গ্রাহকের অজান্তে ব্যালেন্স কেটে নেয়ার তদন্তে বিটিআরসি

গ্রাহকের অজান্তে বিভিন্ন সেবার নামে মোবাইল ফোনের ব্যালেন্স কেটে নেয়ার তদন্তে নেমেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

ইতোমধ্যে তিন প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নিয়েছে কমিশন।

এসব প্রতিষ্ঠান মোবাইল ফোন অপারেটরের গ্রাহকদের সমসাময়িক নিউজ অ্যালার্ট, ওয়েলকাম টিউন, গান, ওয়ালপেপার, ভিডিও, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ধর্ম ইত্যাদি বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য, লাইফস্টাইল, মোবাইল গেম, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ইত্যাদি সেবা দিয়ে থাকে। এসব সেবাকে টেলিকমিউনিকেশন ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস বা টিভ্যাস হিসেবে বলা হয়ে থাকে।

বিটিআরসি বলছে, সম্প্রতি টিভ্যাস সংক্রান্ত বিষয়ে গ্রাহক পর্যায়ে কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরমধ্যে গ্রাহকের অজান্তে টিভ্যাস সার্ভিস এক্টিভেট করে টাকা কেটে নেওয়া, অপ্রয়োজনীয় সেবা চালু করে দেয়া ইত্যাদি।

এরপর বিটিআরসির প্রাপ্য রাজস্ব পরিশোধ না করাসহ গ্রাহকস্বার্থ বিবেচনায় বিটিআরসি টিভ্যাস রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটধারী প্রতিষ্ঠানে পরিদর্শন শুরু করে। ইতোমধ্যে ১১ টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে বেশ কিছু অনিয়মও পায় তারা।

এসবের মধ্যে রয়েছে, গ্রাহকের অজান্তে টিভ্যাস সার্ভিস এক্টিভেট করে টাকা কেটে নেওয়া, গ্রাহকদের সম্মতি ব্যতিরেকে অটো রিনিউওয়াল চালু রাখা, টিভ্যাস গাইডলাইন প্রণয়নের পূর্ব থেকে কমিশনের প্রাপ্য রাজস্ব দেয়া, নিবন্ধিত ঠিকানায় অফিস না থাকা, কমিশন হতে সার্ভিস এবং ট্যারিফ অ্যাপ্রুভাল ছাড়া টিভাস সেবা দেয়া, নিজস্ব মনিটিরিং টার্মিনাল বা অনলাইন মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকা, অবকাঠামো শেয়ার চুক্তি ছাড়া সার্ভার স্থাপন করা, অডিট রিপোর্ট প্রদান করতে না পারা এবং টিভ্যাস এক্টিভেশনের ক্ষেত্রে বিটিআরসির নির্দেশনা অনুযায়ী ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ওটিপি বাস্তবায়ন না করা ।

ইতোমধ্যে উইন মিয়াকি লিমিটেড, মিয়াকি মিডিয়া লিমিটেড ও বিনবিট মোবাইল এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেড নামের তিনটি প্রতিষ্ঠানকে প্রশাসনিক জরিমানা এবং বাকী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে বিটিআরসি।

বাংলাদেশে ২০১০ সালের দিকে স্বল্প পরিসরে টিভ্যাস সেবা প্রদান শুরু হয়। কিন্তু ২০১৮ সাল নাগাদ এর ব্যবহার ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিটিআরসি হতে টিভ্যাস রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট প্রদানের জন্য গাইডলাইন দেয়া হয় এবং সে সময় হতে টিভ্যাস রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট প্রদান শুরু করা হয়। বর্তমানে বিটিআরসির অনুমোদিত টিভ্যাস প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রায় ১৮২ টি।

টিভ্যাস প্রোভাইডাররা চারটি মোবাইল ফোন অপারেটরের সাথে সম্পাদিত চুক্তির মাধ্যমে মোবাইল ফোন গ্রাহকদের শর্টকোড, এসএমএস, আইভিআর, ওয়াপ,মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিভ্যাস সেবা দিয়ে থাকে।

সেবার বিনিময়ে গ্রাহকদের নিকট থেকে প্রাপ্য অর্থের একটা অংশ সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক মুঠোফোন অপারেটররা পেয়ে থাকে। আর টিভ্যাস প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে অর্জিত রাজস্বের মোট ৬ দশমিক ৫ শতাংশ বিটিআরসি পেয়ে থাকে।