মডার্নার তৈরি ১৬ লাখ ৩০ হাজার ডোজ টিকার ব্যবহার স্থগিত

দূষণ থাকার কারণে মডার্নার তৈরি ১৬ লাখ ৩০ হাজার ডোজ টিকার ব্যবহার স্থগিত করেছে জাপান। ওষুধ প্রস্তুতকারক তাকেদা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, টিকার বেশ কয়েকটি শিশিতে দূষণ পাওয়ার কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জাপানে মডার্নার টিকা বিক্রি ও বিতরণের দায়িত্বে আছে তাকেদা ফার্মাকিউটিক্যাল কোম্পানি। বৃহস্পতিবার তারা বলেছে, মুখ খোলা হয়নি এমন কিছু শিশির মধ্যে অজ্ঞাত কিছু উপাদান পাওয়া গেছে। কতগুলো টিকাদান কেন্দ্র থেকে এমন রিপোর্ট পাওয়া গেছে। তারা বলেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শক্রমে আমরা পুরো তিনটি ব্যাচের সব টিকার ব্যবহার স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ বিষয়ে মডার্নাকে জানানো হয়েছে এবং অনুরোধ করা হয়েছে তদন্ত করতে। তাৎক্ষণিকভাবে মডার্না কোনো উত্তর দেয়নি।

এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, কি ধরণের দূষণ পাওয়া গেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেনি তাকেদা ফার্মাসিউটিক্যালস। এমন দূষণ সম্বলিত ডোজ দেয়ার পর কারো মধ্যে কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যার কথাও এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। সরকারের শীর্ষ মুখপাত্র কাতসুনোবু কাতো বলেছেন, তিনটি ব্যাচের মধ্যে একটির বোতলের ভিতরে বাইরে থেকে দূষণ দেখা যায়। কিন্তু পূর্ব সতর্কতা হিসেবে অন্য দুটি ব্যাচের টিকা ব্যবহারও স্থগিত রাখা হয়েছে। তিনি আরো বলেছেন, টিকায় এমন অজ্ঞাত উপাদানের উপস্থিতির কারণে কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যার খবর আমরা পাইনি। তবে, কেউ যদি অস্বাভাবিকতা বোধ করেন, তাহলে তাদেরকে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিচ্ছি আমরা।
জাপানের মিডিয়ায় বলা হয়েছে, যে তিনটি ব্যাচ সরবরাহ দেয়া হয়েছে তাদেরকে, এর সবটাই একই সময়ে প্রস্তুত করা হয়েছে স্পেনে। জাতীয় সম্প্রচার মাধ্যম এনএইচকে’র মতে, রাজধানী টোকিও সহ মধ্য জাপানে টিকা দেয়ার আটটি সেন্টারে খোলা হয়নি, এমন ৩৯টি বোতলের টিকা মধ্যে ওই দূষণ দেখা গেছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, স্থগিত রাখা ব্যাচের টিকা ৬ থেকে ২০ শে আগস্টের মধ্যে প্রয়োগ করা হয়েছে। এ সময়ে পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ওসাকায় গণহারে টিকা দেয়া হয়। সেখানে স্টাফরা টিকা দেয়ার সময় তা চেক করে দিয়েছেন। মন্ত্রণালয় বলেছে, টোকিওতে যে টিকা দেয়া হয়েছে, তা সংক্রমিত নয়। কাতো বলেছেন, সংক্রমিত বা দূষিত টিকা দেয়া হয়েছে এমন কোনো সুদৃঢ় প্রমাণ নেই।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, এসব ডোজের ব্যবহার স্থগিত রাখার ফলে দেশে টিকাদান কার্যক্রম বিঘিœত হবে। সেটা যাতে না হয়, এ জন্য বিকল্প নিয়ে তাকেদা ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে কাজ করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মডার্না এ বিষয়ে তদন্ত করবে বলে, এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতেই রাজি হয়নি তাকেদা। তবে কোম্পানির এক মুখপাত্র জনগণকে টিকা নিতে উৎসাহিত করেছেন। এরই মধ্যে জাপানের মোট জনসংখ্যার শতকরা প্রায় ৪৩ ভাগ পূর্ণাঙ্গ টিকা নিয়েছেন। করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এ দেশটিতে মারা গেছেন কমপক্ষে ১৫ হাজার ৭০০ মানুষ।