তারেক রহমানকে ফিরিয়ে দিতে লন্ডনে কথা বলবেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার

একাধিক মামলায় যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড পাওয়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে লন্ডনে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি লন্ডনের সঙ্গে কথা বলব। এ বিষয়ে আমাদের স্বাধীন বিচার বিভাগের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।

বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুরে গুলশানে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
চ্যাটার্টন ডিকসন বলেন, মন্ত্রীর (আইনমন্ত্রী) সঙ্গে এ বিষয়ে (তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনা) আমার কথা হয়েছে। আমি এ বিষয়ে লন্ডনের সঙ্গে কথা বলব। আর তিনি এখন যুক্তরাজ্যবাসী। সেই হিসেবে আমাদের আইন ব্যবস্থার মধ্যে তার জন্য একাধিক পথ খোলা রয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনে আমাদের স্বাধীন বিচার বিভাগের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।

ব্রিটিশ হাইকমিশনার আরও বলেন, এ ক্ষেত্রে গুরুতপূর্ণ বিষয়টি হলো— যাই হোক না কেন, তা যেন দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সুষম সম্পর্কে কোনো বাধা তৈরি না করে, সে বিষয়ে খেয়াল রাখা হবে।

এ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, দুইটি কারণে তারেক রহমানকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছি। প্রথমত, তারেক রহমান বাংলাদেশের আদালতে সাজাপ্রাপ্ত আসামি, এখন পলাতক। তার মতো এরকম দণ্ডিত একজন যদি যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় পায়, সেটা হয়তো অন্য দণ্ডিত আসামিদেরও সেখানে পালিয়ে যাওয়া বা রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার একটা সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে। এটি (যুক্তরাজ্যে তারেক রহমানের রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়া) একটি দৃষ্টান্ত হতে পারে।

দ্বিতীয় কারণ তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, আমাদের আদালত ঠুঁটো জগন্নাথ নয়। আমাদের আদালত একজন অপরাধীকে শাস্তি দিয়েছে এবং সেই শাস্তি পাওয়ার পর তার একমাত্র স্থান কারাগার। এই দুই কারণেই আমরা তারেক রহমানকে ফেরত চাই।

ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে এ বিষয়ে কী কথা হয়েছে— জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, আপনারা শুনেছেন তিনি (ব্রিটিশ হাইকমিশনার) কী বলেছেন। তিনি আমাকেও বলেছেন, এ বিষয়ে তার সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন। তিনি এটিও বলেছেন, তাদের জুডিশিয়াল সিস্টেমে আইনি অনেক পথ থাকতে পারে। যেখানে আপিল করলে হয়তো তাকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। পাশাপাশি এই একটি ইস্যুর কারণে দুই দেশের মধ্যেকার বন্ধুত্বপূর্ণ সুসম্পর্ক ক্ষুণ্ন হোক, এটাও তারা চায় না— এমনটিও বলেছেন তিনি।

আইনমন্ত্রী বলেন, তিনি যে তার সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন, সেটি এ বিষয়ে একটি ইতিবাচক উদ্যোগ। আমার মনে হয়, আমরা আলাপ করলে আমরা এ সমস্যার সমাধান করতে পারব।

ব্রিটিশ হাইকমিশনার ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার বিষয়েও লন্ডনে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন