নেতৃত্বে স্বাগত মিছিল আয়োজন নিয়ে পদবঞ্চিতদের সাথে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। একই সাথে স্বাগত মিছিল থেকে আ’লীগের দলীয় সভানেত্রী বর্তমান সরকারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়ে কঠুক্তি, উস্কাসিমূলক স্লোগান ও পেকুয়া উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের বাসভবন লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় আ’লীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ধাওয়া দিলে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এঘটনায় দুই পক্ষে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হলেও তাদের নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি। শুক্রবার সকালে পেকুয়া চৌমুহনী- বাজারে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও বিএনপির দলীয় অফিস দখলের ঘটনা ঘটলেও সন্ধ্যায় আ’লীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিলসহ প্রতিবাদ সভা করে। এ ঘটনায় পেকুয়া বাজার ও চৌমুহনীতে এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উত্তেজনা বিরাজ করছে। জানা গেছে, পেকুয়া উপজেলায় ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর থেকে পদবঞ্চিতরা বিক্ষিভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করে কমিটিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে। এমনকি বিএনপি দলীয় কার্যালয় তালা ভেঙে প্রবেশ করে দখলে নেন পদবঞ্চিতরা। এ ঘটনার পর তাৎক্ষিনকভাবে পেকুয়া উপজেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা সহযোগি সংগঠনের নেতাদের নিয়ে মতবিনিময় করেন। শুক্রবার সকালে সদ্য ঘোষিত কমিটির আহ্বায়ক এম ফরহাদ হোছাইন ও সদস্য সচিব মোঃ মারুফুল ইসলামের নেতৃত্বে স্বাগত মিছিলের আয়োজন করেন। স্বাগত মিছিল প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে পেকুয়া বাজারস্থ ইসলামি সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নেন পদবঞ্চিতরা। এদিকে ছাত্রদলের স্বাগত মিছিলটি পেকুয়া চৌমুহনীস্থ মোড়ে আসলে আ’লীগের দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে কঠুক্তি ও উস্কাসিমূলক শব্দ ব্যবহার করায় আ’লীগের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া দেন। পরে ওই মিছিলটি পেকুয়া বাজারে গেলে ইসলামি ব্যাংকের সামনে পদবঞ্চিতদের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতা শওকত হোসেন বিজয়ের নেতৃত্বে দলীয় অফিস দখল করে নেয়। এক পর্যায়ে আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের বাসা লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করলে আ’লীগ দলীয় নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ ছাত্রদল নেতাদের ধাওয়া দেন। পরে এ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভাও করে আ’লীগের শীর্ষ নেতারা। ছাত্রদলের পেকুয়া উপজেলা শাখার সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ত্যাগী ছাত্রদল নেতা শওকত হোছাইন বিজয় জানান, জেলা ছাত্রদল কর্তৃক সদ্য ঘোষিত ছাত্রদলের ২১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষনার পর থেকে পেকুয়া উপজেলার পদবঞ্চিত ত্যাগী নেতাকর্মীরা সামাজকি যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ঘোষিত কমিটি প্রত্যাখান করে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল। পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের যোগ্যদের পদবঞ্চিত করেছে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে। তাই আমরা অযোগ্য কমিটিকে প্রতিহত করতে রাজপথে আছি, থাকবো। পেকুয়া উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, ছাত্রদল নেতারা বিনাকারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কঠুক্তি করার পর উস্কাসিমূলক আচরণ করেন। এমনকি আমার বাসায় ইট নিক্ষেপ করে ক্ষতি করে। এবিষয়ে আ’লীগের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এবিষয়ে পেকুয়া থানা ওসি মোঃ সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি করি। এই বিষয়ে কারো পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ এখনো পায়নি।

মিছিলে হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

কক্সবাজারের সদ্য ঘোষিত পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের স্বাগত মিছিলে হামলার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছে কমিটির নেতারা। শুক্রবার সন্ধ্যায় পেকুয়া সিকদার পাড়াস্থ দলীয় এক নেতার বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সদ্য ঘোষিত কমিটির সদস্য সচিব মোঃ মারুফুল ইসলাম বলেন, গত ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে তৃণমূল পর্যায়ে গতিশীলতা আনার জন্য ২১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সম্পাদক। কমিটি ঘোষণার পর থেকে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসাহ আর উদ্দিপনা দেখা দেয়। যার ধারাবাহিকতায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি সম্পাদকের উপস্থিতিতে সকল অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। তারই আলোকে আজকে আমরা ৫ শতাধিক ছাত্রদল নেতাকর্মী নিয়ে স্বাগত মিছিলের আয়োজন করি। স্বাগত মিছিলটি উপজেলার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পেকুয়া চৌমুহনী মোড়ে আসলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের উপর হামলা শুরু করে। ওই সময় বেশ কয়েকজন ছাত্রদল নেতাকর্মী আহত হয়। তাদের বাধা ডিঙ্গিয়ে পেকুয়া বাজারে আসার পথিমধ্যে ইসলামি ব্যাংক সংলগ্ন এলাকায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা আবারো লাঠিসোটা সজ্জিত হয়ে আমাদের উপর ইট পাটকেল শুরু করে। ওখানেও বেশ কয়েকজন ছাত্রদল নেতাকর্মী আহত হয়। আহত সকলকে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সদ্য ঘোষিত কমিটির আহ্বায়ক এম ফরহাদ হোছাইন বর্তমানে হাসপাতালে রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ভিতর কোন ধরণের বিরোধ নাই। ছাত্রদলের ভিতর বিরোধ আছে এমন অজুহাত দেখিয়ে আ’লীগের নেতাকর্মীরা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আমি নেক্কারজনক হামলার বিচার দাবী করছি। একই সাথে সাংবাদিক ভাইদের সহযোগিতা কামনা করছি। এসময় উপস্থিত ছিলেন, সদ্য ঘোষিত কমিটির এরশাদুল আলম, যুগ্ন-আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাজু ও সাঈদুর রহমান।