খুলনা ও সাতক্ষীরায় ২৪ ঘণ্টায় ২৪ জনের মৃত্যু

খুলনা ও সাতক্ষীরায় করোনা ও উপসর্গ নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে খুলনায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ডেডিকেটেড করোনা) ৮ জন, জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ১ জন ও বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
খুলনা ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের ফোকাল পারসন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, হাসপাতালের করোনা ডেডিকেটেড ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৯৮ জন। যার মধ্যে রেড জোনে ১০৫ জন, ইয়োলো জোনে ৪৫ জন, আইসিইউতে ২০ জন ও এইচডিসিতে ২০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৩৩ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৪ জন।

গাজী মেডিকেল হাসপাতালের মালিক ডা. গাজী মিজানুর রহমান জানান, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মংলার চিলা বাজার কালীকাবাড়ীর বিপ্লব ম-ল (৩৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

এছাড়াও হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ৯৩ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে রয়েছেন ৯ জন ও এইচডিইউতে আছেন ১০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ১৭ জন এবং সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮ জন।

খুলনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. কাজী আবু রাশেদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের রামপালের তিমির ঘোষ (৫০) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও এখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭০ জন, তার মধ্যে ৩৩ জন পুরুষ ও ৩৭ জন নারী। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ১২ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ছয়জন।

এদিকে সাতক্ষীরায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত রেকর্ডসংখ্যক ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে অক্সিজেন সংকটে। এদের ৪ জন ছিলেন করোনা পজিটিভ। অন্যরা মারা গেছেন উপসর্গ নিয়ে।

বুধবার বিকালে সাতক্ষীরা মেডিকেলে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের প্রেসার কমে আসতে থাকে। সেই সংকট মুহূর্তে পর পরই আইসিইউতে দুজন, সিসিইউতে দুজন এবং সাধারণ ওয়ার্ডে আরও চারজনসহ আটজনের মৃত্যু হয়।

রোগীদের স্বজনদের অভিযোগ— অক্সিজেন সংকট দেখা দিলেও তা পূরণ করতে কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে এসব রোগী মারা গেছেন। রাত ৮টার দিকে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক হয়।

মৃত্যুবরণকারীরা হলেন- আইসিইউ ইউনিটের করোনা পজিটিভ রোগী কালিগঞ্জের ভাড়াশিমলা এলাকার মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে আকরাম হোসেন খান (৬৩), সিসিইউ ইউনিটের মারা যায় শহরের ইটাগাছা এলাকার মফিজুল ইসলামের স্ত্রী খাইরুন্নেছা (৪০), শহরের কুকরালী আমতলা এলাকার মনিরুজ্জামানের স্ত্রী করোনা আক্রান্ত নাজমা খাতুন, শ্যামনগরের সোনাখালি এলাকার কাশেম গাজীর ছেলে আশরাফ হোসেন, সাধারণ ওয়ার্ডের সন্ধ্যা ৭টার পর মারা যায় শ্রীউলা ইউনিয়নের বক্সার গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে রবিউল ইসলাম পারভেজ (৫৪), কালিগঞ্জের জগন্নাথপুর এলাকার সৈয়দ আলি পাড়ের ছেলে আবু জাফর মো: শফিউল আলম তুহিন, আশাশুনির নৈকাটি এলাকর বেনু গাজির ছেলে আব্দুল হামিদ (৭৫)। একজনের ঠিকানা জানা যায়নি।

সাতক্ষীরার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. কুদরত ই খোদা ঘটনাটি নিশ্চিত করে বলেন, কিছু সময়ের জন্য অক্সিজেনের সমস্যা হয়েছিল। দ্রুত সময়ের মধ্যেই সমস্যার সমাধান করা হয়। ৭ থেকে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।