৪ দফা দাবিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার স্মারকলিপি পেশ

৪ দফা দাবিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার স্মারকলিপি পেশ। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার উদ্যোগে শিক্ষা খাতে জাতীয় বাজেটের ২৫ শতাংশ বরাদ্দ, সকল শিক্ষার্থীকে ভ্যাকসিন দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য বাজেট বরাদ্দ, ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের জন্য আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা ও সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের করোনাকালের বেতন-ফি মওকুফ এবং অনলাইন ক্লাস-পরীক্ষার জন্য বিনামূল্যে ডিভাইস ও ইন্টারনেট সেবার জন্য বাজেট বরাদ্দসহ এই ৪দফা দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয় এবং স্মারকলিপি পেশের পূর্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় সকাল ১১ টায়, নগরীর নিউমার্কেট মোড়ে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ছাত্রফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগরের সভাপতি রায়হান উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ঋজু লক্ষ্মী অবরোধ, সাংগাঠনিক সম্পাদক মিরাজ উদ্দিন এবং সমাবেশ পরিচালনা করেন প্রচার প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক প্রীতম বড়ুয়া। সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত বছরের ১৭ই মার্চ থেকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পর থেকেই শিক্ষাব্যাবস্থা এক চরম হুমকির মুখে পড়েছে এবং শিক্ষাখাতের এই ক্ষতি পুনরুদ্ধার করে শিক্ষার্থীদের অনিশ্চয়তা দূর করতে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপে এখনো নেয়া হয়নি। দেশের ৫ কোটি শিক্ষার্থীর প্রায় অর্ধেকের শিক্ষাজীবন আজ বিপর্যস্ত ও অনিশ্চিত অবস্থায় পড়েছে।একদিকে পরিবারগুলোর আয় কমেছে, অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান উর্ধ্বগতির ফলে পরিবারগুলোর স্বাভাবিক ভরণপোষণ চালানোই আজ চরম সংকটের মধ্যে পড়েছে, সেখানে সন্তানের পড়ালেখার খরচ বহন করা এক প্রকার অসম্বব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সংকটের সময়ে শিক্ষার্থীদের পাশে না দাঁড়িয়ে আমরা দেখছি শিক্ষার্থীদের উপর উলটো বেতন-মেস ফি আদায়ের জন্য বিভিন্নভাবে চাপ প্রদান করা হচ্ছে। যেখানে দেশের ৬৩% গ্রামীণ পরিবার ইন্টারনেট ব্যাবহারের সুযোগ বঞ্চিত ও ৮৭% পরিবারের ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রয়োজনীয় দক্ষতাই নেই সেখানে পর্যাপ্ত ইন্টারনেট সেবা, প্রয়োজনীয় ডিভাইস প্রদান ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত না করে অনলাইন ক্লাসের নামে এক প্রকার তামাশার সৃষ্টি করা হয়েছে। যা শিক্ষাব্যবস্থার বিদ্যমান বৈষম্যকে আরো বেশী প্রকট করে তুলেছে। ব্যবসায়ীদের জন্য লক্ষ কোটি টাকা প্রণোদনা ঘোষণা করা হলেও শিক্ষার্থীদের বেতন-ফি এবং ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কোন প্রণোদনাই দেয়া হল না। শিক্ষাজীবন বাঁচাতে তাই আসন্ন জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। আমাদের মত দেশে অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা মোটেই কোন কার্যকর সমাধান নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্যাকসিন দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করার উদ্যোগ এরই মধ্যে নিয়েছে। আমাদের দেশেরও আঠারো উর্ধ্ব সকল শিক্ষার্থীকে ভ্যাকসিন দিয়ে অবিলম্বে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করার উদ্যোগ নেয়া অত্যন্ত জরুরী। এবারের জাতীয় বাজেটে এই ভ্যাকসিনেশন প্রকল্প এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার আয়োজনের জন্য বিশেষ বরাদ্দ করা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। করোনাকালের বেতন ফি মওকুফ করার জন্য বাজেটে বরাদ্দ থাকা জরুরী। এই সময়ে ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের জন্য আর্থিক প্রণোদনা থাকা দরকার এই বাজেটে। অনলাইন ক্লাসকে কার্যকর করার জন্য বিনামূল্যে ইন্টারনেট ও ডিভাইস সরবরাহে উদ্যোগ নেয়া জরুরী। সমাবেশে বক্তারা, আসন্ন বাজেটের প্রক্কালে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের পক্ষ থেকে এই ৪ দফা দাবি পূরণে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।