হালদায় নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছ

দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীতে নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছ। মঙ্গলবার (২৫ মে) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে  এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সাংবাদিক মনসুর আলী।তিনি বলেন, রাত সাড়ে ১২টার পর আজিমের ঘাট / নয়াহাট বাজার এলাকায় স্থানীয় ডিম সংগ্রহকারী ও মৎস্যজীবীরা মা-মাছের কিছু নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করতে পেরেছেন। এ ধরনের ডিমকে স্থানীয়রা ‘নমুনা ডিম’ বলে থাকেন।

‘মা-মাছ হয়তো প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে ডিম ছাড়লে পোনা তৈরি করা সম্ভব কিনা।পরিবেশ, প্রতিবেশ ও পানির গুণাগুণের প্যারামিটারগুলো ঠিকঠাক থাকলে মা-মাছ ডিম ছাড়বে। ’

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন বলেন, ‘হালদায় কিছুক্ষণ আগে মা মাছ পরীক্ষামূলক ডিম ছেড়েছে। পরিবেশ অনুকূল মনে হলে ভাটার সময় মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে। আবার পরিবেশ অনুকূলে না হলে নাও ছাড়তে পারে।’

এ বিষয়ে জানতে হালদা গবেষক এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘হালদায় আধঘণ্টা আগে বেশ কিছু স্থানে মা মাছ নমুনা ডিম ছাড়ছে। মা মাছ যদি পরিবেশ অনুকূল অর্থাৎ ডিম ফুটাতে পারবে মনে করে তাহলে সকালের ভাটায় ডিম ছাড়বে।’

ঘূর্ণিঝড়ের সময় হালদায় ডিম না ছাড়ার কথা গবেষণায় উল্লেখ থাকলেও কেন ছেড়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তার মানে হলো- নদীতে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়েনি।’

স্থানীয় জেলেরা জানান, হালদা থেকে সংগৃহীত মাছের ডিম থেকে উৎপাদিত রেণু, পোনার দেশজুড়ে চাহিদা রয়েছে।দামও ভালো পাওয়া যায়। সাধারণ হ্যাচারিতে কৃত্রিম পদ্ধতিতে উৎপাদিত পোনার চেয়ে হালদার পোনা দ্রুত বড় হয়। এতে মৎস্যচাষিরা লাভবান হয়।

মূলত হালদার কাগতিয়ার আজিমের ঘাট, খলিফার ঘোনা, পশ্চিম গহিরা অংকুরী ঘোনা, বিনাজুরী, সোনাইর মুখ, আবুরখীল, খলিফার ঘোনা, সত্তারঘাট, দক্ষিণ গহিরা, মোবারকখীল, মগদাই, মদুনাঘাট, উরকিচর এবং হাটহাজারী গড়দুয়ারা, নাপিতের ঘাট, সিপাহির ঘাট, আমতুয়া, মার্দাশা ইত্যাদি এলাকায় ডিম পাওয়া যায় বেশি।

বংশ পরম্পরায় চলে আসা রেওয়াজের পাশাপাশি আধুনিক পদ্ধতিতে এসব ডিম থেকে রেণু তৈরি, এরপর পোনা উৎপাদন করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে যে হারে ডিম পাওয়া যায় সে হারে রেণু হয় না। অনেক ডিমই তাপমাত্রা, আবহাওয়া, লবণাক্ততাসহ বৈরী পরিবেশে নষ্ট হয়ে যায়।