পায়রা লেবুখালী সেতু সৌরশক্তিতে আলোকিত হবে

দক্ষিণ বাংলার গণমানুষের স্বপ্নের পায়রা (লেবুখালী) সেতু কিছুদিনের মধ্যেই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এর মাধ্যমে বরিশাল থেকে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ও পায়রা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত ফেরিবিহীন নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ চালু হবে।

এদিকে সেতুতে পরিক্ষামূলক ভাবে সৌরশক্তিতে চালু হওয়া ল্যাম্প পোস্টের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য সেতুর দু’পাশে ভীড় করছেন স্থানীয়রা। সেতু নিয়ে তাদের মধ্যে একটি সাজ সাজবর দেখা গেছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে প্রতিবছরের পানির গড় উচ্চতা বৃদ্ধি বিবেচনা করে সেতুর উচ্চতা নির্ধারণ, লবনাক্ততা সহিষ্ণু নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবহার, বিদুৎ খরচ কমাতে সৌরশক্তির ব্যবহার করা হয়েছে। পাশাপাশি দু’পাড়ে করা হবে সবুজায়ন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গছে লেবুখালীর পায়রা নদীর ওপর সেতু নির্মাণকাজ শেষে এখন সৌন্দর্যবর্ধনের আনুষঙ্গিক কাজ, ধারাবাহিকভাবে আলোকসজ্জা ও কার্পেটিংয়ের কাজ প্রায় শেষ। চলতি বছরের অক্টোবরের মধ্যেই যানবাহন চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার লক্ষ্যে দিনরাত কাজ করছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

পায়রা সেতুর (লেবুখালী সেতু) প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মোহাম্মদ আবদুল হালিম জানান, এ পর্যন্ত সেতুর ৯৯ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ওভারওয়াল প্রগ্রেস ৯২ শতাংশ। অক্টোবরের শেষদিকে সেতু উদ্বোধন ও গাড়ি চলাচলের জন্য অবমুক্ত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন বাধা বিপত্তি থাকা সত্ত্বেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান, কনসালটেন্টসহ সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী সেতুর নির্মাণ কাজে নিয়োজিত আছেন। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত কাজ শেষ করতে। কিছু টেকনিক্যাল কাজ আছে যেগুলো নির্দিষ্ট দিন পর পর করতে হয়। এ কারণে একটু সময় লাগছে। আশাকরি অক্টোবর মাসের মধ্যে সব কাজ শেষ করতে পারবো।
সংশ্লিষ্টরা জানান পায়রা (লেবুখালী) সেতুতে পদ্মা সেতুর চেয়েও ৫০ মিটার বড় দুটি স্পান বসছে। নান্দনিক এক্সটাডোজ ক্যাবল বক্স গার্ডার সেতুর নদীর মাঝে মূল অংশ ৬৩০ মিটার। এজন্য ২০০ মিটারের ২টি স্পান ও দু’পাশে ২টি ১১৫ মিটার স্পান বসানো হয়েছে । যা দেশের সবচেয়ে বড় পদ্মা সেতুর স্পানের চেয়েও বড়।
চার লেন বিশিষ্ট ১,৪৭০ মিটার (৪,৮২০ ফুট) দৈর্ঘ্য ও ১৯.৭৬ মিটার (৬৪.৮ ফুট) প্রস্থের এক্সট্রা বক্স গার্ডার ব্রিজটির উভয়দিকে ৭ কিলোমিটারজুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে অ্যাপ্রোচ সড়ক। সেতুর প্রাক্কলিত নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিলো ১ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা।
এছাড়াও সেতুটি নদীর জলতল থেকে ১৮.৩০ মিটার উঁচু। ফলে নদীতে নৌযান চলাচলে কোনো অসুবিধা হবে না। সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে আলোকিত হয়েছে সেতুটি।
বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পায়রা নদীর ওপর ‘লেবুখালী সেতু’ উন্মুক্ত করণের মধ্য দিয়ে উন্নয়ন ও অগ্রগতির দার উন্মুক্ত হচ্ছে দেশের সর্বদক্ষিণে।
২০১২ সালের ৮ মে একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোন লাভ করে এবং ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের পায়রা নদীর ওপর সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ।