ভারত সরকারের অনুরোধে মোদির সমালোচনা করা অনেক টুইট ব্লকড

ভারত সরকারের অনুরোধে কোভিড-১৯ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করে প্রকাশিত টুইটগুলোকে ব্লক করে দিয়েছে টুইটার কর্তৃপক্ষ। এ সংক্রান্ত বেশ কিছু টুইট মুছে দিয়েছে তারা। এর মধ্যে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যেভাবে মোকাবিলা করছেন তা নিয়ে আছে বেশ কিছু সমালোচনামূলক টুইট। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সিএনএন। রোববারের এক বিবৃতিতে ভারতের ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি বিষয়ক মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা টুইটার, ফেসবুক এবং অন্যদের কাছে প্রায় ১০০ পোস্ট মুছে দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছিল। কারণ, সামাজিক এসব মাধ্যম ব্যবহার করে সুনির্দিষ্ট কিছু একাউন্ট হোল্ডার ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছিল এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন করছিল। এতে আরো অভিযোগ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এসব ব্যবহারকারী কোভিড-১৯ এর সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। তারা অপ্রাসঙ্গিক, পুরনো এবং সংশ্লিষ্ট নয় এমন ছবি ও ভিডিও প্রচার করছে।

সম্প্রদায়ের মধ্যে স্পর্শকাতর এমন তথ্যও প্রচার করছে। কোভিড-১৯ প্রোটোকল নিয়ে ভুয়া তথ্য প্রচার করছে। বিবৃতিতে ফেসবুক, টুইটার এবং ইনস্টাগ্রামের ব্লক করা পোস্ট্রের স্ক্রিনশট দেয়া হয়। বলা হয়, এসব একাউন্ট থেকে জনগণকে মাস্ক না পরতে আহ্বান জানানো হচ্ছে। ধর্মীয় সংবেদনশীলতাকে উস্কে দিতে ঘৃণা ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। সিএনএন বিজনেসের কাছে পাঠানো এক ইমেইল বার্তায় টুইটার বলেছে, ভারত সরকারের অনুরোধে তারা বেশ কিছু টুইট মুছে দিয়েছে। টুইটার বলেছে, যখন আমরা আইনগতভাবে বৈধ কোনো অনুরোধ পাই, তখন তা আমরা টুইটার রুলস এবং স্থানীয় আইনের আলোকে পর্যালোচনা করি। যদি কন্টেন্ট টুইটারের আইন লঙ্ঘন করে, তখন তা মুছে দেয়া যায়।
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির একটি প্রকল্পের লুমেন ডাটাবেজ অনুযায়ী, তথ্যপ্রযুক্তি আইন-২০০০ এর অধীনে গত ২৩ শে এপ্রিল সরকার টুইটারের কাছে অনুরোধ করে ওইসব টুইট মুছে দিতে। কিছু টুইট আছে, এগুলো ভারতে দেখা যায় না। কিন্তু দেশের বাইরে থেকে তা সবাই দেখতে পারেন। এর মধ্যে রয়েছে বিরোধী রাজনীতিবিদদের পোস্টও। এসব পোস্টে করোনার ভয়াবহতার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দায়ী করা হয়েছে। পার্লামেন্ট সদস্য রিভান্ত রেড্ডি টুইটে লিখেছেন, ভারতে প্রতিদিন কমপক্ষে ২ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। টিকার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ওষুধের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ক্রমেই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে। পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী আরেক নেতা মলয় ঘটকের টুইট ব্লক করে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন, দেশে করোনা ভাইরাসের এই ভয়াবহ অবস্থাকে জোরালোভাবে না দেখায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ভারতবাসী কোনোদিন ক্ষমা করবে না। তার অব্যবস্থাপনার কারণে এত এত মানুষ মারা যাচ্ছেন। দেশের স্বাস্থ্যখাত যখন এত ভয়াবহ সঙ্কটে তখন তিনি লাখ লাখ টিকা অন্য দেশে রপ্তানি করেছেন। তিনি টুইটারে হিন্দিতে হ্যাশট্যাগ দিয়েছেন ‘#মোদি হটাও দেশ বাঁচাও’ নামে। এর অর্থ মোদিকে সরিয়ে দিয়ে দেশকে বাঁচাও।