‘প্রাণপ্রকৃতি ধ্বংস করে সিআরবিতে কোন বাণিজ্যিক স্থাপনা করা যাবে না’

সিআরবি’র প্রাণপ্রকৃতি ধ্বংস করে হাসপাতালের নামে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচি ও মানববন্ধনের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলন (বাপসা)। অদ্য ০৪ আগস্ট সকাল ৯.৩০ ঘটিকা চট্টগ্রাম সিআরবি সাতরাস্তার মোড়ে এ কর্মসূচি বাপসা’র মহানগর সভাপতি মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন’র সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার ফোরামের মহাসচিব এম.এ. হাশেম রাজু। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার ফোরাম চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি প্রবীন রাজনীতিবিদ আবু মোহাম্মদ হোসাইন চৌধুরী, নাগরিক অধিকার ও পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলনের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান আলমগীর নুর। প্রধান বক্তা ছিলেন ইকো ফ্রেন্ডসের সাধারণ সম্পাদক ও এসডিজি ইয়ূথ ফোরামের সভাপতি নোমান উল্লাহ বাহার। বক্তব্য রাখেন বাপসার সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান, আকতার হোসাইন, সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান জিহাদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রাকৃতিক অক্সিজেন উৎপাদন কেন্দ্র একমাত্র নৈসর্গিক মুক্তাঙ্গন হলো সিআরবি। এই সিআরবি ১৯৩০ এ অবিভক্ত বাংলার মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ যা মাস্টার দা সূর্যসেনের নেতৃত্বে শুরু হয়েছিল তাঁর পবিত্র স্মৃতিধন্য। ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চাকসুর প্রথম জিএস আবদুর রব সহ দুইশতাধিক মুক্তিযোদ্ধার কবর ও পবিত্র স্মৃতির স্মারক এই সিআরবি। এটি চট্টগ্রাম মহানগরীর সাংস্কৃতিক চর্চার প্রধান কেন্দ্র। ১৯৯৫ সালের মাস্টারপ্ল্যান ও ২০০৯ সালের ডিটেইলট এরিয়া প্ল্যানে (ড্যাপ) সিআরবিকে বিশেষ নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল ও সাংস্কৃতিক ও পরিবেশগত সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা সত্ত্বেও এই এলাকায় হাসপাতালের নামে বাণিজ্যিক স্থাপনা তৈরি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে যা’ সিআরবি’র প্রাণ প্রকৃতিকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেবে। চট্টগ্রামের ফুসফুসতুল্য সিআরবিতে হাসপাতালের নামে কোন বাণিজ্যিক স্থাপনা হবে না, হতে দেয়া হবে না। এ মহানগরীতে ঢাকার মত পর্যাপ্ত ওপেন স্পেস নেই যা’ একটা ভারসাম্যযুক্ত নগরের জন্য খুবই প্রয়োজন। তথাপি, চট্টগ্রাম মহানগরীর একমাত্র নৈসর্গিক মুক্তাঙ্গণ সিআরবিকে ধ্বংস করে মহানগরীর ফুসফুসকে কেটে ফেলার ঘৃন্য পাঁয়তারা চলছে। এই অপতৎপরতা কোনোভাবেই সফল হতে দেয়া হবে না। মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের কবরের উপর এই বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের অবজ্ঞার সামিল। রেলওয়ের এত জায়গা থাকতে সিআরবিকে কেন হাসপাতাল নির্মাণের জন্য বেঁছে নেয়া হলো তা’ চট্টগ্রামবাসীর অজানা নয়।
বক্তারা আরো বলেন, আমরা চাই হাসপাতাল হোক তবে তা কোনক্রমেই সিআরবি ও সংলগ্ন এলাকায় নয়, অন্য কোথাও। চট্টগ্রামের ৭০ লক্ষ জনগণের দাবী ও মতকে উপেক্ষা করে, মাস্টার প্ল্যান ও ড্যাপকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রাণপ্রকৃতি ধ্বংস করে সিআরবিতে কোন বাণিজ্যিক স্থাপনা হবে না। এজন্য জাতি ধর্ম, দল-মত নির্বিশেষে বৃহত্তর গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।