মিয়ানমারে সামরিক জান্তার অর্থ আটকে দিয়েছে টোটাল, শেভরন

গ্যাস প্রকল্প থেকে পাওনা অর্থ মিয়ানমারের সামরিক জান্তার কাছে পরিশোধ করেনি ফরাসি তেল ও গ্যাস বিষয়ক গ্রুপ টোটাল এবং যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি বিষয়ক কোম্পানি শেভরন। মিয়ানমারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে একটি গ্যাস প্রকল্প থেকে এসব অর্থ মিয়ানমার সরকারের কাছে পরিশোধ করার কথা ছিল এ দুটি কোম্পানির। কিন্তু মিয়ানমারে ক্ষমতায় সামরিক জান্তা। তাই তাদের কাছে এসব পাওনা পরিশোধ স্থগিত করেছে ওই দুটি কোম্পানি। ফলে এটাকে প্রথম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ আখ্যায়িত করে গণতন্ত্রপন্থি অধিকারকর্মীরা এর ভূয়সি প্রশংসা করেছেন। গত ১লা ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী। এরপর থেকে অধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ বৃদ্ধির জন্য এ দেশটির সঙ্গে যেসব আন্তর্জাতিক কোম্পানি বাণিজ্য করছে তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। একই সঙ্গে মিয়ানমারে সমান্তরালে চালু রয়েছে বেসামরিক বিকল্প প্রশাসন।
তারাও সামরিক জান্তাকে পাওনা পরিশোধ করা বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছে। এ অবস্থায় টোটাল এবং শেভরনের এই উদ্যোগকে অনেকে প্রশংসা করেছেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এক বিবৃতিতে টোটাল বলেছে, মোয়াত্তামা গ্যাস ট্রান্সপোর্টেশন কোম্পানির এক মিটিংয়ে শেভরনের শেয়ারহোল্ডারদের একটি যৌথ প্রস্তাব ভোটে দেয়া হয়। তা ভোটে পাস হওয়ায় সব রকম অর্থ পরিশোধ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। টোটাল হলো সবচেয়ে বড় শেয়ারহোল্ডার। তাদের আছে শতকরা ৩১.২৪ ভাগ শেয়ার। শেভরনের আছে শতকরা ২৮ ভাগ শেয়ার। বাকি শেয়ারের মালিক থাইল্যান্ডের পিটিটিইপি এবং মিয়ানমারের ওয়েল অ্যান্ড গ্যাস এন্টারপ্রাইজ। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারজুড়ে যে সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে তার নিন্দা জানায় টোটাল। একই সঙ্গে নিশ্চয়তা দিচ্ছে যে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বা যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ যদি মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অবরোধ দেয়া হয়, সেটা সহ আন্তর্জাতিক ও জাতীয় কর্তৃপক্ষের প্রাসঙ্গিক সিদ্ধান্ত মেনে চলবে টোটাল। বিবৃতি দিয়েছে শেভরনও। তারা বলেছে, মিয়ানমারে যে মানবিক সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে তার সমাধান করতে হলে সমন্বিত উদ্যোগে দেশটির মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের এ কোম্পানি আরো বলেছে, সুচিন্তিত সিদ্ধান্তের পরিণতিতে যাতে মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ আরো ক্ষতিগ্রস্ত যাতে না হন, সে জন্য যেকোনো পদক্ষেপ নেয়ার আগে তা সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত।